পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় ‘নির্যাতন’ ও ৭৬টি চেকে ‘জোর করে সই নেওয়ার’ অভিযোগে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাসহ চারজনের বিরুদ্ধে যে মামলার আবেদন হয়েছিল, দেড় মাস পর তা সরাসরি খারিজ করছে আদালত।
উত্তরার পোশাক ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে ‘নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ’ আইনে এ মামলার আবেদন করেছিলেন। ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান সেদিন তার আর্জি শুনে আদেশ অপেক্ষমাণ রেখিছিলেন।
গত বুধবার আবেদনটি খারিজের আদেশ দেওয়া হয়। তবে বাদীর আইনজীবী বৃহস্পতিবার তা জানতে পারেন বলে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন।
মামলার আবেদনে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম শাখার (উত্তর) অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. নাজমুল হক, ডিবি পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম, সাভারের জালেশ্বরের বাসিন্দা সাইদুর রহমান হাবিব এবং উত্তরার ১১ নম্বর সেকটরের বাসিন্দা মুকাররাম হোসেন জিমির নাম দেওয়া হয়েছিল আসামির তালিকায়।
মামলা খারিজের প্রতিক্রিয়ায় বাদীর আইনজীবী আমিনুল গণী টিটো বলেন, “হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনের ৪ ধারা অনুযায়ী অভিযোগের শুনানির পর তাৎক্ষণিকভাবে আদেশ দেওয়ার স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। আমরা খুব তাড়াতাড়ি এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।”
মামলার বাদী আতিকুর রহমান উত্তরার গোল্ডেন টাইমস সোয়েটার অ্যান্ড স্যুয়িং লিমিটেড এবং এএসআর কম্পিউটারাইজড সোয়েটার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালক ও চেয়ারম্যান।
আর্জিতে পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘ক্ষমতার অপব্যবহারের’ অভিযোগ আনা হয়েছিল। এছাড়া অন্যদের ‘পুলিশ কর্মকর্তাদের সহযোগী’ আখ্যায়িত করে তাদের বিরুদ্ধে ‘ব্যবসার ছদ্মবেশে প্রতারণার’ অভিযোগ করা হয়েছিল।
তবে হেফাজতে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ দাবি করে ডিবি কর্মকর্তা নাজমুল গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “২০১৯ সালে একটি মামলায় আতিকুর রহমান পুলিশ হেফাজতে ছিল। যে অভিযোগ এনেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।”
জানতে চাইলে গোয়েন্দা পুলিশের স্পেশাল ক্রাইমের (উত্তর) উপকমিশনার তারেক বিন রশীদ সেদিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, এই ধরনের কোনো ঘটনা তার বিভাগে এবং তার দায়িত্ব থাকা অবস্থায় ঘটেনি।
“তারপরও বলব, যেহেতু একটি অভিযোগ হয়েছে। তা খতিয়ে দেখব, ঘটনাটি কী।”