ইডিএফ ঋণ সময়মত পরিশোধ না হলে বাড়তি সুদ

এই তহবিল থেকেেঋণে সুদহার হবে সাড়ে ৪ শতাংশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 April 2023, 04:13 PM
Updated : 13 April 2023, 04:13 PM

রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত দিতে সময় চাইলে বর্ধিত সময়ের জন্য সুদ দিতে হবে নতুন সুদহার অনুযায়ী।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। এক সপ্তাহে ইডিএফ ঋণের বিষয়ে এ নিয়ে দুটি সিদ্ধান্ত জানাল আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

গত রোববার সকল বাণিজ্যক সংগঠনের সদস্য উদ্যোক্তদের ইডিএফ ঋণসীমা ৫০ লাখ ডলার করে কমিয়ে নতুন সীমা নির্ধারণ করা হয়; যেখানে সর্বোচ্চ সীমা আড়াই কোটি থেকে নামিয়ে ২ কোটি ডলার করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ইডিএফ তহবিল থেকে রপ্তানি খাতের উদ্যোক্তারা বিভিন্ন সীমায় অপেক্ষাকৃত কম সুদে ঋণ নিতে পারেন কাঁচামাল আমদানিতে। ঋণ বিতরণের পর থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে অর্থ ফেরত দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

লাইবর (যুক্তরাজ্যে আন্তঃব্যাংক সুদহার) রেট এর সঙ্গে সমন্বয় করে এর সুদহার নির্ণয় করা হত; যেখানে সুদহার ২ থেকে আড়াই শতাংশ পর্যন্ত দিতে হয় উদ্যোক্তাদের।

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ১৮০ দিনের পর কোনো ব্যবসায়ী ইডিএফ ঋণ পরিশোধে আরও সময় চাইলে বিদ্যমান সুদ হার অর্থাৎ সাড়ে চার শতাংশ সুদ দিতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে ঋণ পরিশোধে সর্বোচ্চ ২৭০ দিন সময় নিতে পারেন উদ্যোক্তারা।

ইডিএফ ঋণ নিরুৎসাহিত করতে দফায় দফায় বাড়িয়ে সর্বশেষ গত জানুয়ারি মাসে ঋণের সুদহার সাড়ে ৪ শতাংশে উন্নীত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া অনদায়ী অর্থের উপর অতিরিক্ত ৪ শতাংশ দণ্ড সুদও আরোপ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র ও সংশ্লিষ্ঠ বিভাগের পরিচালক সারোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকমকে বলেন, “পূর্বের সুদহারে নেওয়া ইডিএফ এর তহবিলের ঋণ পরিশোধে ১৭০ দিন পার হওয়ার পর পুনরায় মেয়াদ বাড়াতে চাইলে বিদ্যমান সুদহার অনুযায়ী সাড়ে ৪ শতাংশ সুদ দিতে হবে।”

১৯৮৯ সালে ৩৮ লাখ ৭২ হাজার ডলার নিয়ে গঠিত ইডিএফের আকার দিন দিন বেড়ে তা কিছু দিন আগে ৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়।

রপ্তানি খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য স্বল্প সুদ ও সহজ শর্তে অর্থায়ন করতে এই তহবিল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে করা হয়েছে। তবে এই তহবিলের অর্থও রিজার্ভে দেখিয়ে আসছে বাংলাদেশ, যা নিয়ে আপত্তি তুলেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ।

সংস্থাটি থেকে নেওয়া ঋণের শর্ত অনুযায়ী রিজার্ভ থেকে ইডিএফসহ সব ধরনের তহবিল বা দায় আলাদা করতে রাজি হয়েছে বাংলাশে। তারপর থেকে ইডিএফ এর আকার কমিয়ে আনতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমানে তা ৬ বিলিয়নের নিচে নেমেছে।

যদিও ইডিএফ তহবিলের আকার কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক।

আইএমএফের সঙ্গে ঋণ আলোচনার মধ্যেই ইডিএফের বিকল্প হিসেবে সেটির আদলে উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন করতে স্থানীয় মুদ্রা টাকায় দুটি বড় আকারের তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এর মধ্যে গত ১ জানুয়ারি গঠন করা হয় ১০ হাজার কোটি টাকার ‘রপ্তানি সহায়ক প্রাক অর্থায়ন তহিবল’ বা ইএফপিএফ। ৪ শতাংশ সুদে এ তহবিল থেকে সরাসরি ও প্রচ্ছন্ন রপ্তানি খাতের উদ্যোক্তারা ঋণ নেওয়ার সুযোগ থাকবে, যার মেয়াদ হবে ১৮০ দিন।

তবে যে রপ্তানির বিপরীতে ইডিএফ সুবিধা নেওয়া থাকবে তাতে ইএফপিএফ ঋণ সুবিধা নিতে পারবেন না কোনো গ্রাহক।