এ খাত থেকে বাংলাদেশ বছরে ৪৬ কোটি ডলার বাঁচাতে পারে বলে গবেষণায় উঠে আসার দাবি করা হচ্ছে।
Published : 14 May 2024, 01:46 AM
গ্যাসভিত্তিক ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি দক্ষতা বাড়িয়ে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নিতে পারলে বছরে ৫০ বিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস সাশ্রয় করা সম্ভব বলে এক গবেষণায় তুলে ধরা হয়েছে।
ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস (আইইএফএ) গবেষণাটি পরিচালনা করেছে।
গবেষণা প্রতিবেদনের লেখক শফিকুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ৫১টি শিল্প কারখানার প্রায় ২৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ১২৪টি গ্যাসচালিত ক্যাপটিভ জেনারেটরের ওপর জরিপ করে তারা এ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।
এতে দেখা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজির গড় মূল্য হিসাব করে গ্যাস সাশ্রয় থেকে বাংলাদেশ বছরে ৪৬ কোটি ডলার বাঁচাতে পারে।
তিনি বলেন, গ্যাসভিত্তিক ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানির অদক্ষ ব্যবহারের ফলে বছরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গ্যাস খরচ হয়। গত দশকে ক্যাপটিভ জেনারেশনের গড় দক্ষতা ৩০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩৫ দশমিক ৩৮ শতাংশে উন্নীত হলেও এ খাতে আরও জ্বালানি দক্ষতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিল্প প্রতিষ্ঠান জেনারেটর থেকে নির্গত তাপ কোনো উৎপাদনশীল কাজে ব্যবহার করে না।
এতে বলা হয়, পুরোনো, অদক্ষ ও ব্যয়বহুল জেনারেটরের বদলে যদি কারখানাগুলো উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর স্থাপন করে এবং জেনারেটর থেকে নির্গত তাপ কাজে লাগায়, তাহলে দেশে আমদানি করা এলএনজির চাহিদা অনেক কমে আসবে। সাশ্রয়ী এ গ্যাসের পরিমাণ বছরে ৫০ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ঘনফুটে দাঁড়াবে, শতকরা হিসাবে যা ২১ শতাংশ। এতে প্রতিবছর দেশের ৪৬ কোটি ডলার বেঁচে যাবে।
শফিকুল আলম বলছেন, জেনারেটর প্রতিস্থাপনের জন্য উল্লেখযোগ্য আগাম বিনিয়োগের প্রয়োজন হলেও এই মূলধনী ব্যয় উঠে আসতে দেড় থেকে পাঁচ বছর সময় লাগবে। আর জেনারেটর থেকে নির্গত তাপ উৎপাদনশীল কাজে ব্যবহারের বিনিয়োগ এক বছরেই তুলে আনা সম্ভব।
২০১৮ সালে বাংলাদেশ যখন সাশ্রয়ী দামে এলএনজি আমদানি শুরু করে তখন তা সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু ঠিক এক বছরের মাথায় আসে কোভিড-১৯ মহামারী। সেই সঙ্গে এলএনজির সরবরাহ-শৃঙ্খল (সাপ্লাই চেইন) বিঘ্নিত হয়।
এরপর ২০২২ সালে শুরু হয় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। ফলে বিশ্বব্যাপী জ্বালানির দাম এক লাফে অনেকখানি বেড়ে যায়, যা দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত করে।
গবেষক শফিকুল বলেন, “দেশের উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি আমদানির পরিকল্পনা করা হলেও আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির মাত্রাতিরিক্ত অস্থিতিশীলতা, স্থানীয় মুদ্রার দরপতন এবং এগুলোর আর্থিক অভিঘাত মোকাবেলার বিষয় বিবেচনায় রাখা হয়নি। বিভিন্ন খাতে গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদার জন্য এলএনজি আমদানি করতেই হচ্ছে।”