রপ্তানি ও উৎপাদন খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য আমদানি পরবর্তী অর্থায়নে স্থানীয় মুদ্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ তহবিল থেকে শর্ত সাপেক্ষে ৫ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন উদ্যোক্তারা।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রিন ট্রান্সফর্মেশন ফান্ড (জিটিএফ) নামের নতুন এ তহবিল গঠনের খবর দিয়ে সার্কুলারে বলেছে, এ পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের মেয়াদ র্নিধারণ করা হয়েছে ৫ থেকে ১০ বছর।
সম্পূর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থায়নে গঠিত এ তহবিল থেকে মূলধনী যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশের আমদানি মূল্য পরিশোধ পরবর্তী ব্যাংকের অর্থায়নের বিপরীতে দেশি মুদ্রায় এ অর্থায়ন করা হবে।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো এ সার্কুলারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, “সবুজ অর্থনীতি প্রতিষ্ঠাকল্পে রপ্তানি ও উৎপাদনমুখী শিল্প খাতের টেকসই প্রবৃদ্ধি তরান্বিত করার জন্য স্থানীয় মুদ্রায় জিটিএফ গঠন করা হয়েছে।”
বর্তমানে রপ্তানিকারকদের বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নেওয়ার সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) রয়েছে। এটির আকার সাত বিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে এ তহবিল গঠন করা হয়েছে।
রপ্তানি পণ্যের আয় দেশে আসলে তা থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণটি পরিশোধ করার সুযোগ রয়েছে রপ্তানিকারকদের। রপ্তানি আয় আসার পরে ব্যাংকই প্রথমে ইডিএফ ঋণের অর্থ কেটে নিয়ে অবশিষ্ট পরিমাণ টাকায় স্থানান্তর করে গ্রাহককে বুঝিয়ে দিয়ে থাকে।
এ তহবিল থেকে ঋণ দিতে ২ শতাংশ হারে উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে সুদ নেয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। এই ২ শতাংশ সুদের মধ্যে ১ শতাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পরিশোধ করে ব্যাংকগুলো।
শুধু রপ্তানি খাতের উদ্যোক্তারা ইডিএফ থেকে ঋণ নিতে পারেন। এখন এটির আদলে স্থানীয় মুদ্রা টাকায় জিটিএফ নামের পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করা হল। এ থেকে উৎপাদনশীল খাতের উদ্যোক্তারাও অর্থ নিতে পারবেন আমদানি পরবর্তী অর্থায়নের জন্য।
এ তহবিল থেকে অর্থ পেতে ইডিএফের মত শর্তারোপ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে এ তহবিল কোন কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে তা বলে দেওয়া হয়েছে।
>> পানি ব্যবহারের দক্ষতা সম্পর্কিত কাজে
>> পানি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা
>> বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
>> সম্পদ ব্যবহারে দক্ষতা ও পুনঃব্যবহার
>> নবায়নযোগ্য শক্তি
>> শক্তি দক্ষতা
>> তাপ ও তাপমাত্রা ব্যবস্থাপনা
>> বায়ু চলাচল ও প্রবাহ দক্ষতা
>> কর্ম পরিবেশ উন্নয়ন উদ্যোগ ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্দেশিত খাতের জন্য ব্যবহার করতে হবে।
এ তহবিল থেকে অর্থ পেতে ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো ১ শতাংশ সুদে অর্থ সংগ্রহ করে উদ্যোক্তাদের সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ সুদে ঋণ দিতে পারবে।
ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর জন্যও এ তহবিল থেকে অর্থ নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
তহবিল পাওয়ার শর্তে বলা হয়েছে, পর পর দুটি রপ্তানি আয় সম্পূর্ণ বা আংশিক অপ্রত্যাবসিত থাকলে এ তহবিল সুবিধা পাওয়া যাবে না।
ঋণ খেলাপী গ্রাহক এ তহবিল থেকে অর্থ সুবিধা নিতে পারবে না।
রাষ্ট্রায়ত্ব সব ব্যাংক এ তহবিল থেকে অর্থ নিতে পারবে। অপরদিকে বেসরকারি ও বিদেশি খাতের ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশের কম হতে হবে এ ঋণ পেতে।