রমজান মাসে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারেও নিরূৎসাহিত করেছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
Published : 11 Mar 2024, 03:28 PM
রোজার মাসে রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং কাজ হিসেবে দেখেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান।
এ সময় রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চাওয়ার পাশাপাশি ওয়াসা, গ্যাস এবং বিদ্যুৎ বিভাগকে তাদের চলমান উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়া প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারও নিরূৎসাহিত করেছেন ঢাকার পুলিশ প্রধান।
রোজাকে সামনে রেখে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস তিতাস গ্যাস, ওয়াসা, ডিপিডিসি, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতি এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিভিন্ন প্রতিনিধিদের সঙ্গে সোমবার এক সমন্বয় সভায় বসেন হাবিবুর রহমান।
তিতাস গ্যাস, ডিপিডিসির কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা স্বাভাবিক রাখতে চলমান কাজ আপনারা বন্ধ রাখুন।”
রোজার মাসে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা যেন স্বাভাবিক থাকে সে ব্যাপারে বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। তবে পুলিশ কখনই রাতারাতি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নতি করতে পারবে না যদি কারো সহযোগিতা না থাকে।”
হাবিবুর রহমান বলেন, “রাজধানীর শপিং মল, বিপণী বিতানের সামনে কোনোভাবেই যেন রমজান মাসে গাড়ি পার্কিং করা না হয় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা প্রয়োজন। মার্কেটের সামনে গাড়ি পার্কিংয়ের একটা জটলা লেগে থাকে, এটাতে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিঘ্নিত হয়। এটা দূর করা প্রয়োজন।”
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয় এক প্রশ্নে পুলিশ কমিশনার জানান, কৃত্রিমভাবে কেউ দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর চেষ্টা করলে বা মজুতদারি করলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সহযোগিতা নিয়ে সেই জায়গায় পুলিশ কাজ করবে।
সমন্বয় সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) খ মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, এফবিসিসিআইর সহ সভাপতি মুনির হোসেন, দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বক্তব্য রাখেন।
পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, “রমজান মাসকে ঘিরে রাজধানীতে ট্রাফিক ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। সবাই ইফতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে করতে চান। এজন্য বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত যেন কোনোভাবেই যানজটের সৃষ্টি না হয়, সে দিকটায় গুরত্বের সঙ্গে নজর দেওয়া হবে।
“এক্ষেত্রে ট্রাফিক পুলিশ ছাড়াও ক্রাইম বিভাগের সদস্যরাও মাঠে থাকবেন।”
রমজান মাসে নানা পরিকল্পনার মধ্যে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়টিও মাথায় রাখা হয়েছে বলেও জানান পুলিশ কমিশনার।
ছিনতাই, চুরি রোধে নগদ টাকা বহনকারীদের পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, এ সময় অপরাধীরা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে। এজন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে।
“রমজানের শেষ দশ দিন ঈদের কেনাকাটার জন্য শপিং মল, বিপণী বিতান ঘিরে যেমন জটলা থাকে তেমনি বাস স্ট্যান্ড, ট্রেন স্টেশন, লঞ্চ ঘাট ঘিরেও থাকে ঘরমুখি মানুষের জটলা। আর এই অবস্থায় সকলের নিরাপত্তা বিধান করা পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না। এজন্য প্রয়োজন সকলের সহযোগিতা।”
তিনি শপিং মল, বিপণী বিতানগুলোতে পর্যাপ্ত নিরপত্তা রক্ষী নিয়োগ, সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
সমন্বয় সভায় অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টিও সমানে আসে।
সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কারো অবহেলায় আগুন লাগলে সেটার দায় তাকেই নিতে হবে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
এর আগে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বিপণী বিতানগুলোর সিঁড়িতে বা চলাচলের জায়গায় দোকান, স্থাপনা বা অন্য কোনো কিছু থাকলে, তা সরিয়ে দিতে পুলিশ কমিশনারের সহযোগিতা চান।