আগামী কয়েক দিনের মধ্যে চিনিও নির্ধারিত দামে বিক্রি নিশ্চিত করতে চায় ভোক্তা অধিদপ্তর।
Published : 21 Aug 2023, 10:46 PM
সপ্তাহ খানেক আগে চিনির দাম কেজিতে পাঁচ টাকা কমানোর যে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল পরিশোধনকারী ব্যবসায়ীরা, তার প্রভাব এখনও দেখা যাচ্ছে না ঢাকার খুচরা বাজারে।
তবে একই সময় ভোজ্যতেলের দাম লিটারে পাঁচ টাকা কমানোর যে সিদ্ধান্ত এসেছিল, সেটির প্রভাব বাজারে দেখা গেছে।
বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন গত ১৩ অগাস্ট জানিয়েছিল, পরদিন থেকে ৫ টাকা কমে প্রতি কেজি খোলা চিনি ১৩০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকায় বিক্রি হবে।
এক সপ্তাহ বাদে সোমবার ঢাকার মিরপুর শাহ আলী সুপার মার্কেট, মিরপুর ১১ কাঁচাবাজার এবং মহাখালী কাঁচাবাজারের কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা গেল, প্রতিকেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায় এবং প্যাকেটজাত ১৪০ টাকায়।
মিরপুর ১১ কাঁচাবাজারের লিজা এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার মো. সাদেক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার চিনি কেনা নতুন দাম নির্ধারণের আগে। তখন পাইকারি বাজার থেকে প্রতিকেজি খোলা চিনি ১২৭ টাকায় কেনা, পরিবহন খরচসহ প্রায় ১৩০ টাকা পড়েছে। আমি ১৩৫ টাকার নিচে কোনওভাবেই বিক্রি করতে পারব না।”
একই কারণে প্যাকেটজাত চিনি কেনার খরচ ১৩৫ টাকা পড়েছে, যে কারণে তা ১৪০ টাকায় বেচতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এ বাজারের ক্রেতা গৃহিণী মাহফুজা আক্তার বললেন, “আপনারা শুধু ব্যবসায়ীদের চাপ দিচ্ছেন- এটা ঠিক নয়। আমি মনে করি, সরকারের অতিরিক্ত শুল্কায়নের ফলেই চিনির দাম বাড়ছে।
“প্রতিবেশী ভারতসহ সারাবিশ্বের কোনও দেশে চিনির দাম এত বেশি নয়। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে চিনির গড় দাম ৬০ টাকার বেশি নয়।”
চিনির দাম অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সরকার নিয়ন্ত্রক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করে। তবে সেই সুবিধা ৩০ মে এর পর নতুন করে বাড়ানো হয়নি।
এদিকে ১৩ অগাস্টেই ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী সমিতি জানিয়েছিল, পরদিন থেকে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৫৯ টাকার পরিবর্তে ১৫৪ টাকায় এবং বোতলজাত বিক্রি হবে ১৭৪ টাকায়, যা আগে ১৭৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। পাঁচ
লিটারের বোতল বিক্রি হবে ৮৫০ টাকায়, যা আগে ৮৭৩ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এখন বাজারে প্রতি লিটার সয়াবিন ১৭০ টাকায় এবং ৫ লিটারের বোতল অনেক দোকানে নির্ধারিত দামের চেয়েও ১০ থেকে ২০ টাকা কমে ৮৩০-৮৪০ টাকায়ও বিক্রি হতে দেখা গেছে।
পরিশোধনকারীদের নির্ধারিত নতুর দরের বদলে এখনও আগের দরে চিনি বিক্রির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম অনুযায়ী চিনি ও সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে কি না- তা দেখতে আমরা ইতোমধ্যে অভিযান পরিচালনা শুরু করেছি।
“অভিযানে আমরা খুচরা ব্যবসায়ীর কাছে কোন সময়ের কেনা- তার রশিদ দেখছি। যাদের চিনি কেনা ১৪ অগাস্টের আগে, তারা ৫ টাকা অতিরিক্ত দামে বিক্রি করলেও তাদেরকে আমরা ছাড় দিচ্ছি। তবে ওই সময়ের পর যারা চিনি কিনেছেন, তারা অতিরিক্ত দামে বিক্রি করতে পারবেন না। কেউ বিক্রি করলে তাকে জরিমানা করা হচ্ছে।”
আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সয়াবিনের মতো চিনিও নির্ধারিত দামে বিক্রি নিশ্চিত হবে- এমন আশা তার।