ঘাটতি মেটাতে রাজধানীর বাইরে নজর দিয়েছেন ঢাকার আড়তদার ও ট্যানারি মালিকরা।
Published : 23 Jun 2024, 11:47 PM
প্রশাসনের কড়াকড়ির কারণে বাইরে থেকে ঢাকায় এবার কোরবানির চামড়া তেমন ঢুকতে পারেনি; তাতে রাজধানীর আড়ৎগুলোতে তুলনামূলক কম চামড়া সংরক্ষণ হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতেই কাঁচা চামড়ার শেষ গন্তব্যস্থল ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে দর কষাকষি শুরু করেছেন ঢাকাসহ আশপাশের আড়তদাররা।
ঢাকার পুরনো আড়ৎ পোস্তার ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদ পরবর্তী সাত দিনের চামড়া পরিবহন নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হয়ে রোববার থেকেই ঢাকায় ঢুকতে পারবে লবণ মেশানো চামড়া। পরদিন থেকে ট্যানারি প্রতিনিধিদের আনাগোনা বাড়বে।
মাদ্রাসা-মক্তবের প্রতিনিধি এবং মৌসুমি ফড়িয়াদের হাত ঘুরে কাঁচা চামড়া এখন ঢাকার লালবাগের পোস্তাসহ বিভিন্ন আড়তে আছে লবণ মেশানো অবস্থায়। আগেরবার ৯৬ হাজার কাঁচা চামড়া সংগ্রহ হয়েছিল পোস্তায়।
এবার সংগ্রহের পরিমাণ তার চেয়ে কম বলে জানিয়েছেন আড়ৎদারদের সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন।
সংগঠনটির সভাপতি আফতাব খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলে, “পোস্তার ব্যবসায়ীদের টার্গেট ছিল এক লাখ চামড়া কেনার, কিছু কম হয়েছে। বাকিটা অন্য এলাকা থেকে কিনবেন বলে জানতে পেরেছি। তাতে এক লাখ হয়ে যাবে।”
লালবাগ ও ঢাকার আশপাশ মিলিয়ে পোস্তার আড়তদাররা প্রতিবছর আড়াই লাখ চামড়ার বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন। নারায়ণগঞ্জ, কেরাণীগঞ্জ, নরসিংদী থেকে ঢাকার পোস্তা ও সাভারের ট্যানারি পল্লীতে কাঁচা চামড়া প্রবেশ করতে পারলেও এবার ঢাকার অদূর কুমিল্লা, চাঁদপুর, চন্দ্রা, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ থেকে তা আসতে পারেনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
গুদাম ঘরে থাকা লবণ মেশানো চামড়া বিক্রি করতে ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে শেষ মুহূর্তের দর কষাকষি চলছে আড়তদারদের। ট্যানারি প্রতিনিধির পাশাপাশি মালিকরাও পোস্তার আড়ৎ পরিদর্শন শুরু করেছেন।
পোস্তার আড়তদার আফতাব খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তিনটি ঘরের (আড়ৎ) চামড়া বিক্রি হয়ে গেছে শনিবার। অনেকগুলো দেখে গিয়েছেন ট্যানারি মালিকরা। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই বাকি চামড়া বিক্রি হয়ে যাবে।”
এবার লবণ মেশানো গরুর চামড়ার দাম রাজধানীর জন্য প্রতি বর্গফুট ৫৫ থেকে ৬০ টাকা এবং ঢাকার বাইরের জন্য ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ঠিক করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত বছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুটের দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে এই দর ছিল ৪৭ থেকে ৫২ টাকা।
এবার পোস্তায় সর্বোচ্চ এক হাজার ২০০ টাকা দরে প্রতিটি চামড়া কিনেছেন আড়তদাররা। আগেরবার শেষ সময়ে এক হাজার ৩৫০ টাকায়ও চামড়া কিনেছিলেন তারা।
এবার মাঝারি আকারের কাঁচা চামড়া কিনেছেন গড়ে এক হাজার থেকে ১১০০ টাকায়। কোনো কোনো লট (এক ট্রাক) ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা দরে কিনেছেন ব্যবসায়ীরা।
ঈদে প্রতিটি চামড়া সংরক্ষণে ৬-৭ কেজি লবণ ব্যবহৃত হয়; এই সময়ে অপেশাদার শ্রমিক কাজ করায় লবণের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি লাগে। চামড়া ট্রাক থেকে নামানো, আড়তে পৌঁছে দেওয়া বাবদ শ্রমিকরা প্রতি চামড়ায় ১০-১৫ টাকা পান।
পানি, তদারকি, ঘর ভাড়া, ব্যবস্থাপনা ও লবণ খরচ মিলিয়ে প্রতি চামড়ার পেছনে ৩০০ টাকার মত খরচ হয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান।
সব খরচ ও মুনাফা রেখে ট্যানারি পর্যায়ে লবণজাত চামড়ার দর ঠিক করেন আড়তদাররা। গতবারের চেয়ে লবণের সরবরাহ বেশি ও দাম কম থাকায় পোস্তার আড়তদাররা এবার মুনাফা বাড়ার আশা করছেন।
ট্যানারির প্রতিনিধিরা দরদাম ঠিক করে লবণ মাখানো চামড়ার স্তূপগুলোতে বিশেষ চিহ্ন দিয়ে রাখতে শুরু করেছেন। ট্যানারিতে চামড়া নেওয়ার পর শুরু হবে অর্থপরিশোধ। মাসখানেক পর থেকে এসব চামড়া ট্যানারিতে যাবে।
মেশানো লবণ ঝেরে ফেলে আড়ৎ থেকে চামড়া শুকানোর পরবর্তী প্রক্রিয়া হবে ট্যানারিতে। আগের বার ঈদ পরবর্তী দুই সপ্তাহের মধ্যেই পোস্তার সব চামড়া বিক্রি হয়ে যায়।
পোস্তার আড়তদারদের মনোযোগ ঢাকার বাইরে
চামড়া কম আসায় রাজধানীর লালবাগের পোস্তার আড়ৎদাররা ঢাকার আশপাশের জেলা ও সাভারের ট্যানারি পল্লীর কাছের এলাকাতেও কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ করেছেন।
এবার ঢাকায় চামড়া কম আসায় বাইরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন পোস্তার সোহরাওয়ার্দী অ্যান্ড ব্রাদার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এবার ১০ হাজারও সংরক্ষণ করতে পারিনি। গতবার টার্গেটের ১০ হাজারই করেছিলাম। ঢাকার বাইরের চালান আসলে কিনতে পারব আশা করছি।”
সাভারের চামড়া শিল্প নগরীর ট্যানারি মালিকরাও চামড়া কম পেয়েছেন। সদর ট্যানারি এবার এক লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করলেও কোম্পানিটি পেয়েছে ৩০ হাজারের সামান্য বেশি।
এর জন্য শিল্পনগরীর প্রবেশ মুখের যানজট এবং প্রশাসনিক কড়াকড়িকে দায়ী করে সদর ট্যানারির ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢাকার বিভিন্ন জায়গা ও ফ্যাক্টরিতে বসে গতবার ৫০ হাজারের বেশি কাঁচা চামড়া কিনতে পারছিলাম ঈদের দিনেই। ঢাকার বাইরের চামড়া কিনে এক লাখ কোটা পূরণ করতে পারব।
“আমাদের লোকজন ঢাকার বাইরে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় আমাদের প্রতিনিধিরা যোগাযোগ শুরু করেছে। দিনাজপুর, নাটোর ও ময়মনসিংহ থেকে চামড়া আসলে এক লাখ হয়ে যাবে।”
একই সুর গুলশান ট্যানারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির উদ্দিনের কথায়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “চামড়া তো ধীরে ধীরে আসে। আরো কয়েকদিন গেলে পুরো চিত্রটা বুঝতে পারা যাবে। অনেক ট্রাক ঘুরিয়ে দিয়েছে বিভিন্ন জেলায়। তাও সময় মত লবণ মেশাতে পারলে ভালো। আমরা চেষ্টা করছি, যোগাযোগ করছি।”
আড়ৎদার ও ট্যানারি মালিকরা ঢাকার বাইরে থেকে যেসব চামড়া কিনছেন তা সরাসরি সাভারে শিল্পনগরীতে যাবে বলে জানালেন সালমা ট্যানারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাখাওয়াত উল্লাহ।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ঢাকার বাইরে থেকে লবণ মেশানো চামড়া পোস্তা বা অন্য কোনো আড়ৎদাররা কিনলেও তা ঢাকার কোথাও রাখবেন না। সরাসরি ট্যানারির গেইটে নিয়ে যাবেন। লেবার ও পরিবহন খরচ কমাতেই এটা তারা করবেন।”
দিন-রাত ব্যস্ততা ট্যানারিতে
কোরবানির ঈদ মৌসুমে সংগ্রহ করা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে আড়াই মাস সময় লেগে যায় ট্যানারি মালিকদের।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বলেন, “এ বছর বিটিএ ৮০ লাখ কাঁচা চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ লাখ কম।”
এবার ঈদের দ্বিতীয় দিন মিলিয়ে চার লাখ ৭৫ হাজার কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করেছেন ট্যানারি মালিকরা।
বিটিএ চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এবার ঢাকার বাইরে চামড়া সংরক্ষণ হয়েছে গতবারের চেয়ে বেশি। সেই চামড়া কিনতে যোগাযোগ করছেন ট্যানারি মালিকরা। আশা করছি, দ্রুত সব চামড়া চলে আসবে।”
আগে কেবল আড়ৎ থেকে কিনলেও গত কয়েক বছর থেকে সরাসরিও কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করছেন ট্যানারি মালিকরা।
ঈদের দিনে কেনা চামড়া সেদিনই সরাসরি মেশিনের মাধ্যমে প্রথম ধাপের প্রক্রিয়া শেষ করে থাকে ট্যানারি। যেটুকু পারা যায় না, তা লবণ মিশিয়েও সংরক্ষণ করা হয়।
এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি জানিয়ে সাভারের ট্যানারি পল্লীর সালমা ট্যানারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাখাওয়াত উল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখন তো ঢাকার বাইরের চামড়া আসার সময় হয়ে গেছে। সেই চামড়া ড্রামে তোলা হবে। এরপর আমাদের লবণ মেশানো চামড়া প্রসেস করব।”
তিনি বলেন, “ঈদের এই মৌসুমে আমাদের স্থায়ী শ্রমিকের সঙ্গে অতিরিক্ত শ্রমিক লাগে। ঈদের রাত থেকেই তাদের কাজে লাগানো হচ্ছে। আগামী তিন মাস তারা চুক্তিতে কাজ করবেন।”
সাভারের ট্যানারি পল্লীতে থাকা ক্রিসেন্ট, প্যারাগন, এপেক্সসহ প্রায় সব ট্যানারি কাঁচা চামড়ায় লবণ মিশিয়ে রেখেছে বলে জানিয়েছেন ট্যানারি শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “দিনে-রাইতে কাজ চলতাছে, বিরাম নাই। ওভারটাইম চলব দুই মাস। ঈদের দিন রাত থেকেই সব লেবার কাজে আছে। চুক্তিতেও লেবার খাটছে ট্যানারিতে।”
চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা শুরু হওয়ায় চামড়ার বর্জ্য গিয়ে ড্রেন আটকে যাচ্ছে মাঝে মধ্যেই। পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা দেখামাত্র আবর্জনা সরিয়ে ফেলছেন বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম।
বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহে এখন কোনো সমস্যা হচ্ছে না জানিয়ে আগামী তিন মাস তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার দাবি জানিয়েছেন গুলশান ট্যানারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির উদ্দিন।
তিনি বলেন, “চামড়ার মান ঠিক রাখতে হলে বিদ্যুৎ লাগবেই। কিছু সময় লোড শেডিং বেশি সময় থাকলে সমস্যা হয়ে যায়। আগামী তিন মাস ২৪ ঘণ্টাই মেশিন চলবে ট্যানারিতে। তাই অন্তত এখনকার মত বিদ্যুৎ থাকলে সমস্যা হবে না।”
সক্ষমতা বাড়ছে ট্যানারি খাতের
ঈদ মৌসুমে কাঁচা চামড়া খাতের ব্যবসায়ীদের ঋণ দিতে আগে প্রতিবারই ব্যাংকগুলোকে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দিত বাংলাদেশ ব্যাংক। গত বছর থেকে সেই কাজটি আর করছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তবে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বাণিজ্যিক ব্যাংক ঋণ দিতে চাইলে তা তদারকি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক, দিচ্ছে নীতি সুবিধা। এবারও ২ শতাংশ অর্থ পরিশোধ করতে পারলে চামড়া খাতের খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের সুবিধা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আওতায় এবার বিভিন্ন ব্যাংকের ১৭০ কোটি টাকার ঋণ পুনঃতফসিল করেছেন ব্যবসায়ীরা। এখান থেকে নতুন করে ৫০-৬০ কোটি টাকার ঋণ ব্যবসায়ীরা নিতে পারেন বলে জানিয়েছেন বিটিএ চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ। আগে অবশ্য সেই অংক ছিল ২৫৯ কোটি টাকা।
পোস্তা থেকে সাভারে ট্যানারি স্থানান্তরের সময় ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত লোকসানে পড়া ব্যবসায়ীদের ঋণ খেলাপি হয়ে আছে এখনো।
আগে ট্যানারি মালিকদের কাছে আড়তদারদের পাওনা বকেয়া থাকত বছরের পর বছর। ২০১৮ সালের পর থেকে বকেয়া আর থাকছে না বললেই চলে।
নিজস্ব অর্থায়ন বেশি হওয়ায় খাতটি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে মন্তব্য করে শাহীন আহমেদ বলেন, “লেনদেন আগের চেয়ে ক্লিয়ার হয়েছে। গতবারের পুরো টাকা ক্লিয়ার হয়ে গেছে সময় মত। তবে ২০১৮ সালের আগের পুরনো ঋণের কিছু অংশ এখনো বকেয়া রয়েছে।”
গত কয়েক বছর ধরে নতুন করে বকেয়া হয়নি জানিয়ে পোস্তার আনোয়ারুল ওহাব অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক তারিক ইবনে আনোয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা তো ব্যাংক ঋণ পাই না। নিজেরাই টাকা ম্যানেজ করে চামড়া কিনি। তাই বাকিতে আর বিক্রি করি না। যতটুকু পারি কিনি, বেশি কিনে ট্যানারি মালিকদের কাছে আর জিম্মি হই না। গত কয়েক বছর থেকে ট্যানারি মালিকরাও সব পেমেন্ট দিয়ে দিচ্ছে।”
বিদেশি মুদ্রা আয়ের দ্বিতীয় এ খাত থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে এসেছে ১২২ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের গত ১০ মাসে খাতটি থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৮৭ কোটি ২৪ লাখ ডলার।