নতুন তিন মডেলের ফ্রিজ নিয়ে এল ওয়ালটন

ফ্রিজের নতুন মডেলগুলোর দাম পড়বে ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকার মধ্যে।

জায়ান্টটেক সিরিজের ‘এআইওটি বেজড’ নতুন তিন মডেলের ‘স্মার্ট’ রেফ্রিজারেটর বাজারে এনেছে ইলেকট্রনিক পণ্যের দেশি কোম্পানি ওয়ালটন।

বুধবার বিকালে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ওয়ালটনের করপোরেট অফিসে এক অনুষ্ঠানে জায়ান্টটেক সিরিজের ৬৬০ লিটারের জিটি প্রো ম্যাক্স, ৬৪৬ লিটারের জিটি প্রো এবং ৬১৯ লিটারের জিটি মডেলের রেফ্রিজারেটর উদ্বোধন করা হয়।

ফ্রিজগুলো উদ্বোধন করেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর গোলাম মুর্শেদ। 

অনুষ্ঠানে দাবি করা হয়, এই রেফ্রিজারেটরগুলোর মধ্যে ‘দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম উৎপাদনকৃত’ ফোর-ডোর রেফ্রিজারেটর এবং ‘বিশ্বের প্রথম’ এইট-ইন-ওয়ান কনভার্টিবল সাইড-বাই-সাইড ডোর ফ্রিজ রয়েছে।

৬১৯ লিটার থেকে ৬৬০ লিটার ধারণক্ষমতার এসব রেফ্রিজারেটর চলতি মাসেই বাজারে আসবে। আর এই মডেলগুলোর দাম পড়বে ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ টাকার মধ্যে।

গ্রাহকরা স্মার্টফোনে ওয়ালটন স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্সের মাধ্যমে বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে এসব ফ্রিজ পরিচালনা করার পাশাপাশি অনলাইন শপিং ও ইউটিউবে কুকিং রেসিপি ব্রাউজ করতে পারবেন।

সেইসাথে, ফ্রিজের এমএসও (ম্যাট্রিক্স স্পিড অপটিমাইজেশন) ইনভার্টার টেকনোলজি বাইরের তাপমাত্রা অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে সবচেয়ে কম বিদ্যুৎ খরচে ফ্রিজের অভ্যন্তরীণ সর্বোচ্চ কুলিং পারফরমেন্স নিশ্চিত করবে।

তাছাড়া, সর্বোচ্চ কনভার্টিবল মুডসমৃদ্ধ এই জায়ান্টটেক রেফ্রিজারেটরের ফ্রিজ ও ফ্রিজার কম্পার্টমেন্টের কুলিং পারফরমেন্স গ্রাহক তার পছন্দমত সেটও করতে পারবেন।

তিনটি মডেলেই স্মার্ট কন্ট্রোল ফিচার থাকায় ওপরের দরজায় হাতের স্পর্শের মাধ্যমেই ফ্রিজ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, এরজন্য ফ্রিজের দরজা খোলার প্রয়োজন পড়েবে না। ফলে ম্যাক্সিমাম কুলিং পারফরমেন্সের সঙ্গে বিদ্যুৎও সাশ্রয় হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

ওয়ালটনের চিফ টেকনিকেল অফিসার ইয়ুন মগ ইয়াং বলেন, “এই ফ্রিজগুলো লাকজারিয়াস ডিজাইন এবং হাই কোয়ালিটি ম্যাটেরিয়াল দিয়ে তৈরি। কাস্টমার যাতে সহজভাবে ব্যবহার করতে পারে, সেভাবে এটি ডিজাইন করা হয়েছে। এটি খাবারকে দীর্ঘসময় ফ্রেশ রাখবে।

“এতে ব্যবহৃত হয়েছে থ্রিডি এমএসও ইনভার্টার টেকনোলজি। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট বেজড এই প্রযুক্তি এনভায়রনমেন্ট টেম্পেরেচারের থ্রিডি ডাটা সংগ্রহের পাশাপাশি দরজা খোলা অবস্থায় ও ফ্রিজ কম্পার্টমেন্টের সঠিক টেম্পেরেচার অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফ্রিজের তাপমাত্রা সেট করে সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ খরচে সর্বোচ্চ কুলিং পারফরমেন্স নিশ্চিত করবে।” 

ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর ডিজাইন অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের টেকনিকেল অ্যাডভাইজার ইতসুরো সুজুকি বলেন, “নির্দিষ্ট তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলোকরশ্মির মাধ্যমে ওয়ালটন ফ্রিজে সংরক্ষিত ফলমূল ও শাক-সবজি প্রকৃতির মত সজীব রাখে। ফলে ওয়ালটন ফ্রিজে সংরক্ষিত ফল ও সবজির ভিটামিন, মিনারেলসহ অন্যান্য খাদ্যগুণ ও পুষ্টি অক্ষুণ্ন থাকে। এসব ফ্রিজের ইউভি-সি টেকনোলজি বায়ুবাহিত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া থেকে ফ্রিজে রাখা খাবারকে সুরক্ষিত রাখে।”

ওয়ালটন ফ্রিজের চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও) তোফায়েল আহমেদ বলেন, “বিশ্বের সব আধুনিক দেশের বেঞ্চমার্ক উপযোগী করে জায়ান্টটেক সিরিজের রেফ্রিজারেটরগুলো তৈরি করা হয়েছে। এসব ফ্রিজে গ্রাহকেরা স্মার্ট সব প্রযুক্তি ও ফিচার পাবেন।”

ওয়ালটনের জায়ান্টটেক সিরিজের এসব ফ্রিজের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ হাই-টেক রেফ্রিজারেটর উৎপাদন ও বিপণনে নতুন যুগে প্রবেশ করল মন্তব্য করে গোলাম মুর্শেদ বলেন, “বাংলাদেশের এই ইন্ডাস্ট্রি এক সময় আমদানি নির্ভর ছিল। ওয়ালটন সময়মত পদক্ষেপ না নিলে ফ্রিজ কিনতে প্রতিবছর ৩ থেকে ৪ বিলিয়ন ডলার খরচ হত।

“জায়ান্টটেক সিরিজের ফ্রিজের মডেল ডেভলমেন্টের জন্য আমরা বিশ্বের বহু দেশের ফ্রিজ এক্সপার্টসদের নিয়ে কাজ করেছি। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আজকের পর থেকে এফোর্ডেবল প্রাইসে ১৭ কোটি মানুষকে প্রিমিয়াম প্রোডাক্ট পৌঁছে দেব।”

ওয়ালটন জানায়, এসব ফ্রিজে ক্রেতারা এক বছরের রিপ্লেসমেন্টসহ কম্প্রেসরে ১২ বছরের গ্যারান্টি এবং ৫ বছরের ফ্রি বিক্রয়োত্তর সেবার সুবিধা পাবেন। এছাড়া আইএসও সনদপ্রাপ্ত দেশব্যাপী বিস্তৃত ৭৯টি সার্ভিস সেন্টার থেকে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবাও পাওয়া যাবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, জিটি প্রো ম্যাক্স মডেলে ২১ দশমিক ৫ ইঞ্চি ও জিটি মডেলে ১৫ দশমিক ৬ ইঞ্চির মাল্টিমিডিয়া এলসিডি ডিসপ্লে রয়েছে। এতে ইউটিউব ব্রাউজিং, অনলাইন গ্রোসারি শপিং, অফলাইন ভিডিও ও অডিও, কাউন্টডাউন ক্লক, রেসিপি, ক্লক, ক্যালেন্ডার, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, সেলফি ক্যামেরা, ওয়েদার আপডেট ইত্যাদি ফিচারও রয়েছে। 

চিত্রনায়ক আমিন খানের সঞ্চালনায় ‘দ্যা গ্র্যান্ড লঞ্চিং’ প্রোগ্রামে আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর শোয়েব হোসেন নোবেল, ওয়ালটন প্লাজার চিফ এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মোহাম্মদ রায়হান, ওয়ালটন হাই-টেকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নজরুল ইসলাম সরকার, এমদাদুল হক সরকার, মো. হুমায়ুন কবীর, মো. ইউসুফ আলী এবং সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এস এম জাহিদ হাসান।