২০১৬ সালের তুলনায় খাবারের পেছনে খরচসহ পরিবারের সামগ্রিক ব্যয় ২০২২ সালে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
Published : 20 Oct 2023, 07:18 PM
নিত্যপণ্যের দরে ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে বলে ব্যবসার পরিবেশ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
এতে বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দেশে শিল্পের কাঁচামালের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এতে জিনিসপত্রের দামও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।
ব্যবসা বিষয়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান লাইটক্যাসল পার্টনার্স-এর ‘দি লাইটক্যাসল বিজনেস কনফিডেন্স ইনডেক্স ২০২২-২০২৩ (বিসিআই)’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানি, শিল্প প্রতিষ্ঠান, করপোরেশন, স্থানীয়ভিত্তিক ব্যবসায়িক সংগঠন, স্টার্টআপ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পসহ ১৬৭টি ব্যবসায়িক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।
সম্প্রতি রাজধানীতে প্রতিবেদনটির পঞ্চম সংস্করণ প্রকাশ করা হয়। এত বলা হয়, “জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়ও বেড়েছে এবং এভাবে মাত্রাতিরিক্ত ব্যয় বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ জীবনযাপনের খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে।”
এতে বলা হয়, ২০২২ সালের অক্টোবরে খাদ্য মুল্যস্ফীতি ছিল ৮.৫০ শতাংশ। কিন্তু ২০২৩ সালের মার্চে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯.০৯ শতাংশ।
খানা আয়-ব্যয় জরিপ ২০২২-এর সূত্র উল্লেখ করে এতে বলা হয়, ২০১৬ সালের তুলনায় খাবারের পেছনে খরচসহ পরিবারের সামগ্রিক ব্যয় ২০২২ সালে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
সূচকে দেশের সামগ্রিক ব্যবসা বাণিজ্যে সূক্ষ্ম অবনতির ইঙ্গিত পাওয়া গেছে জানিয়ে এর কারণ হিসেবে ‘অনুযায়ী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ধীরগতি, ক্রমবর্ধমান ব্যয় ও ভোক্তার চাহিদা কমে যাওয়া’কে তুলে ধরা হয়েছে।
এই সময়ে পোশাক শিল্পে রপ্তানি আয় আগের চেয়ে বৃদ্ধিকে আশাব্যঞ্জক উল্লেখ করে জানানো হয়, বহুজাতিক কোম্পানির তুলনায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প তুলনামূলক ভালো করেছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বেসরকারি খাতে প্রভাব মোকাবিলায় বেশ কয়েকটি সুপারিশও তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে। এগুলো হচ্ছে: চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় ব্যবসায়িক আস্থা বাড়ানো, টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারের দৃঢ পদক্ষেপের পাশাপাশি প্রচারের কৌশল গ্রহণ, মুল্যস্ফীতি কমানো এবং শিল্পে কাঁচামালের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, “এই রিপোর্টে অর্থনীতির এমন কিছু সূচক উঠে এসেছে, যা দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পরিস্থিতিকে তুলে ধরে। দেশের নীতি নির্ধারক, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা এই ‘বিজনেস কনফিডেন্স ইনডেক্স’ থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনগুলোতে কাজে লাগাতে পারেন।”