"আমি ভেবেছিলাম, মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে বোধ হয় চ্যালেঞ্জগুলোর অনেকটাই দূর হয়ে গেছে,” বলেন তিনি।
Published : 11 Apr 2023, 09:57 PM
শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়লেও এখনও নানা প্রতিবন্ধতা পোহাতে হয় বলে মনে করেন গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, "দেশে শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। এটি নিশ্চয়ই ভালো খবর। কিন্তু এখনও নানা চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে নানা হোঁচট খেতে হয় এখনও। তাই এ নিয়ে আরও অনেক কাজ করতে হবে।”
বেসরকারি সংস্থা গণসাক্ষরতা অভিযানের উদ্যোগে মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘মেয়েদের ক্ষমতায়নে শিক্ষা: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, “আমি ভেবেছিলাম, মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে বোধ হয় চ্যালেঞ্জগুলোর অনেকটাই দূর হয়ে গেছে। কিন্তু মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে এখনো নানা রকমের হোঁচট খেতে হচ্ছে।”
অনুষ্ঠানে এক সাংবাদিক বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২১ সালে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪৭ হাজারের বেশি মেয়ের বাল্যবিয়ে হয়।
এ বিষয়ে নিয়ে রাশেদা চৌধুরী বলেন, “মনে হচ্ছে যেন এসব মেয়ের কথা খাতা থেকে বাদই দেওয়া হয়েছে। এসব মেয়ের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার জন্য শর্তসাপেক্ষে উপবৃত্তি দিয়ে হলেও তাদের ফেরাতে হবে।”
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমেদ বলেন, “শিক্ষা নিয়ে অভিভাবকহীনতা চলছে। মাধ্যমিকে মেয়েরা এলেও তার অর্ধেক স্কুলজীবন শেষ করে না। করোনায় যে দুই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল, সেখানে যে ক্ষতি হয়েছে তা আগে পূরণ করতে হবে। ডিজিটালিও বৈষম্যের কারণে পিছিয়ে পড়ছে নারী শিক্ষার্থীরা। প্রাথমিক স্কুল থেকে এই বৈষম্য শুরু হয়েছে। যা স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়েও আরও প্রকট হচ্ছে।”
দেশের নারী শিক্ষা নিয়ে কিছু মানুষ ‘তালেবানদের’ মতো মনোভাব পোষণ করে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “প্রগতিশীল সরকার থাকার পরও ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠীর চাপে অনেক সময় আমাদের পিছিয়ে যেতে হচ্ছে।”
অধ্যাপক মনজুর বলেন, “সেকুলার ফোর্স সামনে আসতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব দরকার। কিন্তু সেটি না থাকার জন্য ধর্মভিত্তিক দলগুলো চাপ প্রয়োগ করতে পারছে। আমরা যতটা না এগিয়ে চলছি, তারা আমাদের পিছিয়ে দিতে বাধ্য করছে। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, সামগ্রিকভাবে শিক্ষায় যে একটা বিভাজন, সেখানে মেয়েরা একটু বেশি আক্রান্ত।”
মেয়েদের শিক্ষার প্রসার ও মানোন্নয়নের লক্ষ্যে গণস্বাক্ষরতা অভিযান দেশের ৬ উপজেলায় ২৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কাজ শুরু করেছে, যার অর্থায়ন করেছে মালালা ফান্ড।
মালালা ফান্ডের কান্ট্রি ডিরেক্টর মোশাররফ তানসেন বলেন, “বিশ্বে মালালা ফান্ড নয়টি দেশে কাজ করছে। তবে সম্প্রতি তালেবানদের কারণে আফগানিস্তানে তাদের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশের চর অঞ্চল, উপকূল, হাওর, চা-বাগান ও জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় কাজ শুরু করেছে।”