‘ক্রসফায়ার’: সাবেক ডিএমপি কমিশনারসহ ১৫ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন খারিজ

নিহত ছাত্রদল নেতার বাবার করা আবেদনে মামলা গ্রহণ করার কোনো উপাদান না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন বিচারক।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2023, 02:00 PM
Updated : 6 Feb 2023, 02:00 PM

ঢাকার খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান জনিকে আট বছর আগে ‘ক্রসফায়ারের নামে হত্যার’ অভিযোগে সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াসহ ১৫ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু (নিবারণ)’ আইনে মামলার আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছে আদালত।

সোমবার দুপুরে জনির বাবা ইয়াকুব আলী ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ মামলার আবেদন দাখিল করেন। তখন বিচারক মো. আছাদুজ্জামান তার বক্তব্য শোনেন।

পরে সেই আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুঁলি তাপস কুমার পাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলা গ্রহণ করার উপাদান না থাকায় তা খারিজের আদেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ।”

বাদীর আইনজীবী ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মাসুদ আহমেদ তালুকদার।

মামলার আবেদনে আছাদুজ্জামান মিয়া ছাড়াও আরও ১৪ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছিল।

তারা হলেন- চট্টগ্রামের বর্তমান পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, ডিবির রমনা জোনের এসআই দীপক কুমার দাস, ডিবির রমনা জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার হাসান আরাফাত, মো. জাহিদুল হক তালুকদার, ডিবির পরিদর্শক ফজলুর রহমান, ওহিদুজ্জামান, এসএম শাহরিয়ার হাসান, ডিবির এসআই শিহাব উদ্দিন, বাহাউদ্দিন ফারুকী, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, ডিবির কনস্টেবল মো. সোলাইমান, আবু সায়েদ, মো. লুৎফর রহমান ও খিলগাঁও থানার এসআই মো. আলাউদ্দিন।

জনির মৃত্যুর ঘটনার সময় তারা সবাই ঢাকা মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন।

Also Read: ‘ক্রসফায়ার’: সাবেক ডিএমপি কমিশনারসহ ১৫ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়ার জোড়পুকুরমাঠ এলাকায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন নুরুজ্জামান জনি (৩০)।

খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জনি বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে পুলিশের গাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপকারীদের একজন ছিলেন জনি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও কিছু অভিযোগ ছিল।

ডিবি পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, সেদিন বিকালে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোড থেকে জনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাকে নিয়ে রাতে খিলগাঁও জোড়পুকুর বালুর মাঠ এলাকায় অভিযানে যায় পুলিশের একটি দল।

সেখানে জনির সহযোগীরা ‘হাতবোমা ছুড়লে’ পুলিশ পাল্টা গুলি করে। দুই পক্ষের গোলাগুলির মধ্যে জনি নিহত হন বলে সে সময় ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল।

এতদিন পরে কেন মামলা করা হল প্রশ্ন করলে আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেছিলেন, “ওই ঘটনায় এর আগে মামলা করতে চাইলে বহু প্রতিবন্ধকতা ছিল। আর পুলিশ সে সময় কোনো মামলা নেয়নি।”

আবেদনে অভিযোগটি মামলা হিসাবে গ্রহণ করে বিচারবিভাগীয় তদন্ত এবং অভিযোগকারী ও সাক্ষীদের জন্য ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়।

অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ক্রসফায়ার শব্দটি অস্বচ্ছ। কোনো প্রকার অনুরাগ বিরাগের বশবর্তী হয়ে আমরা কিছু করিনি। যতদূর জানি, ওর বিরুদ্ধে অনেক মামলা, অনেক অভিযোগ ছিল।

“যদিও এত বছর আগের ঘটনা, সব মনে নেই। আমরা সিআরপিসি, পেনাল কোড, পুলিশ রেগুলেশনস মেনেই কাজ করি। অভিযোগ দিলেই যে তা সত্য হবে তা নয়। তবে আদালতই বিষয়টি দেখবেন।”