“আমরা অনুমান করছি তারা মা-মেয়ে। চেহারা একইরকম। তাদের কোনো দাবিদার দুপুর পর্যন্ত পাওয়া যায়নি,” বলেন ঢাকার অতিরিক্ত জেলা মেজিষ্ট্রেট হেদায়েতুল ইসলাম।
Published : 01 Mar 2024, 04:42 PM
রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে আগুনে নিহত এক নারী ও শিশুর লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পড়ে আছে।
অগ্নিকাণ্ডের পরদিন শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত তাদের মরদেহের দাবি নিয়ে কেউ আসেনি বলে জানিয়েছেন ঢাকার অতিরিক্ত জেলা মেজিষ্ট্রেট একেএম হেদায়েতুল ইসলাম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকেমকে তিনি বলেন, “আমরা অনুমান করছি তারা মা-মেয়ে। চেহারা একইরকম। তাদের কোনো দাবিদার দুপুর পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।”
গ্রিন কোজি কটেজে আগুনে এ পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ছয়জনকে চেনার উপায়ে নেই।
ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত হলে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করার কথা বলছে পুলিশ। তাদের মরদেহ রাখা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে।
দুজনের দাবি নিয়ে মর্গে পরিবার, ডিএনএ সংগ্রহ
এদিকে পুড়ে অঙ্গার হওয়া যে ছয়জনকে চেনা যাচ্ছে না, তাদের মধ্যে দুইজনের দাবি নিয়ে মর্গে এসেছেন স্বজনেরা।
তবে ওই দাবিদারদের লাশ না দিয়ে তাদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ঢাকার অতিরিক্ত জেলা মেজিষ্ট্রেট হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, “দুজনকে শনাক্ত করা সম্ভব না হওয়ায় তাদের দাবিদারদের ডিএনএ করার পর লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হবে।”
যে দুজনের লাশের দাবি করা হয়েছে, স্বজনেরা তাদের নাম বলেছে- এ কেএম মিনহাজ (২৪) ও অভিশ্রুতি শাস্ত্রী (২৫)।
একবারে পুড়ে যাওয়ায় তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছে না জানিয়ে হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত ৪৬ জন মরদেহের মধ্যে ৩৮ জনের মরদেহ স্বজনেরা বুঝে নিয়েছেন।
এদিকে নিহতের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও ৩৮ জনের পরিবারের মধ্যে মাত্র চারজনের পরিবার সেই অর্থ নিয়েছে বলে জানান হেদায়েতুল ইসলাম।
“৩৪ জনের দাফন, কাফনসহ আনুষঙ্গিক খরচের জন্য টাকা নিতে বলা হলেও তারা স্বাবলম্বী জানিয়ে সেই অর্থ নেননি। এছাড়া আহত হয়ে যারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। আহত এরকম ১৩ জনকে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনটিতে আগুন লাগে। ভবনটির দ্বিতীয় তলায় ছিল বিরিয়ানির পরিচিত খাবার দোকান ‘কাচ্চি ভাই’ এর শাখা, পোশাকের ব্র্যান্ড ইলিয়েন, নিচের তলায় স্যামসাং এর শোরুমসহ আরও বেশ কিছু দোকান।
স্যামসাংয়ের শোরুমের পাশে রয়েছে একটি কফি শপ। এরকম কফির দোকানসহ ফাস্টফুডের অনেকগুলো দোকান ও রেস্তোরাঁ রয়েছে ভবনটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে।
প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিভিয়ে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস। এরপরই আসতে থাকে একের পর এক মৃত্যুর খবর।