তিনটি সমঝোতা স্মারক হল- কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং দুই দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে আর্থিক লেনদেন সহজীকরণ।
Published : 11 Feb 2024, 08:20 AM
ডলার সংকটের এই সময়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য লেনদেন রুপিতে নিষ্পত্তিসহ কৃষি ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে তিনটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে দুই দেশ।
শুক্রবার বিকালে নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে এসব এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়।
নরেন্দ্র মোদীর সরকারি বাসভবনে ওই দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর এক ব্রিফিংয়ে আলোচনার বিস্তারিত তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
তিনটি সমঝোতা স্মারক হল- কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং দুই দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে আর্থিক লেনদেন সহজীকরণ।
এর মধ্যে বাংলাদেশে এগ্রিকালচার রিসার্চ কাউন্সিল এবং ইনডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচার রিসার্চের স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় দুই দেশের মধ্যে কৃষি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ খাতে সহযোগিতা জোরদার করা হবে।
সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষরিত হয়েছে ২০২৩ থেকে ২০২৫ সময়ের জন্য। এর আওতায় শিল্প, সহিত্য, সাংস্কৃতি খাতে দুদেশের সহযোগিতা আরো জোরদার করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আর তৃতীয় সমঝোতা স্মারকটি হয়েছে ভারতের এনপিসিআই ইন্টারনশনাল পেমেন্টস লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে। এর ফলে দুই দেরশর মধ্যে লেনদেন সম্পাদন সহজতর হবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “ভারত থেকে আমরা অনেক কিছু কিনি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমরা আমাদের টাকা রুপির বিপরীতে আমরা ব্যবসা করব। তার ফলে আমাদের ওই ডলারের যে একটা ঝামেলা, সেইটা থেকে আমরা অনেকটা মুক্ত হব বলে আমরা আশা করি।”
নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে অতিথি হিসেবে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে শুক্রবার দুপুরে দিল্লি পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকালে তিনি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন জানান, তিস্তার মত ঝুলে থাকা বিষয়গুলো নিয়ে কর্মকর্তা পর্যায়ের আলোচনায় সমধান খোঁজার কথা বলেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। আর বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি।
তবে নিতপণ্য রপ্তানিতে ভারতের হঠাৎ নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশকে যে সমস্যায় পড়তে হয়, সে বিষয়টি আলোচনায় এসেছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “ভারত আমাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভারত থেকে আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ভারত সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
“ভারতের সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক পর্যায়ে কানেকটিভিটি, তথা রেল ও সড়ক যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে এবং আমাদের চলমান প্রচেষ্টা এবং কর্যক্রম বেগবান করতে উভয় প্রধানমন্ত্রী একমত হয়েছেন।”
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দ্রুত প্রত্যাবাসন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতর সহযোগিতা চেয়েছেন বলেও জানান মোমেন।
তিনি বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একান্ত বৈঠকও হয়। বাংলাদেশ ও ভারতের বিদ্যমান গভীর সম্পর্কের বিষয়ে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং সেই সম্পর্ক আরো এগিয়ে নিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে একমত হন।
“অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে দুই প্রধানমন্ত্রীর এই ফলপ্রসূ এবাং খোলামেলা আলোচনার ফলে উভয় পক্ষের মধে বিদ্যমান অনিসপন্ন বিষয়সমূহের সমাধান তরান্বিত হবে এবং উভয় দেশের জনগণ উপকৃত হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)