মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৯ শতাংশ থেকে সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ধরে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে।
Published : 07 Jun 2024, 06:21 PM
চড়া মূ্ল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে এনে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৩ শতাংশ পয়েন্ট কমানোর যে লক্ষ্য অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় রেখেছেন, তার পক্ষে ব্যাখ্যা দিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
বর্তমানে বাজার মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৯ শতাংশ, যা সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ধরে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
শুক্রবার ঢাকার ওসমানি স্মৃতি মিলনায়নে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে আসেন অর্থমন্ত্রী। সেখানে অন্যান্যের সঙ্গে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী টিটুও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা হয়, মূল্যস্ফীতি কমানোর বিষয়ে বাজেটে কী কৌশল নেওয়া হয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তর দেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।
আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, বাজেটে নতুন বছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। ধান, চাল, গম, ছোলা, মসুর ডালসহ অন্যান্য কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যে বিদ্যমান ২ শতাংশ কর কমিয়ে ১ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।
“ভোক্তা অধিকার সংরক্ষাণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাজার মনিটরিং করি। বাজার মনিটরিং একটা চলমান প্রক্রিয়া। বাজেটের পর বাজার অস্থির হয়ে গেছে এমন কোনো তথ্য নেই।”
জিনিসপত্রের দাম কমাতে সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা এখন টিসিবির মাধ্যমে ১ কোটি পরিবারকে ভর্তুকিতে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছি। আগামীতে এর আকার বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব তৈরি করছি। টিসিবির স্থায়ী ডিলারদের দোকান করার চেষ্টা করছি। ভর্তুকি মূল্যের সাথে সাথে ন্যায্য মূল্যের কিছু পণ্য সরবরাহ করার চেষ্টাও করছি।
“বিশেষ করে বলতে গেলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধির মত কোনো ঘোষণা এ বাজেটে নেই। উল্টো কমার মত ঘোষণা আছে। কয়েকটি পণ্যের উৎসে কর ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হয়েছে। গুঁড়ো দুধের আমদানিতে কর যৌক্তিক করা হয়েছে। সময়ে সময়ে পণ্যের কর কমিয়ে আনা হবে।
“১০টি পণ্যের ওপর আরোপিত ন্যূনতম ভ্যালু প্রত্যাহার করা হয়েছে। ১০টি পণ্যের শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে। ১৯টি পণ্যে সম্পূরক শূল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। ১৭২টি পণ্যে সম্পূরক শূল্ক হ্রাস করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এসব শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে। অন্যান্য শুল্ক যেগুলো আছে, সেগুলো এনবিআর যথাযথ সময়ে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসবে।”
মূল্যস্ফীতির জন্য ইউক্রেইন-রাশিয়া যুদ্ধ ও বহির্বিশ্বে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিকে ‘কারণ’ হিসেবে সামনে এনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমাদের বাজেটেও বলা হয়েছে। আমরাও বলছি যে, মূল্যস্ফীতি, বিশেষ করে ফুড ইনফ্লেশনটা তুলনামূলক বেশি।
“স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত চালের দাম বাড়ল কেন? এমন প্রশ্নও পাওয়া যায়। যে চাল বিক্রি করে সে কিন্তু চড়া দামের সয়াবিন তেল কেনার চিন্তা করে। তেলের দাম যখন বেড়ে যায়, চাল বিক্রেতা তখন চিন্তা করে তার চালটা সেভাবেই বিক্রি করতে হবে। এভাবে আন্তর্জাতিক পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি দেশীয় পণ্যের দামও বাড়িয়ে দেয়।”
নতুন অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, অর্থ সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিমও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।