“তার বিরুদ্ধে ঢাকায় এবং ঢাকার বাইরে মোট ৪১টি মামলা রয়েছে। সব মামলায় জামিন না পাওয়ায় এখনই তিনি কারামুক্ত হতে পারছেন না।
Published : 24 Apr 2024, 07:13 PM
রাজধানীর পল্টন ও মতিঝিল থানার তিন মামলায় হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত।
ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. মাহবুবুল হক বুধবার শুনানি শেষে জামিনের আদেশ দেন বলে মামুনুল হকের আইনজীবী আব্দুস সালাম হিমেল জানান।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালের মতিঝিল থানার এক মামলায় এবং ২০২১ সালের পল্টন থানার দুই মামলায় জামিন পেয়েছেন মামুনুল।
“তার বিরুদ্ধে ঢাকায় এবং ঢাকার বাইরে মোট ৪১টি মামলা রয়েছে। সব মামলায় জামিন না পাওয়ায় এখনই তিনি কারামুক্ত হতে পারছেন না।”
২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের বিরোধিতা করে কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রীক দলগুলোর সহিংসতার ঘটনায় আলোচিত ছিলেন মামুনুল।
সে সময় ঢাকায় বায়তুল মোকাররম, চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নারায়ণগঞ্জে হেফাজত কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এসব ঘটনায় প্রাণ হারান অন্তত ১৭ জন।
হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব থাকলেও সংগঠনে মামুনুলের প্রভাব ছিল ব্যাপক। সংগঠনের নীতি নির্ধারণে তার ভূমিকাও ছিল স্পষ্ট। একের পর এক ঘটনা শেষে ওই বছর ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে তিনি এক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন।
সঙ্গে থাকা নারী সঙ্গীকে নিজের স্ত্রী দাবি করার পর অনুসারীরা হামলা করে মামুনুলকে ছিনিয়ে নেয়। পরে সোনারগাঁয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় হেফাজত কর্মীরা।
এরপর অভিযান শুরু করে পুলিশ। ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের মামলাগুলো পুনরুজ্জীবিত হয়। ১৮ এপ্রিল ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার হন মামুনুল।
এছাড়া সহিংসতার ঘটনায় একাধিক মামলা করে পুলিশ। রিসোর্ট সঙ্গীনীও তার বিরুদ্ধে করেন ধর্ষণ মামলা। সেই সঙ্গে শাপলা চত্বরে সহিংসতার মামলাগুলোও সামনে আসে।
ওই বছরের জুনে হেফাজত থেকে রাজনৈতিক নেতাদের বাদ দেওয়া হয়। মামুনুলের পাশাপাশি পদ হারান তার ভাই মাহফুজুল হক।
তাদের বাবা শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক ১৯৯৯ সালে বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে গঠন করেন চারদলীয় জোট। সে সময় কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক দলগুলোর জোট ইসলামী ঐক্যজোটের নেতৃত্ব দিতেন তিনি। তবে তিনি চারদলীয় জোট ছেড়ে যান সবার আগে।
মামুনুলকে গ্রেপ্তারের পর কয়েক দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ সে সময় বলেছিল, মামুনুল হক কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের ‘উসকানি দিয়ে মাঠে নামিয়েছিলেন’, তার উদ্দেশ্য ছিল ‘সরকার উৎখাত করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল’ করা।
মামুনুল ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় জড়িত জঙ্গিদের ‘ঘনিষ্ঠ’ ছিলেন এবং তাদের একজনের সঙ্গে প্রায় দেড় মাস পাকিস্তানেও ছিলেন বলে সে সময় পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়।