বুধবার টোকিওতে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুই দেশের সরকারপ্রধানের উপস্থিতিতে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
Published : 26 Apr 2023, 07:45 PM
প্রতিরক্ষা, কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির অঙ্গীকারে আটটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ ও জাপান।
বাসস জানিয়েছে, বুধবার টোকিওতে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুই দেশের সরকারপ্রধানের উপস্থিতিতে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
তার আগে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুই দেশের প্রতিনিধিদলের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়।
প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ছাড়াও কৃষি, মেট্রোরেল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল আপগ্রেডেশন, শিপ রিসাইক্লিং, কাস্টমস, মেধাস্বত্ব, আইসিটি ও সাইবার সিকিউরিটিতে সহযোগিতার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে।
কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনীম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বাংলাদেশের পক্ষে এসব চুক্তি ও সমঝোতায় সই করেন।
শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পৌঁছালে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান ফুমিও কিশিদা। সেখানে লাল গালিচা সংবর্ধনা এবং গার্ড অব অনার দেওয়া হয় বাংলাদেশের সরকারপ্রধানকে।
কৃষি গবেষণা ও উন্নয়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সহযোগিতা বাড়াতে জাপানের কৃষি, বন ও মৎস্য বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি সহযোগিতা স্মারক (এমওসি) স্বাক্ষরিত হয়েছে।
শুল্ক আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা,শুল্ক সংক্রান্ত অপরাধ দমন, তদন্ত ও নিয়ন্ত্রণ এবং শুল্কায়ন পদ্ধতির সরজীকরণ ও সমন্বয়ের লক্ষ্যে সহযোগিতা বাড়াতে একটি চুক্তি সই হয়েছে জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে।
শিল্পোন্নয়নে বাংলাদেশ-জাপান অংশীদারত্ব এগিয়ে নিতে একটি ফ্রেমওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং জাপানের অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের মধ্যে। ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশের কাতারে মসৃণ উত্তরণ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্টাকে তরান্বিত করতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে বাংলাদেশের বাণিজ্য কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে যৌথভাবে বাংলাদেশের শিল্প কারখানার মানোন্নয়নের সম্ভাবনাগুলো অনুসন্ধান করাই হবে এই কাঠামোর লক্ষ্য।
প্রতিরক্ষা সংলাপ, সফর বিনিময়, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, কোর্স, সেমিনার, ওয়ার্কশপ, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত অন্যান্য কার্যক্রমে সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্য নিয়ে একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা স্মারকে সই করেছে বাংলাদেশ ও জাপান।
মেট্রো রেলের ক্ষেত্রে সহযোগিতা, মেট্রো রেল নীতি, আইন ও প্রবিধান তৈরি, অবকাঠামো প্রযুক্তি, রোলিং স্টক, নিরাপত্তা নীতি ও ব্যবস্থাপনা এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে জাপানের ভূমি, অবকাঠামো, পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
জাহাজ ভাঙা শিল্প খাতে সহযোগিতা বাড়াতে একটি স্মারকে সই করেছে জাপানের ভূমি, অবকাঠামো, পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয়। এর আওতায় বাংলাদেশ ২০২৩ সালের মধ্যে নিরাপদ ও পরিবেশসম্মত জাহাজভাঙা শিল্প গড়ে তুলতে হংকং ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে। আর জাপান একটি পরিশোধন, সংরক্ষণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা করতে এবং হংকং ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে সর্বাত্মক সহায়তা দেবে।
মেধাস্বত্ব চার্চার উন্নয়নে সহযোগিতা বাড়াতে একটি স্মারকে সই করেছে জাপান পেটেন্ট অফিস এবং বাংলাদেশের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক বিভাগ।
সাইবার নিরাপত্তা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা বাড়াতে একটি স্মারকে স্বাক্ষর করেছে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ।