“আমরা খুশি হতাম, যদি সব দল নির্বাচনে অংশ নিয়ে এটার সার্বজনীনতা যদি আরও বিস্তৃত হত, নির্বাচনটা আরো বেশি অংশগ্রহণমূলক ও উৎসব মুখর হত। কিন্তু দুুভার্গ্যজনক, সেটা শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি।“
Published : 08 Jan 2024, 06:07 PM
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দিন অনিয়মের যেসব অভিযোগ এসেছে, সেগুলো পর্যালোচনা করে ‘খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তা থাকলে’ আমলে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সোমবার বিকালে নির্বাচনোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এসে ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল, ভোটের হার ও অভিযোগসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯ আসনে ভোট হয় রোববার। নওগাঁ-২ আসনের একজন প্রার্থীর মৃত্যুতে সেখানে পরে ভোট হবে।
বিএনপির বর্জনের মধ্যে কিছু আসনে গোলযোগের মধ্যে ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে তথ্য দেন সিইসি।
তিনি বলেন, “নির্বাচনটা সমাপ্ত হয়েছে। বিভিন্ন রকম ধারণা ছিল, পক্ষে বিপক্ষে ক্যাম্পেইন ছিল। একটি গুরুত্বপূর্ণ দল ও সমমনা দলগুলো নির্বাচন বর্জন করেছে, জনগণকেও উদ্বুদ্ধ করেছে ভোটাধিকার প্রয়োগ না করার জন্য। সেটি একটি বিবেচ্য বিষয় ছিল।
“আমরা খুশি হতাম, যদি সব দল নির্বাচনে অংশ নিয়ে এটার সার্বজনীনতা যদি আরও বিস্তৃত হত, নির্বাচনটা আরো বেশি অংশগ্রহণমূলক ও উৎসব মুখর হত। কিন্তু দুুভার্গ্যজনক, সেটা শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি “
নির্বাচন নিয়ে ভোটের দিন নানা অভিযোগ এসেছে ইসিতে। এসব অভিযোগ কতটুকু আমলে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, “রিটার্নিং অফিসার যে রেজাল্ট দেন, সেটিই চূড়ান্ত। এরপর ইসি যদি সঙ্গত মনে করে, তাহলে অনেক ক্ষেত্রে গুরুতর অভিযোগ থাকলে বিবেচনা করা হতে পারে।”
তিনি বলেন, কেউ যদি মনে করেন ভোট সঠিক হয়নি, ভোটে কারচুপি হয়েছে, ফলাফল প্রভাবিত হয়েছে, তাহলে সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগ ‘উন্মুক্ত থাকবে’। তারা গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে ‘নালিশ’ দায়ের করতে পারেন।
ইসিতে যেসব অভিযোগ জমা পড়েছে, সেসব নিয়ে কমিশনও শিগগিরই বসবে জানিয়ে সিইসি বলেন, “কী কী অভিযোগ এসেছে, তা নিয়ে কমিশন বসবে। যেগুলো খতিয়ে দেখার মত প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, সেগুলো দেখা হবে।”
কার কত আসন, ভোটের হার
রোববার রাত আড়াইটা পর্যন্ত ২০১১ আসনের সমন্বিত ফল ঘোষণার পর বাকি কাজ অসমাপ্ত রেখেই ফলাফল ঘোষণা কেন্দ্র ছাড়েন ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম। ২৯৮ আসনের ফল টাঙিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়ে সাংবাদিকদের সেখান থেকে তথ্য নিতে বলা হয়।
এরপর বিকালের সংবাদ সম্মেলনে সিইসি জানান, নির্বাচন কমিশন দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৯৮টির বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেছ। তাতে ভোটের হার ৪১.৮%।
এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ২২৩টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ এবং বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬১টি আসনে বিজয়ী হয়েছেন।
বিজয়ীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ছাড়াও জাসদ ও ওয়ার্কারস পার্টির দুই প্রার্থী নৌকা প্রতীকে জিতেছেন।
তবে পরে সাংবাদিকরা ওই সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুললে এক ঘণ্টা পর নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জনসংযোগ পরিচালক মো. শরিফুল আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হয়।
সেখানে বলা হয়, আওয়ামী লীগ ২২২টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি, জাসদ ১টি এবং বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ১টি করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে বিজয়ী হয়েছেন।
নির্বাচনোত্তর সংবাদ সম্মেল চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন।