বাংলাদেশ-কাতার বিজনেস ফোরাম গঠনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

"আমি আজ কাতারের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সাথে অনেক বাংলাদেশি নাগরিককে দেখে আনন্দিত," বলেন তিনি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2023, 03:49 PM
Updated : 6 March 2023, 03:49 PM

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে ফোরাম গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাসস জানায়, সোমবার কাতারের রাজধানী দোহায় ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: পটেনশিয়ালস অব ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ব্যবসায়িক সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, যৌথ ব্যবসায়িক ফোরাম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও কাতারের বেসরকারি খাতগুলোকে পারস্পরিক লাভজনক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের জন্য একক প্লাটফর্মে আনতে হবে।

তিনি কাতারের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলকে শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

জ্বালানি খাতে কাতারের বিনিয়োগের সুযোগের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অফশোর গ্যাস অনুসন্ধান ও জ্বালানি বিতরণ ব্যবস্থায় কাতারের দক্ষতা থেকে বাংলাদেশ উপকৃত হতে পারে।

বাংলাদেশের কৃষি প্রবৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটাও কাতারের সঙ্গে বাই-ব্যাক ব্যবস্থায় কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।

কাতারের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে পোর্টফোলিও বিনিয়োগের কথাও বিবেচনা করতে পারেন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন পুঁজিবাজারের আরও উন্নয়নে কঠোর পরিশ্রম করছে।

“আমাদের বন্ড মার্কেটকে একটি দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি এবং আমরা শিগগিরই পুঁজিবাজারে ডেরিভেটিভ পণ্য অন্তর্ভুক্ত করতে যাচ্ছি।”

ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মত দেশ কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আমরা কাতার থেকে এলএনজি আমদানি বাড়াতে আগ্রহী।”

শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ ও কাতার দৃঢ় ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ এবং এখানকার প্রবাসী বাংলাদেশি সম্প্রদায় দুই দেশের মানুষের মধ্যে একটি চমৎকার সেতুবন্ধন। আমি আজ কাতারের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সাথে অনেক বাংলাদেশি নাগরিককে দেখে আনন্দিত।"

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাতার ন্যাশনাল ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ অংশীদার হওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছে।

"আমরা কাতারে উন্নত কর্মসংস্থানের বাজার পূরণে আমাদের কর্মীবাহিনীকে জ্ঞান ও দক্ষতা দিয়ে সজ্জিত করতে পারি।"

স্মার্ট সমাজ গড়তে ৫ সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

স্মার্ট, উদ্ভাবনী ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে পাঁচ সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার কাতারে ‘স্মার্ট অ্যান্ড ইনোভেটিভ সোসাইটির জন্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ সহায়তা চান।

প্রথম সহায়তা হিসাবে শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিতে বলেন। পাশাপাশি স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে কার্যকরী প্রযুক্তি স্থানান্তরের জন্য আন্তর্জাতিক বেসরকারি খাতকে প্রণোদনা দিতে বলেন।

দ্বিতীয় প্রস্তাবে তিনি বলেন, এলডিসিগুলোতে ব্রডব্যান্ড বিভাজন ও প্রযুক্তিগত বৈষম্য কমাতে ডিজিটাল অবকাঠামোতে বিনিয়োগে সহায়তা করতে হবে।

তৃতীয় সহায়তা হিসেবে এলডিসিভুক্ত দেশগুলো যেসব সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে, তা মোকাবিলায় পেশাদার গবেষক ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।

চতুর্থ সহায়তা হিসেবে এলডিসি উত্তরণের পরেও বিশেষ করে ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কৃষি-রাসায়নিকের জন্য ট্রিপস চুক্তির অধীনে এলডিসি মওকুফের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

পঞ্চম সহায়তার ব্যাপারে তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে উদ্ভাবন এবং উন্নয়ন- দুটি’র জন্যই বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ব্যবস্থা বিকাশে সহায়তা দরকার।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা এখন ২০২৬ সালের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এই অন্তবর্তী কালে আমাদের সরকারের অগ্রাধিকারের বিষয় হবে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ। জাতীয় প্রয়োজন নির্ণয়ে এলডিসির জন্য আমরা ইউএন টেকনোলজি ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করছি।”