ইসলামী ব্যাংকের এমডি বাধ্যতামূলক ছুটিতে

“ব্যাংকটির যেসব জায়গায় অনিয়ম রয়েছে সেসব জায়গায় আগে সংস্কার করব,” বলেন ভারপ্রাপ্ত এমডি ওমর ফারুক।

মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা। ফাইল ছবি।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে; যিনি আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে থেকেই দেশের অন্যতম বৃহত্তম এ ব্যাংকের দায়িত্বে ছিলেন।

রোববার ঈদের ছুটির পর শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকটির পর্ষদ সভায় তাকে ছুটি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে ব্যাংকটির একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

সাড়ে চার বছর ধরে এমডির দায়িত্ব পালন করা মুনিরুল মওলার জায়গায় ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ব্যাংকটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক খানকে।

ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব পাওয়া ওমর ফারুক পর্ষদের সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোমবার থেকে তিনি নতুন দায়িত্ব পালন করবেন।

“ব্যাংকটির যেসব জায়গায় অনিয়ম রয়েছে সেসব জায়গায় আগে সংস্কার করব।”

রোববার পর্ষদের সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে অবহিত ব্যাংকটির একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনিরুল মওলাকে তিন মাসের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।

মুনিরুল মওলা ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে এমডির দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এস আলমের নিয়ন্ত্রণাধীন পর্ষদের ব্যাংকগুলো থেকে অন্য এমডিদের সরানো হলেও ইসলামী ব্যাংকের এমডি তার দায়িত্বে বহাল ছিলেন।

শেখ হাসিনা সরকারের সময় পর্ষদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পগ্রুপ এস আলমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও জালিয়াতির মাধ্যমে এ ব্যাংক থেকে বিপুল অর্থ বের করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ছুটিতে পাঠানোর বিষয়ে জানতে মুনিরুল মওলাকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দিলেও তাতে সাড়া পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, যেসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের সঙ্গে ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা জড়িত রয়েছেন তাদের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় ইসলামী ব্যাংকের এমডিকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে চলতি বছর জানুয়ারিতে আরও কয়েকটি ব্যাংকের এমডিদের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়।

২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর ইসলামী ব্যাংকে আন্দোলন শুরু হয়। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে এস আলমের প্রভাবমুক্ত করতে আন্দোলন করেন ব্যাংকটির কয়েকশ কর্মী। এ ঘটনাটি ঘিরে ব্যাংকটির সামনে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে । যাতে গুলিবিদ্ধ হন অন্তত ৭ জন।

এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক অগাস্টেই এস আলমের নেতৃত্বাধীন পর্ষদ ভেঙে দিয়ে ইসলামী ব্যাংকে পাঁচজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয়; যাদের মধ্যে নতুন চেয়ারম্যান করা হয় সাবেক ব্যাংকার মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদকে।