আড়াই বছর আগে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে হওয়া এক সিটি নির্বাচনের এক ওয়ার্ডের ভোট দ্বিতীয় দফায় গণনা করার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন; যা দেশে মেশিনে ভোটগ্রহণের ইতিহাসে প্রথম পুনঃগণনা।
ইভিএমের ব্যবহার নিয়ে নানা আলোচনার মধ্যে গত এপ্রিলে নির্বাচনের কমিশনের (ইসি) এক সংলাপে ইভিএমে ভোট পুনঃগণনার সমস্যার কথাটি উঠে আসে।
তবে রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে ইসি সচিবালয় বলেছে, “ইভিএম এ ভোট গ্রহণ করা হলে তা পুনঃগণনাও করা যায়।”
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট হয়। কিন্তু উত্তর সিটির ৬ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের এক প্রার্থী ভোট পুনঃগণনার জন্য নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। পরে ট্রাইব্যুনাল ওই ওয়ার্ডের ভোট পুনঃগণনার আদেশ দেন।
ইসির যুগ্ম সচিব (পরিচালক জনসংযোগ) এস এম আসাদুজ্জামান বলেন, ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন ভোট পুনঃগণনার জন্য নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেন।
“এ কমিটি শনিবার সংশ্লিষ্ট সবার উপস্থিতিতে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ভোট পুনঃগণনা করে। এতে দ্বিতীয় দফায় ভোট গণনায় একই ফল পাওয়া যায়।”
ভোট পুনঃগণনার সময় সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসার, প্রার্থী, এজেন্ট এবং তাদের আইনজীবীরাও ছিলেন বলে জানান তিনি।
পুনঃগণনা কীভাবে
ইসির জনসংযোগ পরিচালক আসাদুজ্জামান বলেন, “ভোট পুনঃগণনার জন্য নির্বাচনী মালামালের সীলগালা বস্তা খোলা হয়। ইভিএম মেশিনে অডিটকার্ড প্রবেশ করিয়ে তা থেকে ফলাফল দেখা হয়। নির্বাচনের দিন ঘোষিত ফলাফলের সাথে মিলিয়ে দেখা হয়। অডিট কার্ডের ফলাফল এবং ঘোষিত ফলাফল একই পাওয়া যায়।
“ইভিএম এ ভোট গ্রহণ করা হলেও তা পুনঃগণনা করা যায়। এবারই প্রথম আদালতের আদেশে ইভিএমের ভোটের ফলাফল পুনঃগণনা করা হল।”
২০১০ সাল থেকে ইভিএমের ব্যবহার শুরু করে তৎকালীন এটিএম শামসুল হুদা কমিশন। স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার শুরু হয়। কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ কমিশনের সময় আগের ইভিএমের ব্যবহার কিছুটা হোঁচট খায়।
কে এম নূরুল হুদা কমিশন ফের ইভিএমের ব্যবহার শুরু করে এবং একাদশ সংসদ নির্বাচনে ছয়টি আসনেও প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট হয়।
এ ধারাবাহিকতায় কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন সংসদীয় উপনির্বাচন ও স্থানীয় সরকারের সবক্ষেত্রে ইভিএম ব্যবহার করে আসছে। আগামী সংসদ নির্বাচনেও সর্বোচ্চ দেড়শ আসনে ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে গত ২২ মার্চ বিশিষ্টজনদের সঙ্গে আলোচনায় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, “বিশিষ্টজনদের অনেকে জানিয়েছেন- ইভিএমে ভালো দিক রয়েছে, দ্রুত গণনা হয়ে যায়। কিন্তু পুনগণনার সমস্যা রয়েছে; ব্যালটে পুনঃগণনা করা যায়। কারিগরি কমিটির মিটিং করে আমাদের ইভিএম সম্পর্কে এটা ধারণা নিতে হবে। কেউ কেউ বলেছেন, সঠিক হলে তা চালিয়ে যেতে হবে।”
আরও খবর