আর্থিক প্রতিবেদনে ‘গরমিল’: উত্তরা ফাইন্যান্সের এমডিকে অপসারণ

চিঠি পাঠানোর দিন থেকেই তা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2022, 05:39 PM
Updated : 23 June 2022, 06:00 PM

বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন ও ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে (সিআইবি) দেওয়া তথ্যে ‘গরমিল’ থাকার প্রমাণ পাওয়ায় ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম শামসুল আরেফিনকে অপসারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার তাকে অপসারণের চিঠি পাঠানো হয়েছে জানিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, চিঠি পাঠানোর দিন থেকেই তা কার্যকর হবে।

এর আগে ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির (এনবিএফআই) বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তোলে বাংলাদেশ ব্যাংক। এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানো উত্তরা ফাইন্যান্সের প্রতিবেদনের বিভিন্ন তথ্যে ‘ভুল’ পাওয়ার খবর আসে।

এসব বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামসুল আরেফিনের কাছে ব্যাখ্যা চায়। সেই ব্যাখ্যার উত্তরে সন্তুষ্ট হতে না পারায় তাকে অপসারণ করার চিঠি দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এর আগে উত্তরা ফাইন্যান্সকে ২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন সংশোধনের নির্দেশনা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল বলেন, ‘‘উত্তরা ফাইন্যান্সের বিভিন্ন আর্থিক গড়মিলের বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাদের দেওয়া তথ্য ও ব্যাখ্যার সঙ্গে বাস্তবতার মিল পাওয়া যায়নি।

‘‘তাদের কাছে (উত্তরা ফাইন্যান্স) ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাদের ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় এমডি শামসুল আরেফিনকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।’’

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত উত্তরা ফাইন্যান্সের আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ ওঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৯ সালে বিশেষ পারিদর্শন চালায়। আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়।

পরিদর্শনে দেখা যায়, অনেক ঋণের নথিপত্র পর্যন্ত নেই। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকদের ঋণ দেওয়া হয়েছে কোনো প্রকার কাগজপত্র ছাড়াই। মৌখিক নির্দেশনায় পরিচালকদের ব্যাংক হিসাবে গিয়েছে বড় অঙ্কের অর্থ বলে সংবাদ মাধ্যমে খবর বের হয়।

তখন ২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন সংশোধনের নির্দেশনা দেওয়া হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে। যদিও ২০১৯ সালের ওই আর্থিক প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করেই বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ বিতরণ করা হয়েছে।

তবে এখনও ২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদনর তথ্য সংশোধন করতে পারেনি উত্তরা ফাইন্যান্স। এছাড়া ২০২০ ও ২০২১ সালের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনও প্রস্তুত করতে পারেনি কোম্পানিটি।

এ বিষয়ে উত্তরা ফাইন্যান্সের কোম্পানি সচিব মো. জাকির হোসেন বিডিনিউজকে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘২০১৯ সালের নীরিক্ষা শেষ হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী কিছু সংশোধন করা হচেছ, সংশোধনীটি অনুমোদন পেলেই পরবর্তী ২০২০ ও ২০২১ সালের নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করা হবে।’

‘‘আমরা নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।’’

অপসারণের বিষয়টি জানতে এসএম শামসুল আরেফিনকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল ও এসএমএস দেওয়া হয়। কিন্তু রাত ১১টা পর্যন্ত তিনি উত্তর দেননি।