বিভিন্ন কোম্পানি আগে থেকে শুরু করা প্রকল্পগুলোতে তুলনামূলক বিশেষ দামে এ বছর ফ্ল্যাট দিতে পারবে, বলেছেন রিহ্যাবের এক সহসভাপতি।
Published : 18 Dec 2022, 05:40 PM
প্রতিবারের মত ঢাকায় রিহ্যাবের বার্ষিক আবাসন মেলা শুরু হচ্ছে; যেটিকে দাম বেড়ে যাওয়ার আগেই শহরাঞ্চলে সুলভ মূল্যে ফ্ল্যাট কিংবা বাড়ি কেনার ‘শেষ সুযোগ’ বলছেন আয়োজকরা।
আবাসন নির্মাণ কোম্পানিগুলোর সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) পাঁচ দিনের এই মেলা আগামী ২১ থেকে ২৫ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজন করছে।
রোববার সোনারগাঁও হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে ‘রিহ্যাব ফেয়ার-২০২২’ এর বিস্তারিত তুলে ধরেন সংগঠনের সহ সভাপতি (অর্থ) মোহাম্মদ সোহেল রানা।
রিহ্যাবের বার্ষিক এ আয়োজনে থাকছে ১৮০টি স্টল। এরমধ্যে তিনটি ডায়মন্ড প্যাভিলিয়ন, সাতটি গোল্ড স্পন্সর, ২২টি কো-স্পন্সর, ১৬টি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ও ১৩ অর্থলগ্নীকারী কোম্পানি তাদের পণ্য ও সেবা নিয়ে মেলায় হাজির থাকবে।
এবারের মেলাকে সুলভ মূল্যে ফ্ল্যাট কেনার শেষ সুযোগ উল্লেখ করে সোহেল রানার দাবি, সম্প্রতি নির্মাণ সামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে ফ্ল্যাটের দাম বেড়েছে; সামনে আরও বাড়বে। রিহ্যাব আয়োজিত এ বছরের ফেয়ার হতে পারে ক্রেতাদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ। কারণ এখনও বিভিন্ন কোম্পানি আগে থেকে শুরু করা প্রকল্পগুলোতে তুলনামূলক বিশেষ দামে এ বছর ফ্ল্যাট দিতে পারবে।
সংবাদ সম্মেলনে ভবিষ্যতে ঢাকায় ফ্ল্যাটের মূল্য বেড়ে যাওয়ার আরও কয়েকটি কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বের ক্রমবর্ধমান মেগাসিটিগুলোর মধ্যে ঢাকা এখন অন্যতম। এমন বাস্তবতায় গত ২৩ অগাস্ট থেকে নতুন ড্যাপের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নতুন ড্যাপ ঘোষিত ফ্লোর এরিয়া রেশিও (ফার) কমে যাওয়ার কারণে মূল ঢাকায় বেশিরভাগ ভবন হবে ৪ থেকে ৫ তলা। ফলে আগামীতে আবাসন সংকট আরও প্রকট হবে। উচ্চহারে বাড়বে ফ্ল্যাটের দাম ও আকাশচুম্বি হবে বাড়ি ভাড়া।
“নতুন ড্যাপের প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর বিগত প্রায় ৪ মাসে আমাদের রিহ্যাব সদস্যরা জমির মালিকের সাথে কোনো চুক্তি বা সমঝোতায় যেতে পারেনি। কেউ নতুন করে প্লান পাশ করেনি। পুরাতন প্রকল্পগুলো নিয়েই অনেকে কাজ করছেন। ফলে আগামীতে ফ্ল্যাটের সংকট তৈরি হবে এবং দাম বাড়বে।”
শহরাঞ্চলের জনসংখ্যা বাড়ার ফলে ভবিষ্যতে ঢাকায় আবাসনের চাহিদা আরও বাড়বে বলে আশা করেন রিহ্যাবের সহ সভাপতি কামাল মাহমুদ।
তিনি বলেন, সকল সুযোগ-সুবিধা ঢাকাকেন্দ্রিক হওয়ার কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর প্রধান নগরীর মধ্যে ঢাকায় জনসংখ্যা বাড়ছে সবচেয়ে বেশি হারে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী ঢাকায় প্রতিদিন ১৭০০ নতুন নাগরিক যুক্ত হচ্ছে। বছর শেষে এই লোকের সংখ্যা ৭ লাখের কাছাকাছি। ফলে প্রতিনিয়ত ঢাকায় আসা নতুন নতুন মুখের বাসস্থান তৈরির বিকল্প নেই।
গত ২২ বছর ধরে ঢাকায় আবাসন মেলার আয়োজন করে আসছে রিহ্যাব। একসঙ্গে অনেকগুলো কোম্পানির ফ্ল্যাট ও প্লট যাচাই বাছাই করার সুযোগ থাকে রিহ্যাব মেলায়। শুধু ফ্ল্যাট বা প্লট নয়, এক সঙ্গে গৃহঋণ এবং বাড়ি তৈরির নানা উপকরণও যাচাই করার সুযোগ থাকে ক্রেতারা।
২০০১ সাল থেকে ঢাকায় আবাসন মেলা করছে রিহ্যাব। এছাড়া চট্টগ্রামে ১৪টি এবং ২০০৪ সাল থেকে বিদেশেও মেলা করেছে সংগঠনটি। এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১২টি, যুক্তরাজ্যে, দুবাই, ইতালির রোম, কানাডা, সিডনি, কাতারে একটি করে এবং দুবাইতে দুটি ‘রিহ্যাব হাউজিং ফেয়ার’ আয়োজনের কথা জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
মেলায় প্রবেশের নিয়ম
আগের মেলাগুলোর ধারাবাহিকতায় এ বছরও দুই ধরনের টিকেট থাকছে। একটি সিঙ্গেল ও অপরটি মাল্টিপল এন্ট্রি। একক টিকেটের প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা। বারবার ঢোকা যাবে এমন মাল্টিপল এন্ট্রি টিকেটের প্রবেশ মূল্য ১০০ টাকা। এ টিকেট দিয়ে একজন দর্শনার্থী মেলায় পাঁচবার প্রবেশ করতে পারবেন। প্রবেশ টিকেটের প্রাপ্ত সম্পূর্ণ অর্থ দুঃস্থদের সাহায্যার্থে ব্যয় করা হবে। এ টিকেটের র্যাফেল ড্রতে থাকছে আকর্ষণীয় মূল্যবান পুরস্কার। এ বছর মেলার শেষে প্রতিদিন রাত ৯টায় রাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হবে। রাফেল ড্রতে ৫ দিনে থাকবে আকর্ষণীয় পুরস্কার।