ডোবা পরিষ্কার করতে না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন: মেয়র আতিক

মেয়র আতিক বলছেন, সিটি করপোরেশন মশা নিধনে ওষুধ প্রয়োগের উদ্যোগ নিলেও বিমানবন্দরের আশেপাশে অপরিষ্কার ডোবার কারণে সেখানে কাজ করতে পারছেন না।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2022, 10:30 AM
Updated : 7 Dec 2022, 10:30 AM

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আশপাশে অপরিষ্কার ডোবানালার কারণে সেখানে মশা নিধনের ওষুধ ছিটাতে না পারার অভিযোগ তুলেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

ঢাকার কাওলা এলাকায় ১০ দিনব্যাপী মশা নিধন কর্মসূচির উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি বলেন, বিমানবন্দরের আশপাশের বড় ডোবাগুলোর মালিক সিভিল এভিয়েশন বা কোনো সংস্থা। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এসব ডোবানালা পরিষ্কার করে দিলে সিটি করপোরেশন সেখানে ওষুধ ছিটিয়ে দেবে। কিন্তু ডোবাগুলো কেউ পরিষ্কার করছে না।

ক্ষোভ জানিয়ে মেয়র বলেন, সিভিল এভিয়েশনসহ সংস্থাগুলো যদি এসব জায়গা রক্ষণাবেক্ষণ করতে না পারে তাহলে তা সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দিক।

“দায়িত্ব যদি নিতে না পারেন আমাদের ওপর ছেড়ে দেন। আমরা এখানে কোনো আবর্জনা, ময়লা রাখব না। কিন্তু মালিক যদি সিভিল এভিয়েশন, রাজউক, রেলওয়ে বা গণপূর্ত হয়, তাহলে এসব ডোবানালা পরিষ্কারের দায়িত্ব তাদেরই নিতে হবে।”

কাওলায় সিভিল এভিয়েশনের জায়গায় ‘মশার চাষ’ হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখান থেকে মশা উড়ে বিমানবন্দরে যাচ্ছে। খবরে বারবার দেখানো হচ্ছে মশার কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি।

“বিমানবন্দরের চারপাশের দায়িত্ব সিভিল এভিয়েশনের। যেখানে কচুরিপানা পরিষ্কার করা আছে সেখানে আমরা ওষুধ দিয়ে দেব। কিন্তু যেখানে কচুরিপানা দিয়ে ভর্তি সেখানে স্প্রে করব কীভাবে?”

যেখানে মশা জন্মানোর মত পরিবেশ পাওয়া যাবে, সেখানকার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করতে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান মেয়র।

গত ২০ নভেম্বর হাই কোর্ট শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকার মশা নিধনে সমন্বিত পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চায়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দেওয়া হয়।

একইসঙ্গে বিমানবন্দর এলাকায় মশা ও মশার লার্ভার ঘনত্ব নির্ণয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বেবিচককে ফের সমীক্ষা করে প্রতিবেদন দিতেও নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত।

ওই আদেশের পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় মশার ঘনত্ব নিয়ে কাজ করছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার এ কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বুধবার মেয়র আতিকুল ইসলামের সঙ্গে বিমানবন্দরের আশপাশের এলাকায়ও তিনিও যান।

কবিরুল বাশার বলেন, মশার উৎস চিহ্নিত করতে দশম দিনের মতো কাজ করছেন তারা। বিমানবন্দরের পাশের কাওলা, বাউনিয়া এলাকার ডোবাগুলোয় মশা জন্মাচ্ছে।

“এসব এলাকায় প্রচুর ডোবা রয়েছে। ডোবাগুলোয় মশা জন্মাচ্ছে, কিউলেক্স মশা দুই কিলোমিটার পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে। বিমানবন্দরের ভেতরেও মশার প্রজননস্থল আছে। সমন্বিত উদ্যোগ নিলে এসব এলাকা থেকে মশা নির্মূল করা যাবে।”

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমানসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।