নতুন ড্যাপ (২০২২-২০৩৫) কার্যকরের গেজেট গত বছরের ২৪ অগাস্ট প্রকাশ করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
Published : 16 Jan 2024, 09:30 PM
এক বছর পার না হতেই আবারও সংশোধন করা হল পরিকল্পিত ঢাকা গড়তে প্রণয়ন করা বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ)। ভবনের উচ্চতা ও প্রশস্ততা বাড়ানোর সুযোগ যেমন রাখা হয়েছে, তেমনি সামনের রাস্তার প্রশস্ততার ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হয়েছে সংশোধিত এ দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায়। রোববার ড্যাপের কিছু ধারা সংশোধন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
সংশোধিত ড্যাপে ভূমির ব্যবহারসহ কয়েকটি বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতে সরকারি-বেসরকারি আবাসন, অপরিকল্পিত এলাকা, ব্লক-ভিত্তিক আবাসন, একত্রীভূত প্লটে ফ্লোর এরিয়া রেশিও (ফার) সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। ড্যাপ সংশোধনের ফলে ভবনের প্রশস্ততা ও উচ্চতা বাড়ানোরও সুযোগও বাড়ছে। এতে ভবন নির্মাণে সামনের সড়কের প্রশস্ততার ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০২২ সালের ২৪ অগাস্ট নতুন ড্যাপ (২০২২-২০৩৫) কার্যকরের গেজেট প্রকাশ করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। গেজেট প্রকাশের পর থেকেই এটির কিছু বিষয় সংশোধন করার জন্য আবাসন কোম্পানিগুলো সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিল।
গৃহায়ন ও গণপুর্ত মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তারিক হাসানের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর এলাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (২০২২-২০৩৫) অন্যান্য বিধানে যাই থাকুক না কেন ২২ জুন, ২০১০ জারিকৃত প্রজ্ঞাপন মূলে রাজউক এখতিয়ারধীন ১৫২৮ বর্গকিলোমিটার (৫৯০ বর্গমাইল) এলাকার যে সব ভূমি ব্যবহার আরবান রেসিডেনসিয়াল জোন/ আবাসিক এলাকা হিসেবে রূপান্তর করা হয়েছে তা অপরিবর্তিত থাকবে।
সংশোধনীতে বলা হয়েছে, বাড্ডা, ডেমরা, খিলক্ষেত, উত্তরখান, দক্ষিণখান, রায়েরবাজার, সাভার, কেরানীগঞ্জসহ অন্যান্য এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে ও অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা জমির সামনে কমপক্ষে ৩ দশমিক ৬৬ মিটার বা ১২ ফুট প্রশস্ত রাস্তা রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে এলাকাভিত্তিক ফার ২.০০ প্রযোজ্য হবে। আগের ড্যাপে এসব এলাকায় প্লটের সামনের সড়ক ৪ দশমিক ৮ মিটার বা ১৬ ফুট হলে ফারের মান ২ ধরা হতো।
নগর পরিকল্পনাবিদ আকতার মাহমুদ রোববার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মূল পরিবর্তন এসেছে ফার এরিয়া রেশিওর মান বাড়ানোর ক্ষেত্রে অর্থাৎ ভবনের উচ্চতা কত হবে, ভবন মালিকরা কতটুকু ফ্লোর স্পেস পাবে। নতুন ড্যাপে চেষ্টা করা হয়েছিল সরু রাস্তার পাশের ভবনগুলোর ফ্লোর স্পেস কমানোর।
“কারণ ফ্লোর স্পেস বাড়লেই মানুষ বেশি হবে। মানুষ বেশি হলে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খেলার জন্য খোলা জায়গা দেওয়া যাবে না। ঢাকা এখনই বসবাসের অযোগ্য শহর। নতুন ড্যাপে ভবন, আবাসিক এলাকা তৈরিতে বিধিনিষেধ এনে কিছুটা রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছিল। এই সংশোধনের কারণে শহরটা বসবাসের আরও অযোগ্য হবে।”
তার ভাষ্য, “শুরু থেকেই চেষ্টা করছিল নতুন ড্যাপে আনা এসব বিষয় সংশোধন করতে। তারা তাদের নিজের ব্যবসা দেখেছে, সংশোধন হওয়ায় যারা ড্যাপকে শুরু থেকে নানাভাবে পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছে তারা লাভবান হবে।”
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)