Published : 13 Jan 2018, 10:41 AM
আমরা ইতিমধ্যেই জেনে গেছি যে, ঢাকায় ফানুস ওড়ানোতেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ আগামীতে কেউ এগুলো উড়ালে তাকে জেলে যেতে হতে পারে! এই নিষেধাজ্ঞা এত তাড়াতাড়ি আসবে তা আমি ভাবতে পারিনি। তবে আমার ধারণায় ছিল এটা। পূর্বের পোস্টের কমেন্টে লিখেছিলামও।
গত ৩১ ডিসেম্বর'১৭ রাতে, অর্থাৎ এবারের থার্টি ফার্স্ট রাতে- যখন ঢাকার আকাশে হাজার হাজার ফানুস উড়তে দেখি, তখনই আমার মনে তিনটা চিন্তা খেলে গিয়েছিল-
১) এত ফানুস এলো কোথা থেকে, আর এগুলো বানালোইবা কারা?
২) যখন এগুলো মাটিতে নেমে আসবে তখন কী এগুলো থেকে আগুণ লাগতে পারে?
৩) আমাদের দেশে ফানুস মুলত ওড়ায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষেরা; তাও সেটা খুবই স্বল্প পরিসরে বিশেষ বিশেষ পূর্ণিমার রাতে, যেমন প্রবারনা পূর্ণিমা, মাঘী পূর্ণিমায়! সুতরাং, এটা কী আমাদের অনুভূতিপ্রবণ দেশ মেনে নিবে?
এগুলো নিয়ে চিন্তা করতেই করতেই আমি নিজের মনে নিজেই উত্তর তৈরী করে নিয়েছিলাম-
প্রথম প্রশ্নের উত্তরঃ সরকার নিরাপত্তার নামে মানুষকে যখন ঘরের মধ্যে আটকে ফেলেছে, এমনকি মানুষ যেন তাদের বাড়ির ছাদেও না ওঠে- তারও হুমকি দেয়; তখন মানুষ তার সহজাত প্রবণতা দিয়েই বিকল্প উপায় বের করে ফেলেছে। যার ফল হিসেবে আকাশে উড়ছে হাজার হাজার রঙিন ফানুস!
দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরঃ আমারও মনে হয়েছে এগুলো থেকে আগুণ লেগে যেতে পারে। তবে সেটার সম্ভবনা কম হওয়ারই কথা। যদিও আমি কখনোই বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম না, তবুও মনে মনে ভেবে বের করেছিলাম এই যে, এই ফানুসগুলো উড়ছে মুলতঃ আগুনে গরম হয়ে যাওয়া বাতাসের ধাক্কায়। অর্থাৎ জলন্ত কুপির আগুনে ফানুসের ভিতরের বাতাস গরম হয়ে উপরে উঠতে চাচ্ছে; কিন্তু তা আঁটকে যাচ্ছে এর চারদিক বন্ধ থাকায়। ফলে যতক্ষণ কুপি জলবে ততক্ষণ এগুলো নিচে নামবে না। অর্থাৎ আগুণ লাগার সম্ভবনা কম! যদি না সেটা ফেটে যায় এবং জলন্ত অবস্থায় নেমে আসে! ঠিক এই কারণেই পরদিন অর্থাৎ পহেলা জানুয়ারী'র সকাল থেকেই আমি তন্নতন্ন করে পত্রিকায় আগুণ লাগার খবর খুঁজেছি! কিন্তু এবিষয়ে কোন খবর পাইনি। অর্থাৎ এই ফানুস থেকে এখনও পর্যন্ত কোথাও আগুণ লাগেনি, অথবা লাগলেও সেটা আমার জানা নেই!
৩) তিন নম্বর প্রশ্নের উত্তর ছিল, হ্যাঁ, আমাদের অনুভূতির দেশ এটা মেনে নিবে না!
আমার বিশ্বাস, ফানুস ওড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা যত না আগুনের ভয়; তারচেয়ে বড় মোটিবেশন ছিল- এটা 'বৌদ্ধ কালচার'- এর মিথ!
পূর্বের লেখাঃ রঙিন ফানুসে উড়ে আসা নববর্ষ