ঘানায় কৃষিকাজে আগ্রহ ঢাকার, কমনওয়েলথ মহাসচিব পদে ভোট চায় আক্রা

সেহেলী সাবরীন বলেন, “যদি ঘানা থেকে কৃষিজমি ইজারা দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে আমাদের দেশের মানুষ গিয়ে সেখানে বিনিয়োগ করতে পারবে এবং এটা কিন্তু খাদ্য নিরাপত্তার জন্য দুদেশের জন্যই লাভজনক হবে। সে সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে।”

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Feb 2024, 01:10 PM
Updated : 20 Feb 2024, 01:10 PM

ঘানার কৃষিখাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেন ঘানার পররাষ্ট্রমন্ত্রী শার্লি আয়োরকর বোচওয়ে। সেখানে হাছান মাহমুদ এই আগ্রহের কথা কথা জানান।

অন্যদিকে, বৈঠকে কমনওয়েলথের পরবর্তী মহাসচিব নির্বাচনে নিজ দেশের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়েছেন ঘানার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পরে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে আলোচনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন এবং আফ্রিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএফএম জাহিদ উল ইসলাম।

দ্বিপক্ষীয় সফরে সোমবার ঢাকায় পৌঁছেছেন কমনওয়েলথভুক্ত আফ্রিকার দেশ ঘানার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বোচওয়ে।

মঙ্গলবার সকালে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

চলতি বছরের ২১ অক্টোবর ওশেনিয়া অঞ্চলের দেশ সামোয়ায় শুরু হতে যাওয়া কমনওয়েলথ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন পরবর্তী মহাসচিব নির্বাচন করা হবে।

কমনওয়েলথ দেশের নেতারা মহাসচিব নির্বাচন করে থাকেন। চার বছর মেয়াদে এই পদে সর্বোচ্চ দুইবার থাকার সুযোগ রয়েছে। এবার আফ্রিকা অঞ্চল থেকে মহাসচিব নির্বাচনের সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে বর্তমানে ৫৬ সদস্য দেশের এই জোট।

২০১৫ সালে মাল্টায় অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে মহাসচিব নির্বাচিত হন ক্যারিবিয়ার দেশ ডমিনিকার প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কেসি।

ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জাহিদ বলেন, “ঘানা একটি কমনওয়লথভুক্ত রাষ্ট্র। এই অক্টোবরে সামোয়ায় কমনওয়েলথ নেতাদের সম্মেলন আছে, এই সম্মেলনে নতুন মহাসচিব নির্বাচিত হবেন। সে বিষয়ে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।”

এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত মহাসচিব নির্বাচনে ঘানার সঙ্গে প্রার্থিতা রয়েছে গাম্বিয়া, লেসোথোর। ৩১ মার্চ প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ডেডলাইন রয়েছে।

“তানজানিয়া প্রত্যাহার করে নিয়েছে, যতটুকু বলতে পারি। ৩১ মার্চের পর জানা যাবে, কারা কারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে, শুধু একটি দেশ থাকবে কিনা।”

কৃষির পাশাপাশি ঘানায় ওষুধ ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা জানান জাহিদ উল ইসলাম।

তিনি বলেন, “আমরা কী পণ্য ঘানাতে রপ্তানি করতে পারি, তার মধ্যে প্রথম হচ্ছে ওষুধ, পাটজাত পণ্য, এটাও আলোচনা করেছি।

“ঘানা বিশাল ভূখণ্ডের দেশ। আমরা পর্যালোচনা করব, কিছু এলাকা কনট্যাক্ট ফার্মিংয়ের জন্য উপযুক্ত কিনা এবং সেটার মাধ্যমে কনট্যাক্ট ফার্মিংয়ের সমঝোতায় যেতে পারি কিনা।”

মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বলেন, “যদি ঘানা থেকে কৃষিজমি ইজারা দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে আমাদের দেশের মানুষ গিয়ে সেখানে বিনিয়োগ করতে পারবে এবং এটা কিন্তু খাদ্য নিরাপত্তার জন্য দুদেশের জন্যই লাভজনক হবে। সে সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে।”

আফ্রিকার কোনো দেশের সঙ্গে বৈঠক ঘিরে চুক্তিভিত্তিক কৃষিকাজের বিষয় সবসময় বলে থাকে সরকার। কিন্তু দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি গত কয়েক বছরে দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আফ্রিকা অনুবিভাগের কর্মকর্তা জাহিদ উল ইসলাম বলেন, “একটা তথ্যানুসন্ধান মিশনের মাধ্যমে পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে এটা শুরু করেছি ২০১০ সালে। কিন্তু কোনো কারণে এটা এখন পর্যন্ত ভালোমত হয়নি। তবে, ক্ষুদ্র পরিসরে কিন্তু শুরু হয়েছে।”

গত মাসে কাম্পালায় জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) সম্মেলনের ফাঁকে উগান্ডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ২০ হাজার হেক্টর জমি পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি।

তিনি বলেন, “কাম্পালায় সাইডলাইনে যে বৈঠক হয়েছে, ওখানে উগান্ডাও আমাদেরকে ২০ হাজার হেক্টর যদি ইজারা দেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।

“আমরা এফবিসিসিআইয়ের সাথে বৈঠক করেছি, আফ্রিকাতে আমরা অনুসন্ধান করতে পারি, এফবিসিসিআইয়ের সমন্বয়ে আমরা সরকারি-বেসরকারি মিলে একটা দল সফর করব।”

আফ্রিকায় কৃষিকাজের নামে অর্থপাচার নিয়ে পত্রিকায় খবরের প্রসঙ্গ টেনে সেখানে মোট কত টাকা বিনিয়োগ হয়েছে, জানতে চাইলে জাহিদ বলেন, কত বিনিয়োগ হয়েছে এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। কিছুটা বিনিয়োগ হতে পারে। তবে, এটা দেশ থেকে গেছে, এমন বিষয় জানা নেই।