ইউনূসের ভাষায় এসব দেশবাসীর সামনে তাকে ‘হয়রানি’ করা এবং তার সামাজিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ‘ধ্বংস করার নীল-নকশা’ ছাড়া আর কিছু নয়।
Published : 15 Feb 2024, 01:46 PM
মিরপুরের চিড়িয়াখানা সড়কে ১৪ তলা টেলিকম ভবনে ‘গ্রামীণ পরিবারের’ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংক ‘জবর দখল’ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন নোবেলবিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলছেন, গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ওই ভবনে থাকা আটটি অফিস দখল করে তালা মেরে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে পুলিশের কাছে আইনি সহায়তা চেয়েও তারা পাননি।
সম্প্রতি গ্রামীণ ব্যাংকের তরফ থেকে গ্রামীণ টেলিকম ও গ্রামীণ কল্যাণের পরিচালক পদে কয়েকজনকে মনোনীত করার পাশাপাশি এ দুই কোম্পানির চেয়ারম্যান পদে ইউনূসের বদলে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম সাইফুল মজিদকে মনোনীত করা হয়।
ইউনূসের ভাষায়, এটা দেশবাসীর সামনে তাকে ‘হয়রানি’ করা এবং তার সামাজিক ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠানকে ‘ধ্বংস করার নীল-নকশা’ ছাড়া আর কিছু নয়।
শ্রম আইনের একটি মামলায় ইউনূসের সাজা এবং আরেক মামলায় তার বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগপত্র অনুমোদন নিয়ে আলোচনার মধ্যেই বৃহস্পতিবার সকালে টেলিকম ভবনের নিচতলায় সংবাদ সম্মেলনে আসেন ইউনূস, যিনি প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে দীর্ঘদিন গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি ছিলেন।
তিনি বলেন, "আমার ঘর জবর দখল হয়ে যাচ্ছে। আমরা পুলিশকে জানিয়েছিলাম, একটা জিডি করেছিলাম। জিডির কপি নিয়ে পুলিশ এসেছিল, কিন্তু কোনো সমাধান দেয়নি। আমরা অফিস করতে পারছি না।"
গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম এবং গ্রামীণ কল্যাণের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একে এম মঈনুদ্দিন চৌধুরী ছাড়াও আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অধিকারকর্মী রেহনুমা আহমেদ ও ফরিদা আখতার সংবাদ সম্মেলনের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
ইউনূসের অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর মোহাম্মদ এবং চেয়ারম্যান সাইফুল মজিদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা ধরেননি। ফোন ধরেননি ঢাকা মহানগর পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ কমিশনার জসিম উদ্দিন মোল্লা এবং শাহ আলী থানার ওসি মওদুদ হাওলাদারও।
ইউনূসের ব্রিফিংয়ের পর মিরপুর দুই নম্বরে গ্রামীণ ব্যাংক ভবনের সামনে গেলে নিরাপত্তা কর্মীরা সাংবাদিকদের ভেতরে ঢুকতে দেননি। নিরাপত্তা কর্মীরা জানিয়ে দেন, ভেতরে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান, এমডি বা কথা বলার মত অন্য কেউ নেই।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালেও কয়েকজন নারী ঝাড়ু হাতে টেলিকম ভবনের সামনে মিছিল করেন। তারা কেউ ইউনূসর কাছে টাকা পান বলে দাবি করেন, আবার কারো দাবি, মোবাইলের কল রেট অনেক বেশি এ কারণে তারা ঝাড়ু হাতে নেমেছেন।
সেই প্রসঙ্গ ধরে ইউনূস বলেন, “এভাবে দেশ চলছে কীভাবে। আমাদের বিরুদ্ধে ঝাড়ুমিছিল হচ্ছে। আমরা আদালতের শরণাপন্ন হব।”
ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের চেষ্টাকে ‘শান্তি স্থাপন’ বিবেচনা করে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংককে, যে প্রতিষ্ঠানটির সূচনা হয়েছিল ১৯৮৩ সালে একটি সামরিক অধ্যাদেশের মাধ্যমে।
ইউনূস ছিলেন সরকারের অর্থায়ন ও সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকে প্রতিষ্ঠাকালীন এমডি। পরে তিনি গ্রামীণ শব্দটি যুক্ত করে প্রায় দেড় ডজন প্রতিষ্ঠান খোলেন, যার অধিকাংশই এনজিও বা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধিত।
২০১১ সালে অবসরের বয়সসীমা পেরিয়ে যাওয়ায় তার পদে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই বছর মার্চে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন ইউনূসকে অব্যাহতি দেয়, তখন তার বয়স প্রায় ৭১।
ইউনূস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আদালতে যান এবং দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর আপিল বিভাগের আদেশে গ্রামীণ ব্যাংকের কর্তৃত্ব হারান।
এরপরও তাকে পদে রাখার জন্য গ্রামীণ ব্যাংক সরকারের অবস্থানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রচারণা শুরু করে। ইউনূসের বিষয়টি নিয়ে দেশে-বিদেশে সমালোচনায় পড়তে হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
ক্লিনটন পরিবারের সঙ্গে ইউনূসের বক্তিগত বন্ধুত্বের বিষয়টি সব মহলেরই জানা। গ্রামীণ ব্যাংকের পদ নিয়ে আইনি লড়াইয়ের মধ্যেই হিলারি ক্লিনটন এ ব্যাপারে সরকারকে চাপ দিয়েছিলেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল সেই সময়ে।
অন্যদিকে শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের অভিযোগ, পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন ঝুলে যাওয়ার পেছনেও ইউনূসের হাত রয়েছে। ওয়াশিংটনের প্রভাবশালী বন্ধুদের তিনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লাগিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ।
ইউনূস সব সময়ই এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
সম্প্রতি শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের চার কর্মকর্তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় শ্রম আদালত। এছাড়া গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আরেক মামলায় ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন করেছে দুদক।
সরকারের ‘ইচ্ছাতেই’ এসব হচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছেন ইউনূস।
১২ ফেব্রুয়ারি কী ঘটেছিল
টেলিকম ভবনের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে ইউনূসের লিখিত বক্তব্য সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সরবরাহ করা হয়।
সেখানে বলা হয়, মিরপুরের ওই ভবনে ইউনুস সেন্টার, গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণসহ ১৬টি গ্রামীণ সামাজিক ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়। ১২ ফেব্রুয়ারি অফিস ছুটির পর বিকাল পৌনে ৫টার দিকে ‘সাদা পোশাকধারী ৩৫ জন অপরিচিত ব্যক্তি’ জোর করে ভবনে প্রবেশ করেন।গ্রামীণ ব্যাংক থেকে এসেছেন জানিয়ে তারা গ্রামীণ কল্যাণ ও গ্রামীণ টেলিকমের অফিসে যেতে চান।
এরপর তারা উপস্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আইডি কার্ড পরীক্ষা করা শুরু করেন এবং অফিস ত্যাগ করতে ‘বাধা দেন’। তারা গ্রামীণ টেলিকম ও গ্রামীণ কল্যাণের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করে বলেন, ওই দুই প্রতিষ্ঠানে নতুন চেয়ারম্যান ও নতুন পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সেদিন রাত ৯টার পর গ্রামীণ ব্যাংকের একজন প্রতিনিধি সেই নিয়োগ আদেশ নিয়ে টেলিকম ভবনে আসেন এবং গ্রামীণ টেলিকম ও গ্রামীণ কল্যাণের অফিসে তালা লাগিয়ে দেন। সেসব আদেশে গ্রামীণ টেলিকমে তিনজন এবং গ্রামীণ কল্যাণে দুইজন পরিচালক মনোনীত করার কথা জানানো হয়। এছাড়া গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান একেএম সাইফুল মজিদ নিজেই নিজেকে ওই দুই প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসাবে মনোনীত করেন।
এতে আপত্তি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “গ্রামীণ ব্যাংকের সকল সদস্যদের ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যত কল্যাণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ টেলিকম ও গ্রামীণ কল্যাণসহ অন্য আরও কয়েকটি গ্রামীণ প্রতিষ্ঠানের আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিনিধিত্ব রাখার সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন যেন, গ্রামীণ ব্যাংক উক্ত দুইটি প্রতিষ্ঠানে পরিচালক পদে ২/৩ জন এবং চেয়ারম্যান মনোনীত করতে পারেন। এ কারণে গ্রামীণ ব্যাংক ১৯৯৫ সালে গ্রামীণ টেলিকম ও ১৯৯৬ সালে গ্রামীণ কল্যাণ প্রতিষ্ঠানের প্রথম চেয়ারম্যন হিসাবে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে মনোয়ন দেওয়াসহ সংরক্ষিত ২/৩ জন পরিচালক পদে মনোনয়ন দিয়েছিলেন।
“দীর্ঘ ২৭ বছর পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংক আর কখনো ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর জায়গায় চেয়ারম্যান পদে অন্য কাউকে কোনদিন মনোনয়ন না দিয়ে কেবলমাত্র পরিচালক পদে তাদের ২/৩ জন ডাইরেক্টরের মনোয়ন দিয়ে আসছে। অতঃপর ১৯৯৫ এবং ১৯৯৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংক চেয়ারম্যান পদে কোনো মনোনয়ন না দেওয়ার কারণে যথাক্রমে গ্রামীণ টেলিকম ও গ্রামীণ কল্যাণের চেয়ারম্যান পদে অদ্যাবধি পর্যন্ত উক্ত প্রতিষ্ঠানদ্বয়ের পরিচালনা পর্ষদের সরাসরি ভোটে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন অ-বেতনভুক্ত ও বিনা পারিশ্রমিকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে আসছেন।”
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘সময়ের পরিবর্তন ও নানাবিধ অভিজ্ঞতার আলোকে’ ২০০৯ সালে গ্রামীণ টেলিকম ও গ্রামীণ কল্যাণের পর্ষদ সভায় গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে চেয়ারম্যান ও পরিচালক মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি ‘সর্বসম্মতভাবে রেজুলেশন গ্রহণের পর’ আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশন থেকে বাদ দেওয়া হয়। সংশোধনের বিষয়টি রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে লিখিতভাবে জানানো হয়।
“কিন্তু হঠাৎ করে দীর্ঘ ২৭ বছর পর গ্রামীণ ব্যাংক কর্তৃক গ্রামীণ টেলিকম ও গ্রামীণ কল্যাণের ডাইরেক্টর পদে তাদের পক্ষ ২/৩ জনকে মনোনয়নসহ চেয়ারম্যান পদে বাইরের অন্য কোনো ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেশবাসীর নিকট হয়রানি করা ও বিশ্বব্যাপী তার গ্রহণযোগ্য সামাজিক ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার নীল-নকশা ও পাঁয়তারা ছাড়া আর কিছুই নয়।”
এই পুরো ঘটনাপ্রবাহের জন্য সরকারকে দায়ী করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “এ ব্যাপারে ড. ইউনূসের নিজ হাতে গড়া তার গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠানটিকেও তার সামাজিক ব্যবসার প্রতিষ্ঠানসমূহের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে সরকার বোঝাতে চায় যে ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক হচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংক, ড. ইউনুস নহে।
“এ ব্যপারে আইনের ব্যাখ্যা হচ্ছে যে, ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত সামাজিক ব্যবসার গ্রামীণ প্রতিষ্ঠানগুলো কোম্পানি আইন ১৯৯৪ এর অধীনে নিবন্ধিত প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। আর অপর দিকে গ্রামীণ ব্যাংকের সৃষ্টি হয়েছে রাষ্ট্রপতির অর্ডিন্যান্স বলে। তাই সরকারি আদেশ বলে তৈরিকৃত কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক কখনোই আইনগতভাবে কোনো প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি সৃষ্টি করা বা উহার মালিক হতে পারে না। কিন্তু সরকার এ বিষয়টি সম্পর্কে আইনের মিথ্যা ও অপব্যাখ্যা দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।”
ইউনূসের এ অভিযোগের বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো ভাষ্য এখনও আসেনি।
মামলা প্রসঙ্গ
সংবাদ সম্মেলনে সরবরাহ করা লিখিত বক্তব্যে মামলা নিয়েও ইউনূসের অবস্থান ব্যাখ্যা করে সরকারের দিতে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে।
সেখানে বলা হয়, “সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মাধ্যমে শ্রম আইনের ভুল ও অপব্যাখ্যার মাধ্যমে ড. ইউনূস ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে এই চক্রান্তের প্রথম সূচনা করা হয়েছে।”
ইউনূসের দাবি, শ্রম আইনের মামলায় ৩০৩(৩) ধারার অপরাধের বিষয়টি আরজিতে উল্লেখ না থাকার পরও তাদেরকে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ওই মামলায় ইউনূস আপিল করার পর হাই কোর্টে যায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। বিদেশে যাওয়ার আগে ইউনূস যেন শ্রম আপিল আদালতকে অবহিত করেন, সেই আদেশ চান অধিদপ্তরের আইনজীবী। হাই কোর্ট তা মঞ্জুরও করে।
সে প্রসঙ্গ ধরে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “সরকারের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিদেশ ভ্রমণের উপর বিধি নিষেধ আরোপের আদেশ হাসিলের মাধ্যমে তাহাকে আন্তর্জাতিক সভা-সেমিনারে অংশ গ্রহণ করা থেকে তাকে বিরত রাখার চেষ্টা চালানোর বিষয়টি আমাদের দেশের স্বার্থবিরোধী ও ন্যক্কারজনক ঘটনা বটে।”
আর গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশের টাকা আত্মসাতের মামলায় দুদকের অভিযোগপত্র অনুমোদনের প্রসঙ্গ ধরে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “নথি দৃষ্টে দেখা যায় যে দুর্নীতি দমন কমিশনের নিকট উক্ত বিষয়ে অভিযোগ দায়েরকারী হচ্ছে সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রনাধীন সংস্থা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। যার কাজ হচ্ছে শ্রমিকদের কল্যাণ দেখা-শোনা করা। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের নিকট মানি লন্ডারিং বিষয়ে অভিযোগ দায়েরের কোনো আইনগত কারণ উক্ত দপ্তরের ছিল না।”
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “সরকার ও উহার নিয়ন্ত্রনাধীন প্রতিষ্ঠানসমূহের উপরোক্ত কার্যাবলী দ্বারা ইহা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কখনোই এমন ধরনের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের করে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে দেশের জনগণ ও বিশ্ববাসীর নিকট অপমানিত ও হয়রানি করার সুযোগ পেত না।”