“গত বছরের মধ্য-সেপ্টেম্বরে উৎস অনুযায়ী ডলারের একেক রকম দাম নির্ধারণ করা হয়। রপ্তানি আয়, রেমিটেন্সে আলাদা দর, বাংলাদেশ ব্যাংকের দর আবার আলাদা,” বলেন তিনি।
Published : 16 Jan 2024, 09:58 PM
সংকটের মধ্যে দাম নির্ধারণের যেসব নীতিগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করেছে বলে মত দিয়েছেন অর্থনীতি বিশ্লেষক জাহিদ হোসেন।
রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ইনসাইড আউট আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক এই প্রধান অর্থনীতিবিদ বলেন, “২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে ডলার সংকটের ক্ষেত্রে আমরা যেসব নীতিগত পদক্ষেপ দেখেছি, আমি বলব এটা ছিল ভুল দিকের পদক্ষেপ, যা সংকটকে আরও গভীর করেছে।”
আধা ঘণ্টার এই আলোচনা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেইসবুক পেইজে সম্প্রচার করা হয়।
আলোচনায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ, ডলার সংকট, মূল্যস্ফীতির সমস্যাসহ নানা প্রশ্নের জবাব দেন এই অর্থনীতিবিদ।
দেড় বছর ধরে ডলার সংকটের কারণ নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি গত বছরের মধ্য সেপ্টেম্বরে ডলারের উৎস অনুযায়ী একেক রকম দাম নির্ধারণের কথা তুলে ধরেন তিনি।
জাহিদ হোসেন বলেন, “গত বছরের মধ্য-সেপ্টেম্বরে উৎস অনুযায়ী ডলারের একেক রকম দাম নির্ধারণ করা হয়। রপ্তানি আয়, রেমিটেন্সে আলাদা দর, বাংলাদেশ ব্যাংকের দর আবার আলাদা।”
আমদানির ক্ষেত্রে ৫৬টি দর চালু হয়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “যত জন অনুমোদিত ডিলার ততটি দাম হয়ে যায়। এসব কিছু ডলার বাজারকে নষ্ট করে ফেলে।”
এরপর একাধিক দামের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে আনা এবং সর্বশেষ একাধিক দর উঠিয়ে দেওয়ার কথা তুলে ধরে জাহিদ হোসেন বলেন, “এখন দামের ক্ষেত্রে কয়েকটি সর্বোচ্চ সীমা রয়েছে, সেটিও আনুষ্ঠানিক পথে সরবরাহকে বাধাগ্রস্ত করছে।”
লেনদেনে ভারসাম্য বর্তমানে ভালো অবস্থায় থাকলেও স্বল্পমেয়াদী ঋণ আসার পরিমাণ কমে যাওয়াসহ কয়েকটি কারণে ডলারের বাজার স্বাভাবিক হচ্ছে না বলে মনে করছেন এই অর্থনীতি বিশ্লেষক।
তিনি বলেন, “স্বল্পমেয়াদী ঋণ আসার পরিমাণ কমে গেছে, কিন্তু ঋণ পরিশোধের ধারা চালু থাকায় চাপটা বাড়ছে। ট্রেড ক্রেডিট ও বায়ার ক্রেডিটের ক্ষেত্রে ফারাকটা আগের চেয়ে বড় হওয়ায় এবং অজ্ঞাতে ডলার বাইরে যাওয়ার পরিমাণ বাড়ায় ডলার সংকট থেকে গেছে।”
মানি লন্ডারিং বন্ধে পদক্ষেপের বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “এরর অ্যান্ড ওমিশনের যে সাড়ে ৩ কোটি ডলার, তার বড় অংকই মানি লন্ডারিংয়ের কারণে। এই সংখ্যা কেবল নয়, এর বাইরে হুন্ডির মতো আরও কিছু দিক আছে, যেটা আনুষ্ঠানিক হিসাবনিকাশে আসে না।”
অনেক সময় মানি লন্ডারিং চিহ্নিত করা কঠিন হলেও পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা অনেক কথা শুনি, কিন্তু সেভাবে পদক্ষেপ দেখি না।”
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)