এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি এ মামলার বিচার পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিল আপিল বিভাগ।
Published : 13 Nov 2023, 12:48 PM
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার বিচার কাজ শেষ করতে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালকে ফের ছয় মাস সময় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
সেই সঙ্গে দুই যুগের বেশি সময়ের আগের এই মামলার আসামি আশিষ রায় চৌধুরীকে জামিন দেওয়া হয়েছে।
আশীষ রায়কে হাই কোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন খারিজ করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারকের আপিল বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেয়।
আসামিপক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক ও সাঈদ আহমেদ রাজা। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট পলাশ চন্দ্র রায় ও সেলিম আশরাফ চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি এ মামলার বিচার কাজ শেষ করতে ৬ মাস সময় দিয়েছিল আপিল বিভাগ। ওই সময় পর্যন্ত আসামি আশিষ রায় চৌধুরীর জামিন স্থগিত করা হয়েছিল।
আশিষ রায় চৌধুরী হাই কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিলেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে চেম্বার আদালত জামিন স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠায়।
গত ২৯ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগে ওঠে। সেদিন আসামিপক্ষের আইনজীবী জানান, ছয় মাস সময় ১১ অক্টোবর শেষ হয়েছে। আপিল বিভাগের আদেশ বাস্তবায়িত হয়নি।
এ পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাস সময়ের মধ্যে মামলাটির বিচার কেন শেষ হয়নি, তার কারণ এক সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিচারককে জানাতে নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ।
সেই সঙ্গে আশীষ রায়কে হাই কোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল শুনানির জন্য ১২ নভেম্বর তারিখ রাখা হয়।
এর ধারাবাহিকতায় সোমবার মামলাটি আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে বিচারকের প্রতিবেদন আপিল বিভাগে উপস্থাপন করা হয়।
ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক এম আলী আহমেদ প্রতিবেদনে বিচারে বিলম্বের কারণ হিসেবে প্রসিকিশনের ব্যর্থতাসহ কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করেন।
নায়ক সোহেল খুন ও মামলা
১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সোহেলকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ঘটনার দিনই তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় হত্যা মামলা করেন।
১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
ওই মামলায় ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়।
এরপর মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ২০০৩ সালে ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
এরপর দীর্ঘদিন মামলাটির নথিপত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি সবার নজরে আসে। তারপর বিচারিক আদালতে পুনরায় বিচার শুরু হয়।
আসামিদের মধ্যে তারিক সাঈদ মামুনের পক্ষে হাই কোর্টে মামলাটি বাতিল চেয়ে আবেদন করা হলে আদালত একটি রুল দেয়; সেই সঙ্গে বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ আসে।
মামলার বর্তমান অবস্থা
এ হত্যা মামলায় সোহেল চৌধুরীর বন্ধু কুমিল্লা-৮ আসনের সংসদ সদস্য নাছিমুল আলম চৌধুরীসহ তিনজন গত ২৫ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক এম আলী আহমেদের আদালতে সাক্ষ্য দেন।
সাক্ষ্য দেওয়া অন্য দুজন হলেন-ব্যবসায়ী আহমেদ সাঈদ এবং ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বেলায়েত হোসেন খান।
আগামী ২৬ নভেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেছে এ আদালত।
মামলায় ইতোমধ্যে নয়জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে বলে আইনজীবী সদিয়া আফরিন শিল্পী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
পুরনো খবর
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা: সাক্ষ্য দিলেন এমপি নাছিমুলসহ তিনজন
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা: কেস ডকেট উপস্থাপনে শেষ সুযোগ পেলেন ফরিদ
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা: গ্রেপ্তার দেখানো হল আশীষ চৌধুরীকে
সোহেল চৌধুরী খুনের মামলার ‘কেস ডকেট’ উধাও, আলামতও গায়েব
সোহেল চৌধুরী-দিতির সন্তানরা কে কোথায়