প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যে ৭৩ শতাংশ পোশাক কারখানা শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেছে বলে দাবি করেছে মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
Published : 16 Apr 2020, 11:41 PM
সংগঠনটি বৃহস্পতিবার বলেছে, বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত ১৬৬৫টি কারখানা মার্চ মাসে বেতন পরিশোধ করেছে, যার ফলে এই খাতের ৮৭ শতাংশ শ্রমিক বেতন পেয়েছেন।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শেষ সময়ে এসে যে ৬০৯টি কারখানা এখনও বেতন
দিতে পারেনি। তবে এর মধ্যে ঢাকায় ৯৭টি এবং চট্টগ্রামে আরও ১১৯টি কারখানা বেতন দেওয়ার জন্য প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারীতে বিশ্বের অর্থনীতি স্তব্ধ হয়ে পড়ার পর দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের বেতন দিতে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার।
এরপর বিজিএমইএ নেতারা সরকারকে প্রতিশ্রুতি দেন যে তারা ১৬ এপ্রিলের মধ্যে শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করবেন।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে লকডাউনের মধ্যে বেতনের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে রাস্তায় বিক্ষোভে নামছে ঢাকার সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা।
এই পরিস্থিতিতে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বৃহস্পতিবার রাতে বলেন, “আজকের মধ্যে আমরা ৮৭ শতাংশ শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ করতে পেরেছি।
“যারা বাকি আছেন, তারা আগামী ২০ এপ্রিল থেকে ২২ এপ্রিলের মধ্যে বেতন দেওয়ার চেষ্টা করবেন। কোনোভাবেই যেন সেটা ২৫ এপ্রিলের দিকে না যায়, সেই চেষ্টা আমাদের থাকবে।”
বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী তাদের সদস্যভুক্ত কারখানা রয়েছে ২ হাজার ২৭৪টি, এরমধ্যে মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করেছে ১ হাজার ৬৬৫টি কারখানা, যা মোট কারখানার ৭৩ শতাংশ।
তাদের হিসাবে, এই কারখানাগুলোর ২১ লাখ ৫৯ হাজার ১০০ পোশাক শ্রমিক বেতন পেয়েছে। অর্থাৎ মোট ২৪ লাখ ৭২ হাজার ৪১৭ জন শ্রমিকের মধ্যে এই হার ৮৭ শতাংশ।
পোশাক রপ্তানিকারকদের আরেক সংগঠন বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত কারখানা ৯৫২টি। তার মধ্যে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ কারখানায় বেতন পরিশোধ করা হয়েছে বলে সংগঠনটির দাবি।
যে কারখানাগুলো বেতন দিতে পারেনি, সেগুলো মূলত ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানা বলে জানান বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা, যারা বড় ক্রেতাদের কাজ করে তাকে।
পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “এমন একটা সময় আমরা পার করছি, যখন ক্রেতারা অর্ডার বাতিল করছেন, দেরিতে টাকা দিচ্ছেন কিংবা দিচ্ছেন না।
“এই পরিস্থিতিতে যারা সাব কন্ট্রাক্টিং করেন বা অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি করেন, তাদেরকে তারল্য সঙ্কটে পড়তে হয়। এধরনের কারখানাগুলোকে সহযোগিতা করার জন্য আমরা অনেক সময় ব্যাংকগুলোর কাছে যাচ্ছি, অনেকে আমাদের অনুরোধে সাড়াও দিচ্ছেন।”
রাজপথে যেসব শ্রমিক বিক্ষোভে নেমেছেন, তাদের কারখানা বিজিএমইএর সদস্য নয় বলে দাবি করেন রুবানা।
“এমন অনেকগুলো ছোট ছোট কারখানা রয়েছে, যারা আমাদের সদস্য না। কিন্তু তাদের শ্রমিকরাও বেতন না পেয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন। সামগ্রিক বিবেচনায় এটাও আমাদের বিবেচ্য। ছোট ছোট কারখানাগুলোর জন্যও আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”
“কিন্তু চ্যালেঞ্জ শুধু এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। পুরো দেশ আজ লকডাউনের আওতায়। ব্যাংকগুলো খোলা থাকছে অল্প কিছু সময়ের জন্য। গণপরিবহণ বন্ধ থাকা অবস্থায় লকডাউনের মধ্যে শিল্পের পক্ষে যথা সময়ে মজুরি পরিশোধ করা ভীষণ দুরূহ হয়ে পড়ে,” বলেন রুবানা।