আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, পাচারের শিকার ব্যক্তিকে উদ্ধার ও পুনর্বাসনের পাশাপাশি পাচারের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের আগে থেকে সচেতন করা গেল পাচার রোধ করা সম্ভব।
Published : 02 Aug 2023, 08:57 PM
মানবপাচার প্রতিরোধে সমন্বিতভাবে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বুধবার ঢাকার একটি হোটেলে ‘বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী’ দিবসের এক সংলাপে মন্ত্রী বলেন, পাচারের শিকার ব্যক্তিকে উদ্ধার ও পুনর্বাসনের পাশাপাশি পাচারের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের আগে থেকে সচেতন করা গেল পাচার রোধ করা সম্ভব।
পাচারের শিকার ব্যক্তিদের দুঃখ-কষ্টের কথা তুলে ধরতে পারলে তা মানুষের মধ্যে সচেতনা বাড়াতে কাজ করবে বলেও সংলাপে পরামর্শ আসে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ ও বাংলাদেশে জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক জাতীয় নেটওয়ার্কের কারিগরি জোট যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে। ইউএসএআইডি, কোয়কা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউএনওডিসি, আইওএম, ইউএনএইচসিআর, ব্র্যাকসহ কয়েকটি সংস্থার প্রতিনিধিত্ব রয়েছে এই জোটে।
‘পাচারের শিকার সকলের পাশে থাকব, বাদ যাবে না কেউ’ স্লোগানে এই সংলাপে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “প্রতিটি মানবপাচার ঘটনার তদন্ত ও বিচার করতে আমরা বদ্ধ পরিকর। এটি একটি গুরুতর অপরাধ। আমাদের উদ্ধার, প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন ছাড়াও আমাদের সমন্বিতভাবে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। যাতে পাচারের শিকার হতে পারেন এমন ব্যাক্তিরা আগে থেকেই সচেতন হতে পারেন।”
সংলাপে অংশ নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “মানবপাচারের ঝুঁকি ও গোড়ার কারণগুলোকে তুলে ধরতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তারপরও দেশের তরুণ-যুবকেররা মানবপাচারের শিকার হচ্ছেন। সে কারণে তাদের মাঝে সচেতনতা গড়ে তুলতে কাজ করতে হবে।”
বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস রোহিঙ্গারাসহ পাচারের শিকার সব ব্যক্তিকেই জাতীয় সুরক্ষা সেবার আওতায় আনার অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, “আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা তৈরি অব্যাহত রাখতে হবে। যাতে পাচারের শিকার ব্যক্তিদের চিহ্নিত এবং তদন্ত পরিচালনা করা যায়। এক সঙ্গে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার বিষয়টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।”
বাংলাদেশে জাতিসংঘ অভিবাসন বিষয়ক নেটওয়ার্কের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী ও আইওএম বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ফাতিমা নুসরাত গাজ্জালি বলেন, “সংকটের সময় পাচারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়, বিশেষ করে সবচেয়ে দুর্বল ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে। এটি আমরা ২০২০ সাল থেকে মহামারীর প্রেক্ষাপটে দেখেছি। পাচার মোকবেলায় আমাদের সচেতনতা কার্যক্রম দ্বিগুণ করতে হবে এবং পাচারের শিকার প্রত্যেকের জন্য সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে।”
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত আইজি মনিরুল ইসলাম বলেন, আধুনিক যুগের ‘দাসত্ব’ এই মানবপাচার প্রতিরোধে আমাদের সমন্বিতভাবে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এই সংলাপ সেই উদ্যোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পুলিশের একজন সদস্য হিসেবে আমি বলব, মানবপাচার প্রতিরোধে ‘প্রোঅ্যাকটিভ’ কার্যক্রম সহায়ক হবে।
এদিনের সংলাপে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী, ইউএনওডিসির দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক প্রতিনিধি মার্কো টেক্সেইরা, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মীর খায়রুল আলম, বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি উপস্থিত ছিলেন।