পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “জেলেনস্কি যেহেতু অ্যাপয়েন্টমেন্ট চেয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী তাকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়েছেন। সেখানে যুদ্ধ বন্ধের আলোচনাই হবে।”
Published : 14 Feb 2024, 05:32 PM
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার জার্মানি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; সম্মেলনের ফাঁকে তার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধরত ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জিতে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠনের পর এটিই হবে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফর।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর মিউনিখ সফরের বিভিন্ন কর্মসূচির তথ্য তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, “মিউনিখ সফরকালে প্রধানমন্ত্রী জার্মান চ্যাঞ্চেলর ওলাফ শোলৎজ, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুতে, ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটি ফ্রেডরিকসেন এবং ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।”
বৃহস্পতিবার সকালে মিউনিখের উদ্দেশ্য রওনা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা নীতি নিয়ে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ১৬-১৮ ফেব্রুয়ারি মিউনিখের হোটেল বায়েরিশার হফে অনুষ্ঠিত হবে।
জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থানের পরিবর্তন কিনা, এমন প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, “আমাদের অবস্থান সবসময় পরিষ্কার। আমাদের অবস্থান হচ্ছে, আমরা সবসময় যুদ্ধের বিরুদ্ধে এবং আমরা চাই পৃথিবীতে শান্তি ও স্থিতি বিরাজ করুক।
“তো, জেলেনস্কি যেহেতু অ্যাপয়েন্টমেন্ট চেয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী তাকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়েছেন। সেখানে যুদ্ধ বন্ধের আলোচনাই হবে।”
জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের কারণে রাশিয়ার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হবে কিনা এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের প্রেক্ষিতে রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে প্রভাব পড়ার প্রশ্নই আসে না।
নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যায় তিনি যোগ করেন, “রাশিয়া আমাদের অত্যন্ত বন্ধুপ্রতীম দেশ। রাশিয়া মুক্তিযুদ্ধে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল, মুক্তিযুদ্ধের পর আমাদের দেশ পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এমনকি চট্টগ্রাম বন্দরে মাইন অপসারণ করার সময় রাশিয়ার একজন নাগরিকও মৃত্যুবরণ করেছে। সুতরাং রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক আমাদের অত্যন্ত উষ্ণ, ঐতিহাসিক এবং মুক্তিযুদ্ধের যে বন্ধনে আমরা আবদ্ধ হয়েছি, সে বন্ধন অনেক দৃঢ়। সুতরাং রাশিয়ার সাথে সম্পর্কের হেরফের হওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।”
কিয়েভের আগ্রহে এ বৈঠক হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “জেলেনস্কির অ্যাপয়েন্টমেন্ট আমরা চাইনি, জেলেনস্কি আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে চেয়েছেন।”
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, জার্মানির আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং উন্নয়নমন্ত্রী সেভেনজা শোলৎজ এবং বিশ্ব ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্মেলনের ফাঁকে সাক্ষাৎ করবেন বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের পাশাপাশি নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞরা মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নেন। ১৯৬৩ সালের শুরু হওয়া এই আয়োজনের ৬০ বছর পূর্তিও উদযাপন করা হবে এবার।
সম্মেলনের আগে মিউনিখ সিকিউরিটি রিপোর্ট প্রকাশ করে আয়োজকরা, যার উপর ভিত্তি করে সম্মেলনের বিভিন্ন পর্বে আলোচনা চলে।