কিছু বৈঠকে মুহাম্মদ ইউনূস নিজেও উপস্থিত থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
Published : 08 Apr 2025, 09:33 PM
চীনা ও কোরিয়ান উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত এগোতে এবং এ বিষয়ক উদ্বেগের সমাধানে তাদের সঙ্গে নিয়মিত প্রাতঃরাশ বৈঠক আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
তাদের সঙ্গে প্রতি মাসের ১০ তারিখে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান প্রাতঃরাশ বৈঠক আয়োজন করবেন। এতে বিনিয়োগকারীদের মতামত ও সমস্যাগুলো সরাসরি শোনার জন্য এ পদক্ষেপ বলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
কিছু বৈঠকে মুহাম্মদ ইউনূস নিজেও উপস্থিত থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
মঙ্গলবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় চীনা বিনিয়োগকারীদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে প্রাতঃরাশ ব্ঠৈক আয়োজনের এ ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিনিধি দলটি ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫’ এ অংশ নিতে ঢাকায় এসেছে।
মুহাম্মদ ইউনূস বিনিয়োগকারীদের বলেন, বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে বিনিয়োগ আকর্ষণে বাণিজ্য ও শ্রম বিষয়ক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। চীনা ও দক্ষিণ কোরিয়ান উৎপাদকদের জন্য আরও অনেক সুযোগ সুবিধা তৈরি করা হচ্ছে।
“গত আট মাসে আমরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ সহজ করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। এখন দেশে বিদেশি বিনিয়োগের এমন অনুকূল পরিবেশ আগে কখনও ছিল না।”
প্রতিনিধি দলকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ বা মতামত জানাতে একটি হটলাইন ও কল সেন্টার চালু করা হবে।
“যেকোনো বিনিয়োগকারী নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করে তাদের অভিযোগ জানাতে পারবেন এবং আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
বৈঠকে অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, পরিবহন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, টেক্সটাইল, টেলিকম, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, লজিস্টিকস ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতসহ অন্তত ৩০ জন চীনা বিনিয়োগকারী অংশ নেন।
প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কোম্পানি মেইনল্যান্ড হেডগিয়ার লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট পলিন এনগান।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা চীন সফরের প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশে বিনিয়োগে চীনা কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
“তার এই সদয়তায় আমি অভিভূত।”
চীনা কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তারা চট্টগ্রামে চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং মোংলায় পরিকল্পিত চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তারা সেখানে একটি সমুদ্রবন্দর আধুনিকীকরণেও আগ্রহ দেখান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে একটি প্রস্তুত বাজার রয়েছে, যার মাধ্যমে নেপাল ও ভুটানের মত প্রতিবেশী দেশগুলোতেও পণ্য রপ্তানি সম্ভব।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি উৎপাদন ও পরিচালনা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগে কয়েকটি কোম্পানি এরইমধ্যে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি চীনা কোম্পানি ইলেকট্রিক যানবাহন, লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি, বায়ু টারবাইন ও অফশোর ফটোভোলটাইক সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করতে চায়।
এর আগে সকালে দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগকারীরাও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে বিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন ও এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।