“একমাত্র শক্তিশালী সংগঠনই পারে শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করতে,” বলেন কুইন সাউথ টেক্স মিলস লিমিটেডের শ্রমিক কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি।
Published : 24 Sep 2024, 10:47 PM
বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন-২০১৯ সংশোধনের মাধ্যমে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের শ্রমিকদের ইউনিয়ন করার এবং যৌথ দর কষাকষির অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি উঠেছে।
মঙ্গলবার ঢাকার গুলশানের একটি হোটেলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা সলিডারিটি সেন্টার আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এই দাবি তুলে ধরেন বলে সংস্থাটির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
ইউএসএআইডির অর্থায়নে গ্লোবাল লেবার প্রোগ্রামের অধীনে সলিডারিটি সেন্টার বাংলাদেশ অফিসের সহায়তায় এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
কুইন সাউথ টেক্স মিলস লিমিটেডের শ্রমিক কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আসাদুল হক বলেন, “ইপিজেড শ্রম আইনের কারণে আমরা এক ধরনের কারাগারের মধ্যে বাস করছি। ইপিজেড এর শ্রমিকরা কোনো ধরনের রাজনৈতিক বা অন্য কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে না।
“যদি কারও সাথে মিশতে না পারি তাহলে আমরা অধিকার সম্পর্কে জানব কীভাবে? একমাত্র শক্তিশালী সংগঠনই পারে শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করতে। শক্তিশালী সংগঠনের জন্য প্রয়োজন সচেতন শ্রমিক।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে বর্তমানে ইপিজেডগুলোতে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা ৫ লাখ ১৬ হাজার ৫৮৮ যার ৬৬ শতাংশ নারী। ২০১২ থেকে ২০২২ অর্থবছরে ইপিজেডগুলো আয় করেছে ৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার, যা গার্মেন্টস সেক্টরের মোট আয়ের ৫৪ শতাংশ।”
বৈঠকে সলিডারিটি সেন্টারের প্রোগ্রাম অফিসার গোলাম কিবরিয়া মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
প্রবন্ধে ইপিজেড শ্রম আইনের সীমাবদ্ধতার দিকগুলো তুলে ধরা হয়। এসব সীমাবদ্ধতার মধ্যে রয়েছে শ্রমিকের সংগঠন করার অধিকার না দেওয়া এবং সেই সব ব্যবস্থা যা শ্রমিকদের কার্যকরভাবে ন্যায় বিচার চাইতে দেয় না।
সলিডারিটি সেন্টার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর একেএম নাসিম বলেন, “শ্রমিক কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশন গঠন করার অধিকারও বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নানা ধরনের প্রচ্ছন্ন বাধা তৈরির মাধ্যমে খর্ব হয়। ইপিজেড শ্রমিকদের শ্রমিক অধিকার নিয়ে কর্মরত প্রতিষ্ঠানের কাছে যাবার অনুমতি দিতে হবে, যাতে করে তাদের সংঠন করার জ্ঞ্যান ও সক্ষমতা বাড়ে।”
সলিডারিটি সেন্টার বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর মনিকা হার্টসেল বলেন, “বাংলাদেশে সাম্প্রতিক পরবির্তনের আলোকে এটি এখন দাবি করা যেতে পারে যে, ইপিজেড শ্রমিকদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ অধিকার থাকা উচিত, বিশেষ করে তাদের সংগঠন করার অধিকার।”
আইনজীবী সেলিম আহসান খান বলেন, “বর্তমান ইপিজেড আইন শ্রমিক কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশন তৈরির অনুমতি দিলেও এই অ্যাসোসিয়েশনগুলো কোনো বেসরকারি সংস্থা, ট্রেড ইউনিয়ন বা ফেডারেশনের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারে না। শ্রমিকরা বাইরের কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারে না, যা তাদের শ্রম আইন ভঙ্গের ক্ষেত্রে প্রতিকার প্রাপ্তির অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।”
সলিডারিটি সেন্টারের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার লিলি গোমেজের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে গার্মেন্টস শ্রমিক নেতারা এবং সরকার ও গার্মেন্টস মালিকদের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।