চিকিৎসকদের মতো ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা ব্যাংকাররাও বীমা সুবিধা পাবেন।
Published : 16 Apr 2020, 12:52 AM
নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর বিস্তার ঠেকাতে লকডাউনের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে পাবেন ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা। আর মারা গেলে তার পরিবারকে ৫ গুণ অনুদান দেওয়া হবে।
বুধবার এক সার্কুলারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, লকডাউনের মধ্যে সীমিত আকারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছ। এই কঠিন পরিস্থিতিতে যেসব ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যাংকে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাংকিং কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্ব পালন করেছেন বা করছেন তারা কারোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হলে পদমর্যাদা ভেদে পাঁচ থেকে দশ লাখ টাকা স্বাস্থ্য বীমা সুবিধা পাবেন।
“মারা গেলে অর্থের পরিমাণ পাঁচ গুণ বাড়িয়ে অনুদান হিসেবে দেওয়া হবে।”
গত ৭ এপ্রিল দেশব্যাপী জেলা প্রশাসকদেরও সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নিয়ে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টদের বিশেষ স্বাস্থ্যবীমার ঘোষণা দিয়েছেন প্রদানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন,“ পদমর্যাদা অনুযায়ী পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবীমা হবে। দায়িত্ব পালনকালে কেউ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলে তার সার্বিক চিকিৎসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ইন্সুরেন্স পাঁচ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হবে “
লকডাউনের মধ্যে যে সব ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছেন তারা ‘বিশেষ প্রণোদনা ভাতা’ পাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার অপর এক সার্কুলারের মাধ্যমে ওই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিকালীন ব্যাংকে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীগণের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্য বীমা এবং বিশেষ অনুদান’ শীর্ষক সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
এ পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিকালীন ব্যাংকিং খাতকে সচল রাখতে যারা তাদের জীবন ও পরিবারকে ঝুঁকিতে রেখে সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন বা করছেন তাদের স্বীকৃতি স্বরূপ বিশেষ স্বাস্থ্য বীমা সুবিধা ও বিশেষ অনুদান হিসেবে দেওয়া হবে।
>> ছুটিকালীন সময়ে যেসব ব্যাংক কর্মকর্তা/কর্মচারী ব্যাংকে স্বশরীরে ব্যাংকিং কার্যক্রমে দায়িত্ব পালন করেছেন বা করছেন তারা কোভিড-১৯ দ্বারা আক্রান্ত হলে পদমর্যাদা ভেদে সর্বনিম্ন পাঁচ লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ দশ লাখ টাকা স্বাস্থ্য বীমা হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃক প্রদেয় হবে; যা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিজেরাই পদভিত্তিক প্রাপ্যতা নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
>> ন্যূনতম যৌক্তিক সময়ের মধ্যে (আক্রান্ত হওয়ার সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মধ্যে) উক্ত অর্থ দেওয়া হবে এবং তার সার্বিক চিকিৎসার ব্যয় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বহন করবে।
>> সাধারণ ছুটির সময় দায়িত্ব পালনের কারণে কোভিড-১৯ দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ফলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোনো ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনাকাঙ্খিত মৃত্যু ঘটলে বিশেষ স্বাস্থ্য বীমার জন্য নির্ধারিত অঙ্কে পাঁচ গুণ বিশেষ অনুদান হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে তার পরিবারকে দিতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যাংকে তার অন্য কোনো দায়-দেনার সঙ্গে এ বিশেষ অনুদান সমন্বয় করা যাবে না। ব্যাংকের বিদ্যমান নীতিমালার আওতায় দেওয়া অন্যান্য ভাতাদি ও সুযোগ-সুবিধা যথানিয়মে দিতে হবে।
>> ছুটিকালীন সময়ে কর্মকর্তা/কর্মচারীরা ব্যাংকে দায়িত্বপালনকালে অন্য যে কোনো দুর্ঘটনার শিকার হলে তার চিকিৎসার প্রকৃত ব্যয় সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে বহন করতে হবে।
>> এ নির্দেশনা সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির তারিখ থেকে কার্যকর হবে এবং ছুটি সমাপ্তির পরবর্তী ৩০ দিন পর্যন্ত কোভিড-১৯ দ্বারা আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও এ বিশেষ স্বাস্থ্য বীমা কার্যকর থাকবে। তবে উক্ত মেয়াদকালে কোভিড-১৯ দ্বারা আক্রান্ত হয়ে কোনো কর্মকর্তা/ কর্মচারীর অনাকাঙ্খিত মৃত্যু ঘটলে তার পরিবার বিশেষ অনুদান প্রাপ্য হবে।