চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যামামলার আসামি আশীষ রায় চৌধুরীকে ২৪ বছর পর অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
Published : 05 Apr 2022, 11:44 PM
আশীষ চৌধুরীকে গ্রেপ্তারে মঙ্গলবার রাতে প্রথমে গুলশানের একটি বাসা ঘিরে অভিযানের কথা সাংবাদিকদের এসএমএস পাঠিয়ে জানায় র্যাব। পরে সেই বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।
র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন বলেন, “গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
গুলশান এক নম্বর সেকশনের ওই বাসা থেকে ২৩ বোতল বিদেশি মদ, কয়েক ক্যান বিয়ার উদ্ধারের কথাও জানিয়েছে র্যাব।
আশীষ চৌধুরী রিজেন্ট এয়ারওয়েজের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) পদে কাজ করছেন।
র্যাব কর্মকর্তা আল মঈন বলেন, “সোহেল চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি হলেও তিনি এর আগে কখনও গ্রেপ্তার হননি। তিনি র্যাবকে বলেছেন, এর আগে তিনি একবার জামিন নিয়েছিলেন।”
গত ২৮ মার্চ নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর আশীষ চৌধুরী মিরপুর ডিওএইচএসের বাসা ছেড়ে গুলশানের ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন বলে জানায় র্যাব।
ওই ফ্ল্যাট থেকে দুজন নারীকেও ধরে নিতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে আল মঈন বলেন, “ওই দুই নারী আশীষ চৌধুরীর পরিবারের কেউ নন। তারা এখানে কী করছিলেন, এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের আটক করা হয়েছে।”
১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সোহেলকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার দিনই তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
অভিযোগপত্রে আসামির তালিকায় ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের নামও ছিল। অন্য আসামিরা হলেন- ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও আশীষ চৌধুরী, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন, আদনান সিদ্দিকী, তারিক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ও ফারুক আব্বাসী।
এই মামলায় আশীষ চৌধুরী শুরু থেকেই পলাতক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও ছিল।
বিদেশে থাকা আজিজ মোহাম্মদ ভাই ছাড়াও বান্টি ইসলাম, সেলিম খান, ইমনের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।
এই মামলায় ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার দায়রা জজ আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়। এরপর মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ২০০৩ সালে ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে পাঠানো হয়।
কিন্তু আসামিদের মধ্যে তারিক সাঈদ মামুনের পক্ষে হাই কোর্টে মামলাটি বাতিল চেয়ে আবেদন করা হলে আদালত একটি রুল দেয়; সেই সঙ্গে বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ আসে।
এরপর দীর্ঘদিন মামলাটির নথিপত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি সবার নজরে আসে। তারপর বিচারিক আদালতে পুনরায় বিচার শুরু হয়। এখন মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
আরও পড়ুন