কোভিড-১৯ মহামারীর আর্থিক ক্ষতি মোকাবিলায় সরকারের প্রায় লাখ কোটি টাকার পণোদনা প্যাকেজকে স্বাগত জানিয়েছে বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তা মালিকদের সংগঠন বিএবি এবং ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি।
Published : 29 Apr 2020, 08:42 PM
তবে এই প্যাকেজের পুরোপুরি বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়ে আছেন তারা। বিতরণ করা ঋণের টাকা ফেরত পেতে তাই সরকারের কাছ থেকে নিশ্চয়তা চেয়েছেন তারা। আর এজন্য সরকারের কাছে একটি ‘ঋণঝুঁকি নিশ্চয়তা কর্মসূচি’ গঠনের দাবি জানিয়ে বিএবি ও এবিবি।
সেইসঙ্গে আগামী জুন পর্যন্ত চলতি ঋণের কিস্তি না দিলেও খেলাপি হিসেবে গণ্য না হওয়ার যে নিশ্চয়তা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই সুযোগটি আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ব্যাংক খাতের দুই সংগঠন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে এক ভিডিও সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির এতে অংশ নেন।
বুধবার এবিবি’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএবি ও এবিবি শুরুতেই মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থাৎ ৯৮ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করাকে সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপ বলে প্রশংসা করে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নগদ জমার হার (সিআরআর) ৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং রেপোর হার ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত ব্যাংক খাতে তারল্য প্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করবে বলেও সংগঠন দুটি স্বীকার করে।
আবার এও জানায় যে, ব্যাংক থেকে মানুষের নগদ টাকা তোলার চাপ বেড়েছে এবং ব্যাংকের আমানত প্রবাহও কমেছে।
বিএবি সভাপতি এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, কিস্তি দিতে না পারলেও আগামী জুন পর্যন্ত গ্রাহকেরা খেলাপি হবেন না। এই সুযোগটি ডিসেম্বর পর্যন্ত শিথিল হওয়া দরকার।
এবিবি সভাপতি ইস্টার্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার অর্থমন্ত্রীর কাছে দাবি করেন, প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে যেন ‘ঋণঝুঁকি নিশ্চয়তা কর্মসূচি’ নামে একটি কর্মসূচি চালু করা হোক।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকের পরিচালন ব্যয়, তহবিল ব্যয় ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অর্থমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন যে ব্যাংক খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যা যা দরকার, সরকারের পক্ষ থেকে সবই করা হবে। এদিকে বিএবি ও এবিবি অর্থমন্ত্রীকে আশ্বাস দিয়েছে যে, তার পরামর্শগুলো বাস্তবায়ন করবে তারা।
প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের ব্যাপারে শিগগিরই আবার বৈঠক করবে বিএবি ও এবিবি। সংগঠন দুটি প্রত্যেক ব্যাংককে প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের রূপরেখা তৈরির পরামর্শ দেবে বলে অর্থমন্ত্রীকে জানিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির অর্থমন্ত্রীকে আশ্বাস দিয়েছেন, ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও ব্যাংক খাতের স্বার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।