সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামায় ‘চোখ থাকবে’ দুদকের

দুদক রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করছে না বলে দাবি করেছেন সংস্থাটি পরিচালনাকারীরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2023, 12:12 PM
Updated : 21 March 2023, 12:12 PM

সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীরা সম্পদের খতিয়ান দিয়ে যে হলফনামা দেবেন, তাতে চোখ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।

তিনি বলেছেন, “নির্বাচনের বছরে সব প্রার্থীর হলফনামায় যে সম্পদ বিবরণী থাকে, তা খতিয়ে দেখবে দুর্নীতি দমন কমিশন। এই বছর চোখ-কান খোলা রাখবে।”

মঙ্গলবার ঢাকায় কমিশনে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান।

এ বছরের শেষ কিংবা আগামী বছরের শুরুতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। নির্বাচনে প্রার্থীদের তাদের সম্পদের বিবরণ নির্বাচন কমিশনে হলফনামা আকারে জমা দিতে হয়।

সম্পদের তথ্য বিশ্লেষণ করে রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে দুদকের অবৈধ সম্পদ অর্জনের ভুরি ভুরি মামলার নজির রয়েছে।

দুদক রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করছে না বলে যে অভিযোগ সরকারবিরোধীরা করে আসছে, সাংবাদিকরা তার প্রতিক্রিয়াও জানতে চান মাঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর কাছে।

তিনি বলেন, “মামলা, তদন্ত, অনুসন্ধান সব কিছুই বেড়েছে। আমাদের তথ্য কথা বলবে। তারা তাদের বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা তথ্য দিলাম, এগুলো সংরক্ষিত আছে। আপনারা বিবেচনা করবেন।”

দুদকের ২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন নিয়ে সংস্থার চেয়ারম্যান তার কমিশনারদের নিয়ে এদিন সাংবাদিকদের সামনে আসেন। সোমবার প্রতিবেদনটি রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তর করেছিলেন তারা।

মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, “রাষ্ট্রপতি দুর্নীতির বিরুদ্ধে আরও কঠোর অবস্থান নিতে বলেছেন। দুদক স্বচ্ছতার সঙ্গে সাধ্যমতো কাজ করে যাচ্ছে, এই বিষয়টি রাষ্ট্রপতিকে অবগত করা হয়েছে।”

প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত এক বছরে কমিশনে জমা পড়ে ১৯ হাজার ৩৩৮টি অভিযোগ। যাচাই-বাছাই করে এর ৯০১টি অনুসন্ধানের জন্য হাতে নিয়েছে দুদক। দুদকের ৩৪৬টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে।

অনিয়ম সংগঠিত হলেও দুদকের এখতিয়ারভুক্ত না হওয়ায় ৩ হাজার ১৫২টি অভিযোগের বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

‘মিট দ্য প্রেসে’ দুদক কমিশনার মোজাম্মেলক হক খান বলেন, “আমাদের বার্ষিক প্রতিবেদন সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি প্রতিবেদন। এ্খানে কোনো আবেগ কিংবা অতিরঞ্জিত কিছু নেই। দুদক আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী, ভেতরে ও বাইরে এর কার্যকর ক্ষমতা অনেক বেড়েছে।”

দুদক কমিশনার জহুরুল হক বলেন, “দেশের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি বাড়ে নাই, কমেছে। তবে অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি বন্ধ করতে পারিনি।

“মামলা পরিচালনার ক্ষমতা কমেছে-এটা মিথ্যা কথা। কারণ মানি লন্ডারিং মামলায় ১০০ ভাগ সাফল্য, অন্যান্য মামলায় সাজার পরিমাণ ৬৭ ভাগ থেকে ৭০ ভাগ দুদকের পক্ষে। আগের থেকে মামলার তদন্ত ও পরিচালনায় অনেক বেশি সক্ষম দুদক।”

অনুষ্ঠানে দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব মো. মাহবুব হোসেনসহ সংস্থার ঊধর্বতন কর্মকর্তারাও ছিলেন।