মুহাম্মদ সামাদ দুর্দিনের সাহসী কবি: আসাদুজ্জামান নূর

“আমি যখন বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যাকে নিয়ে কোনো কবিতা বেছে নিই, তখন কবি সামাদ তার মধ্যে চলে আসেন,” বলেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2024, 05:00 PM
Updated : 10 March 2024, 05:00 PM

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে যখন কথা বলার মানুষের সংখ্যা ছিল কম, তখন কবি মুহাম্মদ সামাদ কবিতার মাধ্যমে অবলীলায় বঙ্গবন্ধুর কথা বলেছেন বলে মূল্যায়ন সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের।

তিনি বলেছেন, “অনেক কঠিন সময়ে যখন যে কথাগুলো বলা সম্ভব ছিল না। সেই কথাগুলো তিনি অবলীলায় সাহসের সঙ্গে বলেছেন। তার জন্য তাকে প্রচুর চাপও সহ্য করতে হয়েছে।”

রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ওসমান-জামাল মিলনায়তনে কবি মুহাম্মদ সামাদের কবিতাসন্ধ্যা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

সম্প্রতি ভাষা ও সাহিত্যে একুশে পদক পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, যিনি একই সঙ্গে জাতীয় কবিতা পরিষদেরও সভাপতি। তার সম্মানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ এই কবিতাসন্ধ্যার আয়োজন করে।

আসাদুজ্জামান নূর বলেন, “কবি মুহাম্মদ সামাদের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময়। যখন আমরা এরশাদ বিরোধী আন্দোলন করেছি, সেই সময় সাহসী ব্যক্তি ছিলেন মুহাম্মদ সামাদ।

“কবি হিসেবে মুহাম্মদ সামাদ সবসময় সাহসী। কবিরা কবিতার মধ্য দিয়ে সত্য প্রকাশ করেন। মুহাম্মদ সামাদ সাহসের সঙ্গে সত্য প্রকাশ করেছেন। আমি যখন বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যাকে নিয়ে কোনো কবিতা বেছে নিই, তখন কবি সামাদ তার মধ্যে চলে আসেন।”

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, “যারা কবিতা বা সাহিত্য চর্চা করেন, তাদের মধ্যে সমাজ, রাষ্ট্র ও দেশকে ঘিরে নিকটদৃষ্টি এবং দূরদৃষ্টি থাকে। কবি মুহাম্মদ সামাদ সেই রকম একজন বিদগ্ধ মানুষ।

“দেশের দুর্দিনে যখন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কথা বলার মানুষ ছিল কম, তখন তিনি কবিতাগুলো লিখেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুকে তরুণদের কাছে, বুদ্ধিজীবীদের কাছে আবেগ দিয়ে, হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা দিয়ে তুলে ধরেছেন।”

কবি-কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক বলেন, “কবিতার মধ্য দিয়ে আমরা বঙ্গবন্ধুকে, বাংলাদেশকে ভালোবেসেছি। সেটা করতে গিয়ে সামাদ ভাই আমাদের অতি আপনার জনক হয়ে উঠেছিলেন। সামাদ ভাই যখন ‘মুজিব আমার অমর কাব্যের কবি' কবিতাটি লিখলেন, সেই থেকে তার ভক্ত হয়ে গেছি।

“আমরা যেই বাংলাদেশের জন্য লড়াই করেছি, কবি মুহাম্মদ সামাদের কবিতা পড়লে সেই বাংলাদেশ খুঁজে পাওয়া যায়।”

নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে কবি মুহাম্মদ সামাদ বলেন, “এত পুরস্কার ও সম্মাননা আমার জীবনে হবে, এটা ছিল কল্পনার বাইরে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গিয়েছি, সেখানে আমার কবিতা পাঠ হয়েছে।

“যতটুকু পেয়েছি পরিতৃপ্তি বোধ করি, আমার জীবনে কোনো হতাশা নেই। আমি এখন সবার কাছে ঋণী। এই ঋণ শোধ করা যাবে না।”

অনুষ্ঠানে কবি মুহাম্মদ সামাদের কবিতা আবৃত্তি করেন আবৃত্তিশিল্পী রূপা চক্রবর্তী, শিমুল মুস্তাফা, শাহাদাৎ হোসেন নিপু, মাহিদুল ইসলাম, নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলী ও তামান্না সারোয়ার নীপা। কবির পছন্দের গান পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী সুমা রানী রায়।