বাংলাদেশকে ‘এভিয়েশন হাব’ করতে রোডম্যাপ জরুরি: প্রধানমন্ত্রী

সরকার প্রধান বলেন, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং উন্নত করতে গত এক দশকে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সরকার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2023, 03:02 PM
Updated : 22 March 2023, 03:02 PM

ভৌগোলিক ও কৌশলগত সুবিধার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশকে বিমান যোগাযোগের আন্তর্জাতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে মহাপরিকল্পনা নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার ঢাকায় এভিয়েশন সামিটের প্রথম এভিয়েশনের উদ্বোধনী অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি একথা বলেন বলে বাসস জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের ভৌগোলিক ও কৌশলগত সুবিধাকে পুঁজি করে কীভাবে আমরা আমাদের দেশকে একটি বিমান চলাচল কেন্দ্রে পরিণত করতে পারি, সেজন্য আমাদের একটি রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে।”

যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সহযোগিতায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ঢাকার একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ এভিয়েশন সামিট-২০২৩’ আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের ভিডিও অনুষ্ঠানে দেখানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে আইসিএও’র সদস্যপদ পাওয়া মাত্রই আমাদের ভৌগোলিক অবস্থানের সুযোগ নিয়ে পূর্ব ও পশ্চিমকে সংযুক্ত করতে বাংলাদেশকে একটি ‘এভিয়েশন হাব’ এ পরিণত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পরপরই এই পদক্ষেপ স্থগিত করা হয়েছিল।

এই অঞ্চলে একটি বিমান চলাচল কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা রয়েছে জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, “আমরা একটি এভিয়েশন হাবের উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। গত এক দশকে, আমরা আমাদের বিমানবন্দর, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং উন্নত করার জন্য অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি।”

এ সময় যাত্রী ও মালামাল উভয়ের জন্যই একটি উন্নত ও টেকসই পরিবেশ তৈরির জন্য সরকারি সংস্থা, এয়ারলাইন্স ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সবাইকে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, “সরকার ই-ভিসা সিস্টেম চালু করতে যাচ্ছে- যা বাংলাদেশে ব্যবসা করতে ও পর্যটনে আসা যাত্রীদের সুবিধা দেবে ও ভিসা প্রক্রিয়া দ্রুত হবে।”

সম্ভাবনাময় বিমান শিল্পে দক্ষ লোকবল প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “আমাদের যুবকদের অবশ্যই পাইলট, বিমান প্রকৌশলী, মেকানিক, ক্রু ও আরও অন্যান্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ থাকতে হবে।”

এই সরকারের সময়ে প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটি সেই চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে বলেও মনে করেন তিনি।

এদিনের সামিটে সরকারের কাছে উড়োজাহাজ বিক্রিসহ আরও কয়েকটি প্রস্তাব নিয়ে এসেছে ফ্রান্সের উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি ‘এয়ারবাস’।

এ বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ডি-কার্বনেশন ও টেকসই এভিয়েশন জ্বালানি হল এমন বিষয়- যার জন্য বিনিয়োগ, বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ ও উন্নত বিমান চালনাকারী দেশগুলোর সমর্থন প্রয়োজন।

“আমাদের যাত্রায় আমাদের সমর্থন করার জন্য এয়ারবাসের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স প্রস্তাবিত বিমান চালনা অংশীদারত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”

দেশে আরও কয়েকটি প্রকল্প চলছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এইচএসআইএ সম্প্রসারণ প্রকল্পের (ফেজ-১) অধীনে নির্মিত শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কারণে অতিরিক্ত এক কোটি ২০ লাখ যাত্রী ও ৪০ লাখ টন কার্গো পরিচালনার ক্ষমতা তৈরি করবে।

আরও প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- হজরত আন্তর্জাতিক শাহজালাল বিমানবন্দর (এইচএসআইএ) সম্প্রসারণ প্রকল্প (পর্যায়-১), জেনারেল অ্যাভিয়েশন হ্যাঙ্গার নির্মাণ ও এর ফায়ার স্টেশনের উত্তর প্রান্তে হ্যাঙ্গার অ্যাপ্রন ও অ্যাপ্রন, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদ্যমান রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়ের জোরদারকরণ, কক্সবাজার বিমানবন্দরের উন্নয়ন (পর্যায়-১), সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদ্যমান রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়ের জোরদারকরণ ও এইচএসআইএ-তে জন নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সিভিল অ্যাভিয়েশন অথোরিটি অব বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি।