দলীয় প্রভাবমুক্ত অন্তবর্তীকালীন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
Published : 12 Aug 2024, 05:11 PM
সরকার বদলের পর তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইর সভাপতির পদত্যাগের দাবি উঠেছে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি এস এম মান্নান কচির পদত্যাগ ও বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ বাতিল কর নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন সদস্যদের একাংশ।
সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি এস এম মান্নান কচি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
সোমবার দুপুরে হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘বিজিএমইএর সাধারণ সদস্যবৃন্দ’ ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে 'অনন্ত কোম্পানিজ'র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইনামুল হক খান (বাবলু) বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে কয়েক সপ্তাহ কারখানা পরিচালনা ব্যাহত হলে ৬ অগাস্ট সকাল থেকে কল কারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণা এলে বিজিএমইএ বিপরীত নোটিস দিয়ে কারখানা বন্ধ রাখতে বলে।
“ফলে মালিকরা বিভ্রান্ত হন। অনেকে কারখানা খুলে শ্রম অসন্তোষের মধ্যে পড়েন। এ অবস্থায় ৭ অগাস্ট বিজিএমইএতে উপস্থিত হলে বিজিএমইএর 'বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট' এস এম মান্নান কচিকে না পেয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট কে এম রফিকুল ইসলামের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।”
তখন মতবিনিময়ে সভাপতি ও বোর্ড সদস্যদের ব্যর্থতার জন্য পদত্যাগের দাবি জানালে তারা নীতিগতভাবে সম্মত হন দাবি করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “একপর্যায়ে অসংখ্য বহিরাগত বিজিএমইএ ভবনে দেখা গেলে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট সকলের অনুরোধে তাদেরকে সভাস্থল ত্যাগ করতে বললে তারা সভাস্থল ত্যাগ করেন ঠিকই, কিন্তু বিজিএমইএ ভবনেই থাকেন।
“এরপর কচির অনুগত পরিচালক রেজাউল মিরু, সাইফুদ্দিন সাগর ও রাজিব চৌধুরী পুনরায় বহিরাগতসহ সভাকক্ষে ঢুকে অরাজকতা সৃষ্টি করলে মিটিং অসমাপ্ত রেখে বোর্ড সদস্যরা বেরিয়ে যান।”
এ ঘটনায় বিজিএমইএর সহসভাপতি অবদুল্লাহ হিল রাকিব নেতৃত্ব দেন উল্লেখ করে ইনামুল হক বলেন, “উনি এখনও সদস্যদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। আর পুরো ঘটনা মিথ্যা ব্যাখ্যা দিয়ে বিজিএমইএ একটি মনগড়া প্রেসনোট দিয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ৯ মার্চ বিজিএমইএর নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে এস এম মান্নান কচি ও বর্তমান বোর্ড ক্ষমতায় আসে।
সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ছাত্র আন্দোলনের সময় সভাপতির নেতৃত্বে উত্তরা ও মিরপুরে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে। তিনি ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করেন এবং দুপুর ১টার দিকে কচি তার বক্তব্যে বলেন, ‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে দাঁড়াবে তাকে শেষ করে দিতে হবে’।
আন্দোলনে কয়েকশ ছাত্র-জনতা নিহত হওয়ার পরও বর্তমান বোর্ড কোনো শোকবার্তা না দেওয়ায় এবং সভাপতি এবং পর্ষদ বিপরীতমূখী ভূমিকা পালন করায় তারা দায়িত্ব পালনের নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে অবিলম্বে বিজিএমইএ সভাপতি ও পরিচালনা পর্ষদের পদত্যাগ, দলীয় প্রভাবমুক্ত অন্তবর্তীকালীন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়।
পাশাপাশি বিজিএমইএর দুর্নীতিবাজদের সুষ্ঠু বিচারেরও দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আসাদ বিন রনি বলেন, “ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন হয়েছে। ফ্যাসিবাদ সরকারের দোসরদের বহাল তবিয়তে রেখে দেশ সংস্কার সম্ভব না। তাই বিজিএমইএর যারা শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিল তাদের পদত্যাগ করত হবে।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন ওয়েগা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজবাহ আলী, নেক্সাস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রশিদ আল হোসাইনি।