এর বাইরে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার দুজন আছেন।
Published : 23 Jul 2023, 07:55 PM
ঢাকার মালিবাগের গুলবাগে যুবলীগকর্মী অলিউল্লাহ রুবেল হত্যা মামলায় ডিবির হাতে গ্রেপ্তার হাবিব আহসান আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আর বাকি সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারদিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।
রোববার আট আসামিকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ।
আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা শাহ আলম জানান, আটজনের মধ্যে আসামি হাবিব আহসান স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই স্বপন মিয়া। পরে ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন ঢাকা মহানগর হাকিম মাহবুব আহমেদ।
আর বাকি সাত আসামিকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম সুলতান সোহাগ উদ্দিন তাদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডে নেওয়া আসামিরা হলেন- আলিফ হোসাইন (২১), রবিউল সানি (২১), মেহেদী হাসান (১৯), মো. শাহজালাল (৩৭), রফিকুল ইসলাম (৩৮), নুর আলম (৪২) ও সুমন মীর (২৮)।
গত শনিবার রাতে যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এর বাইরে আদনান আসিফ ও মো. শাকিল নামের আরও দুজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র্যাব।
শাহজাহানপুর থানা ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক রুবেল ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছিলেন।
গত ২১ জুলাই মধ্যরাতে রাজারবাগ এলাকা থেকে গুলবাগে বাসায় ফেরার পথে ৩৬ বছর বয়সী রুবেলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
ওই ঘটনায় তার স্ত্রী, মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী তানজিনা দেওয়ান শাহজাহানপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
রোববার সকালে কারওয়ান বাজারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রুবেল এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ এবং ডিমের পাইকারি ব্যবসা করতেন। ইদানিং তিনি পানির ব্যবসায় যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
“এলাকার আধিপত্য নিয়ে তার সঙ্গে শাহজালালের বিরোধ চলছিল। উচিত শিক্ষা দিতে যুবলীগ নেতা রুবেলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন শাহজালাল।”
এদিকে দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, “রুবেলের সঙ্গে স্থানীয় নিবিড় ও শাহজালালের আধিপত্য নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়। এর জেরে নিবিড় ও শাহজালাল দুজন মিলে রুবেলকে মারার জন্য হাবিবের সঙ্গে চুক্তি করে।
“হাবিবকে চাপাতি কেনার ৪ হাজার টাকা দেয় নিবিড়। সেই টাকায় খিলগাঁও বাজার থেকে দুটি চাপাতি কেনে হাবিব। ঘটনার আগের দিন শাহজালাল ও হাবিব দুজনে রুবেলকে মারার পরিকল্পনা করে।”
ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেন, ঘটনার দিন একজন মোটরসাইকেল নিয়ে রুবেলের গতিবিধি লক্ষ্য করতে থাকেন। হাবিব, আলিফ চাপাতি নিয়ে রুবেলের বাড়ির সামনে অবস্থান নেন। মেহেদী হাসান ও সানি দুই পাশে পাহারায় থাকেন।
“রুবেল রিকশায় বাসার দিকে রওয়ানা দিলে হাবিরের কাছে খবর চলে আসে। রুবেলকে রিকশায় দেখেতে পেয়ে হাবিব এবং আলিফ চাপাতি নিয়ে ধাওয়া দিলে রুবেল দৌড়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। হামলাকারীরাও পেছন পেছন দৌড়ে রুবেলকে চাপাতি দিয়ে কোপাতে থাকেন।
“রুবেলের মাটিতে পড়ে গেলে হাবিব ও আলিফ চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে ফেলে রেখে যায়। পালানোর সময় তারা চাপাতি ফেলে দিয়ে যায় রাস্তার পাশে। পরে হাসপাতালে মারা যান রুবেল।”