শিক্ষায় বাজেটের ২৫ শতাংশ চায় গণস্বাক্ষরতা অভিযান

“সরকার স্কুলে মিড ডে মিল দেওয়া শুরু করতে সিরিয়াস চিন্তাভাবনা করছে,“ বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2023, 06:00 PM
Updated : 14 May 2023, 06:00 PM

দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে নতুন অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৪ দশমিক ৬ শতাংশ বা বাজেটের ২৫ শতাংশ বরাদ্দ চেয়েছেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী।

রোববার বিকালে গুলশানের একটি হোটেলে ‘শিক্ষা, জেন্ডার সমতা ও ন্যায্যতাভিত্তিক বাজেট: অংশীজনের প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এ দাবি তুলে ধরেন।

রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, “২০১০ সালে গঠিত শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটি দেশে জ্ঞানভিত্তিক এবং দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে শিক্ষা বাজেট ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে ২০২৬ সালের মধ্যে জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়ার সুপারিশ করেছিল।কিন্তু চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে সেই বরাদ্দ জিডিপির ২ শতাংশও ছুঁতে পারেনি।“

চলতি অর্থবছরের বাজেটে ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা জিডিপি‘র মাত্র ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, “দেশে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে কোনোভাবেই ন্যায্যতার কম বরাদ্দ যেন না দেওয়া হয়।

“প্রধানমন্ত্রী গৃহীত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট দেশে উন্নীত করতে হলে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই উন্নত কারিগরির পাশাপাশি ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া ভিত্তিক পড়াশোনা নিশ্চিত করতে হবে।“

পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, “আমার মনে হয়, আগামী অর্থবছরের বাজেটের বরাদ্দ ইতিমধ্যে চূড়ান্ত হয়ে গেছে। তাই এই সুপারিশ তারা রাখতে পারবে না। তাছাড়া কোনো সরকার এই রকম সুপারিশ থেকে প্রস্তাব আমলে নেয় না। আমি পাকিস্তান আমলেও দেখেছি।

“পাকিস্তান আমলে তৎকালীন সরকার বাজেটের আগে আমাদের বিভিন্ন দাবি শুনত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই করত না।”

অশীতিপর এই অর্থনীতিবিদ বলেন, “মান সম্পন্ন শিক্ষা দিয়ে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে পারলেই সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তোলা সম্ভব।“

জাপান ও কোরিয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপান দরিদ্র্য দেশ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শিক্ষায় তাদের ব্যয় সবচেয়ে বেশি এবং দক্ষ জনবল দিয়ে মাত্র ২০ বছরের মধ্যে দেশটি আবারও উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়।

“কোরিয়াও শিক্ষা খাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দিয়ে উন্নত শিক্ষা, উন্নত জাতি এবং উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।”

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, “টাকা বরাদ্দ দেওয়ার আগে দেখতে হয় টাকা কোথায় খরচ করছি।”

স্কুল ক্লাসে ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়ার গুরুত্ব স্বীকার করে তিনি বলেন, “জনশুমারিতে ব্যবহৃত প্রায় ৬ লাখ ল্যাপটপের মেরিট বেসিসে প্রায় ৩ লাখ ল্যাপটপ স্কুলে দিয়ে দিয়েছি।”

নতুন বাজেটে প্রতিবন্ধী ভাতা বাড়বে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “সরকার স্কুলে মিড ডে মিল দেওয়া শুরু করতে সিরিয়াস চিন্তাভাবনা করছে।“

সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আরমা দত্ত এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।