রাজধানী ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় যাত্রীদের হয়রানি কমাতে সমন্বিত ই-টিকেটিং পদ্ধতি ‘র্যাপিড পাস’ সেবা শুরু করতে যাচ্ছে সরকার।
Published : 24 Jan 2017, 06:25 PM
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক মো. জাকির হোসেন মজুমদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সব পরিবহনে একই কার্ড অর্থাৎ ‘র্যাপিড পাস’ দিয়ে যাতায়াত করতে পারবেন যাত্রীরা।
আগামী মে মাস বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) আব্দুল্লাহপুর থেকে মতিঝিল রুটের এসি বাসে ‘র্যাপিড পাস’ পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
“ভবিষ্যতে মেট্রোরেল, বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি), রেল, বিআরটিসির সব রুট, বিআইডব্লউটিসি, পাবলিক পরিবহনে এই কার্ড ব্যবহার করে পরিবহন সেবা গ্রহণ করতে পারবে যাত্রীরা,” বলেন জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে সরকারি গণপরিবহন ব্যবস্থাকে এ কার্ডের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে। এ জন্য চুক্তি হতে হবে। বিআরটিসির সাথে চুক্তি হওয়ার পরই এ রুটে (আব্দুল্লাহপুর থেকে মতিঝিল) কার্ড সেবা চালু করা যাবে।”
বেসরকারি গণপরিববহন ব্যবস্থাকে এই সেবায় নিয়ে আসার বিষয়ে ডিটিসিএ এর ভারপ্রাপ্ত এই নির্বাহী পরিচালক বলেন, “বেসরকারি গণপরিববহন আগ্রহীরা চুক্তির মাধ্যমে এই সেবা শুরু করতে পারবেন, গণপরিবহনের সবার জন্য এ সুযোগ থাকছে।”
ডিটিসিএ এর এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সব পরিবহনে একই কার্ড (র্যাপিড পাস) ব্যবহারে ই-টিকেটিং চালু করার জন্য ‘ক্লিয়ারিং হাউজ ব্যাংক’ স্থাপনে ডিটিসিএ ও ডাচ বাংলা ব্যাংকের মধ্যে চুক্তিপত্র সম্পাদন হবে।
‘ক্লিয়ারিং হাউজ ব্যাংক’ প্রসঙ্গে তিনি জানান, একাধিক পরিবহন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভাড়া আদায় ব্যবস্থার সমন্বয়কারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে একটি ‘ক্লিয়ারিং হাউজ’। ভাড়া বন্টন ও কার্ড ব্যবস্থাপনার বিষয়গুলোর দেখভালও করবে তারা।
আর এই ক্লিয়ারিং হাউজ পরিচালনার লক্ষ্যে থাকবে একটি ‘ক্লিয়ারিং হাউজ ব্যাংক’, যা নিয়মিত ক্লিয়ারিং এর কাজ নিশ্চিত করার পাশাপাশি পরিবহন সেবা প্রদানকারী এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের প্রাপ্য অর্থ নিজ নিজ অ্যাকাউন্টে জমার ব্যবস্থা করবে। এছাড়াও র্যাপিড পাস এর জন্য ফি এবং রিচার্জ কার্যক্রম পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজও করবে।
সে লক্ষ্যে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ ও ডাচ বাংলা ব্যাংকের মধ্যে বুধবার চুক্তিপত্র হওয়ার কথা রয়েছে ওই ডিটিসিএ কর্মকর্তা বলেন, “এই চুক্তি বলে ডাচ বাংলা ব্যাংক ক্লিয়ারিং হাউজ ব্যাংক হিসাবে কাজ করবে।”
র্যাপিড পাস ব্যবহারকারীরা নগদ অর্থ বহন করার ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকবে এবং পরিবহন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানও নগদ অর্থ বহনের ঝামেলা এড়াতে পারবে বলে মনে করছে ডিটিসিএ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের পদক্ষেপ হিসেবে ‘সকল গণপরিবহণের জন্য একই কার্ড’ স্লোগান সামনে রেখে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্প হাতে নেয়।
রাজধানী ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থা সমন্বিত ই-টিকেটিং পদ্ধতির আওতায় আনতে জাইকার কারিগরি সহায়তায় চালু এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩৯ দশমিক শূন্য ৬ কোটি টাকা।
এর মধ্যে জাইকার কারিগরী সহায়তায় রয়েছে ২৮ দশমিক ৫২ কোটি টাকা এবং সরকারের ১০ দশমিক ৫৪ কোটি টাকা। প্রকল্পটি ২০১৮ সালের জুনে শেষ হবে।