স্বাধীনতা যুদ্ধের পর সুনামগঞ্জের শাল্লায় ফিরে আসা শরণার্থীদের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজের মধ্য দিয়ে ১৯৭২ সালে শুরু হয়েছিল ব্র্যাকের যাত্রা; সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে জন্মের অঙ্গীকার রক্ষা করে সেভাবেই পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কাজ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাটির বর্তমান নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ।
Published : 14 Mar 2022, 09:04 PM
সোমবার ঢাকার মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে ব্র্যাকের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন।
আসিফ সালেহ বলেন, “ব্র্যাক এবং বাংলাদেশ প্রায় সমার্থক। বাংলাদেশের অভ্যুদয় না হলে যেমন ব্র্যাকের জন্ম হত না, তেমনি বাংলাদেশের সমস্যা সমাধানে ব্র্যাক কাজ না করলে এর বিকাশ ও বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়ত আরও অসম হত।”
ব্র্যাকে প্রতিটি মানুষ তার সম্ভাবনা বিকাশের সুযোগ লাভ করে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “যার প্রয়োজন সবচাইতে বেশি, তারই পাশে আশার শক্তি হয়ে দাঁড়াতে হবে- এটিই ব্র্যাকের উন্নয়ন দর্শনের ভিত্তি। এরই প্রতিফলন ঘটেছে যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের প্রত্যন্ত শাল্লার দুর্গমতম গ্রামে প্রত্যাগত শরণার্থীদের জীবন ও জীবিকা গড়ার সংগ্রামে পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমে। সেই অভিযাত্রা অব্যাহত রয়েছে গত ৫০ বছর ধরে।”
ব্র্যাকের কাজের কেন্দ্রবিন্দুতে সবসময়ই ছিল পিছিয়ে পড়া মানুষ ও নারী।
আসিফ সালেহ বলেন, “ব্র্যাকের সকল কর্মসূচি ও মডেল এবং সর্বোপরি ব্র্যাক ব্র্যান্ডটি গড়ে উঠেছে নারীর ক্ষমতায়নকে কেন্দ্র করে। ব্র্যাক শাল্লা থেকে সারা দেশে সম্প্রসারিত হয়ে গত পাঁচ দশকে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।”
স্যার ফজলে হাসান আবেদ প্রতিষ্ঠিত ব্র্যাক সাত বছর ধরে বিশ্বের শীর্ষ এনজিওর স্বীকৃতি নিয়ে আছে।
ব্র্যাক বাংলাদেশের চেয়ারপারসন হোসেন জিল্লুর রহমান অনুষ্ঠানে বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠাতা আবেদ ভাই এখন সশরীরে আমাদের মাঝে না থাকলেও তার আদর্শ ও দর্শনই আমাদের চালিকাশক্তি। তার মতো আমরাও বিশ্বাস করি আর্থিক, সামাজিক এবং জ্ঞান ও দক্ষতাভিত্তিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়।”
ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল সুপারভাইজরি বোর্ডের চেয়ার আইরিন খান বলেন, “গত কয়েকটা বছর বিশ্বব্যাপী নানান সংকট দেখা দিচ্ছে। মহামারীতে ১০ কোটি মানুষ অতিদরিদ্র হয়ে গেছে। ইউক্রেইনে যুদ্ধের কারণে খাদ্যপণ্যের সংকট দেখা দেবে। তার সঙ্গে রয়েছে ব্যাপকভাবে জলবায়ু পরিবর্তন। তাই দেশ ও দেশের বাইরে আইডিয়া ও ঝুঁকির সমন্বয় করেই ব্র্যাক কর্মসূচিগুলো চালাবে।”
ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামারা হাসান আবেদ বলেন, “আমাদের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের মূল লক্ষ্য মুনাফা অর্জন নয়, দরিদ্র মানুষের ক্ষমতায়ন। সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে আমরা একদিকে দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করি, অন্যদিকে এর অর্জিত উদ্বৃত্ত দিয়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন করি।”
ব্র্যাক কমিউনিকেশন্স, লার্নিং অ্যান্ড লিডারশিপ ডেভেলপমেন্টের পরিচালক মৌটুসী কবীরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক শামেরান আবেদ।