“সিটি ব্যাংকের কাছে ১০০ কোটি টাকার তহবিল চেয়েছিল ফার্স্ট সিকিউরিটি, সেটি রিভাইস করে তারা আরও ১০০ কোটি টাকার সহায়তা চেয়েছে,” বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিক।
Published : 01 Oct 2024, 10:22 PM
প্রথম ধাপে সিটি ব্যাংকের কাছে ১০০ কোটি টাকার তারল্য সহায়তা চাওয়ার পর আরও ১০০ কোটির চাহিদা দিয়েছে ধুকতে থাকা ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক।
ফার্স্ট সিকিউরিটি চলতি সপ্তাহে সিটি ব্যাংকের কাছে ১০০ কোটি টাকার ঋণ চায়। তারপর সেই আবেদন পুর্নমূল্যায়ন করে আরও ১০০ কোটিসহ মোট ২০০ কোটি টাকার সহায়তা চেয়েছে।
যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে সিটি ব্যাংককে অনুমোদন দেয়নি
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র ও পরিচালক শাহরিয়ার সিদ্দিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সিটি ব্যাংকের কাছে ১০০ কোটি টাকার তহবিল চেয়েছিল ফার্স্ট সিকিউরিটি, সেটি রিভাইস করে তারা আরও ১০০ কোটি টাকার সহায়তা চেয়েছে।”
তিনি বলেন, ফার্স্ট সিকিউরিটি মোট ২০০ কোটি টাকা চায়। তবে আবেদন করলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক মঙ্গলবার পর্যন্ত অনুমোদন দেয়নি। হয়ত চলতি সপ্তাহেই অনুমোদন দেওয়া হবে।
এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকাকালীন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে ঋণ নেয় চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী গোষ্ঠীটি।
দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, “এস আলম নানা কায়দার মাধ্যমে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নেয়। তবে ঋণের টাকা ব্যাংকে আর ফেরত দেওয়া হয়নি।”
৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর ব্যাংক খাতেও পরিবর্তনের হাওয়া লাগে। গভর্নরের দায়িত্ব নেওয়ার পর ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোতে অবইধ্যভাবে তারল্য সহায়তা বন্ধ করে দেন আহসান মনসুর।
বাংলাদেশ ব্যাংক আমনতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় ও গ্রাহকের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য আরও কয়েকটি দুর্বল ব্যাংকের সঙ্গে ফার্স্ট সিকিউরিটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেন। কারণ সাইফুল আলমের স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ তার চার আত্মীয় এই ব্যাংকের পর্ষদে ছিলেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আবদুল মান্নানকে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের নতুন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়। আবদুল মান্নান ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে 'বন্দুকের মুখে' পদত্যাগ করতে বাধ্য হন বলে দাবি তার।
আব্দুল মান্নান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাকে বোর্ডে নতুন দায়িত্ব দিয়েছে। আমরা দ্রুত চেষ্টা করছি খেলাপির টাকা উদ্ধার করতে। ব্যাংকটিতে আগে যারা ছিলেন সে সময় নানা রকম অনৈতিক চর্চা হয়েছে। ফলে ব্যাংকটি দুর্বল হয়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করছি, গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য।”
তিনি বলেন, " ২০০ কোটির মত তারল্য সহায়তা চাওয়া হয়েছে সিটি ব্যাংকে। বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন দিলে পাওয়া যাবে, তখন গ্রাহকের চাহিদা মোতাবেক টাকা দেওয়া যাবে। "
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র ও পরিচালক শাহরিয়ার সিদ্দিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ মঙ্গলবার পর্যন্ত কোনো ব্যাংককে ফান্ড ( তহবিল) দেওয়া হয়নি। তারল্য সংকটে ভুগতে থাকা ব্যাংকগুলো সবল ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করছে। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেওয়া হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে প্রায় দুই মাস ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক তীব্র তারল্য সংকটে ভুগছে। শাখাগুলোতে গিয়ে চাহিদা মত টাকা তুলতে পারছেন না গ্রাহকরা।