জ্বরের কারণ দেখিয়ে এদিন আদালতে আসেননি শাকিব খান।
Published : 05 Oct 2023, 04:09 PM
চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকির অভিযোগে প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সাক্ষ্যের দ্বিতীয় দিনেও আদালতে হাজির হননি চিত্রনায়ক শাকিব খান।
বৃহস্পতিবার ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দা হাফসা ঝুমার আদালতে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল।
তবে এদিন জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার কারণ দেখিয়ে আদালতে সাক্ষ্য দিতে হাজির হননি। আদালতে দেওয়া সময়ের আবেদনে আইনজীবীর মাধ্যমে এ কারণ উল্লেখ করেন তিনি।
আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১৫ জানুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী
দিন ধার্য করেন। এর আগের তারিখেও তিনি সাক্ষ্য দেননি।
শাকিব খানের আইনজীবী খায়রুল হাসান বিষয়টি আদালতপাড়ার সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ৫ জুলাই একই বিচারক আসামি রহমতের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ৯ অগাস্ট দিন দিন ধার্য করেন।
গত ২৩ মার্চ দুপুরে ঢাকা মহানগর হাকিম আরাফাতুল রাকিবের আদালতে শাকিব খান বাদী হয়ে রহমত উল্লাহর নামে মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আসামি রহমত উল্লাহকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।
মামলার আরজিতে বলা হয়, চার বছর আগে চিত্রনায়ক শাকিব খান বাংলা ছায়াছবি ‘অপারেশন অগ্নিপথ নামক ছবিতে অভিনয় করতে চুক্তিবদ্ধ হন। এ সিনেমায় নায়িকা হিসেবে শিবা আলী খানকে মনোনীত করা হয়।
এ ছবির শুটিংয়ের জন্য ২০১৬ সালের ৩০ অগাস্ট অস্ট্রেলিয়া যান শাকিব খান। শিবা আলী খান ভিসা জটিলতার জন্য শুটিং করতে অস্ট্রেলিয়া যেতে পারেননি। তার জায়গায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান রেনেসা সাবরিনের সঙ্গে শাকিবকে অভিনয় করার প্রস্তাব দেন রহমত উল্লাহ। তবে শাকিব তার ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে বিষয়টি নাকচ করে দেন।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, শুটিং শেষে শাকিবকে রিফ্রেশমেন্টের জন্য ক্লাবে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রেনেসা সাবরিনসহ আরও ২-৩ জন অপরিচিত লোক দেখতে পান শাকিব। মামলার আসামি রহমত উল্লাহসহ অন্যদের সঙ্গে একসঙ্গে ক্লাবে খাওয়া-দাওয়াসহ বিভিন্ন প্রকার পানীয় পান করেন।
এক পর্যায়ে শাকিব অসুস্থবোধ করেন। হোটেলে ফেরত আসার সময় রহমত উল্লাহ এবং অন্যদের খোঁজ করেন তিনি। তবে তাদের না পেয়ে রেনেসা সাবরিনের কাছে বিদায় নিয়ে গভীর রাতে হোটেলে ফিরতে চান শাকিব। তখন রেনেসা সাবরিন বলেন, ‘আপনি যেহেতু অসুস্থবোধ করছেন, তাহলে আমি আপনাকে হোটেল রুমে পৌঁছে দিয়ে আসি।’ শাকিব অনেকটা নিরুপায় হয়ে তার প্রস্তাবে রাজি হন এবং হোটেল রুমে যেতে ক্লাব থেকে বের হন। হোটেলে ফেরার সময় বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে অজ্ঞান হয়ে যান শাকিব।
অভিযোগে আরো বলা হয়, পরদিন সকালে রহমত উল্লাহ শাকিবকে ফোনে জানান যে, ‘তুমি রাতে ওই নারীর সঙ্গে কী করেছো সবকিছুর ভিডিও ক্লিপ আমার হাতে। তুমি যদি আমাকে এক লাখ ডলার চাঁদা না দাও তাহলে সব ভিডিও ক্লিপ এবং রেনেসা সাবরিনকে নিয়ে পুলিশের কাছে গিয়ে তোমার নামে অভিযোগ করব। তাহলে তুমি বাংলাদেশে যেতে পারবে না।’
এই রকম বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখানো হলে এক পর্যায়ে শাকিব ভয় পেয়ে যান এবং ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সমস্যার কথা চিন্তা করে আসামি রহমত উল্লাহকে ৫ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার প্রদান করেন। পরবর্তীতে আসামি রহমত উল্লাহ তাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে মোট ৪০ লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছেন।
এরপর আর চাঁদা দিতে না পারায় শাকিবকে জানানো হয় যে, তার নামে অস্ট্রেলিয়ায় অভিযোগ করা হয়েছে। চাঁদা দেওয়া বন্ধ করে দিলে আসামি রহমত উল্লাহ বিভিন্ন জায়গায় যেমন- ইলেকট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া, বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং শাকিবের পরিবারের সদস্যদের নিকট মিথ্যাচার ও কুৎসা রটাতে থাকেন। এরপর ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ রহমত উল্লাহ চিত্রনায়ক শাকিব খানের কাছে এক লাখ ডলার চাঁদা দাবি করেন ও
প্রাণনাশের হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করা হয়।