ট্রান্সজেন্ডার শিশুদের সুরক্ষার দায়িত্ব উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে নেওয়ার আহ্বান অধিকারকর্মী জয়া সিকদারের।
Published : 11 Oct 2022, 12:40 AM
মেয়েদের অধিকার সমুন্নত রাখার প্রতিশ্রুতিতে সই করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ বিশিষ্টজনরা।
সোমবার গুলশানের একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক মেয়েশিশু দিবসকে সামনে রেখে সেভ দ্য চিলড্রেন আয়োজিত ‘রিডিফাইনিং গার্ল টক’ অনুষ্ঠানে অঙ্গীকারনামাটিতে সই করেন তারা।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “আমাদের সমাজে সবারই কিন্তু দায়িত্ব আছে। সন্তানরা যেন ধর্ম-বর্ণ, ছেলে-মেয়ে এসবের বৈষম্য করতে না শেখে, সেই শিক্ষা পরিবার থেকে দিতে হবে। আমরা প্রতিটি শিশু, কিশোর-কিশোরীকে ডিজিটালি লিটারেট করে গড়ে তুলতে চাই।
“তাই আইসিটি ডিভিশন থেকে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি, যাতে সাইবার সিকিউরিটি, ডিজিটাল লিটারিসি এবং স্যোশাল ম্যানেজমেন্ট বাচ্চারা ভালভাবে করতে পারে। এটা আমরা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই।”
দেশের সব শিক্ষার্থীদের নারী ও কন্যা শিশুর অধিকার ও নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন করতে একটি ন্যাশনাল প্লাটফর্ম তৈরির কথা জানান তিনি।
“যেখানে সেভ দ্য চিলড্রেন কোঅপারেট করবে প্রত্যেকটা নন-গভর্মেন্ট ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে। আর আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ ও জাতীয় সংসদের মধ্যে সমন্বয় করা হবে।
“আমরা যদি সব স্টেকহোল্ডালদের নিয়ে এই ধরনের একটি ন্যাশনাল ডায়ালগ করতে পারি, তাহলে আমরা কেন্দ্র থেকে প্রান্ত পর্যন্ত আমাদের সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থীদের নারী সচেতনতা, শিশু ও কন্যার অধিকার ও তাদের নিরাপত্তা দেয়ার একটি সফল বিপ্লব বাস্তবায়ন করতে পারব।”
কন্যাশিশুদের শারীরিক মানসিক বিকাশের জন্য তাদের শিক্ষার সুযোগ তৈরি, স্বাস্থ্য সেবা, নিরাপত্তা এবং মর্যাদা নিশ্চিতের ওপর জোর দেন প্রতিমন্ত্রী।
“এই চারটি জায়গায় আমাদের যার যা দায়িত্ব আছে, ব্যক্তি, পরিবার, রাষ্ট্র থেকে যদি নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে কন্যাশিশুদের আগামী দিনের স্বপ্ন পূরণের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে দিতে পারব।”
অনুষ্ঠানে বেসরকারি সংস্থা ‘সম্পর্কের নয়া সেতু’র সভাপতি জয়া সিকদার বলেন, “বাংলাদেশে শিশুদের এত সংগঠন আছে, শিশুদের অধিকার নিয়ে তারা কথা বলেন। কিন্তু ট্রান্সজেন্ডার শিশুদের জীবনের গল্প কিন্তু কখনোই বলা হয় না।”
ট্রান্সজেন্ডার শিশুদের সুরক্ষার দায়িত্ব উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুকে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। ট্রান্সজেন্ডার শিশুরা ছোটবেলা থেকেই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। তারা কেন পরিবার থেকে বের হয়ে যায়, সেই কারণটা নিয়ে বা শিশুদের কেন জেন্ডার নিয়ে বুঝাতে পারি না।
“বুঝাতে পারি না বলেই তারা কৈশোরে পরিবার থেকে পালিয়ে একটা গোত্রে চলে যায়। হিজড়াদের ডেরায় চলে যায়। এই জায়গাগুলো আমরা যতদিন বন্ধ করতে না পারব, ততদিন আমরা ট্রান্সজেন্ডারদের উন্নতি করতে পারব না।”
ঢাকায় ব্রিটিশ হাই কমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার জাভেদ প্যাটেল, সুইডেন দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মারিয়া স্ট্রাইডসমেন, বাংলাদেশে ইউএনএফপ‘র কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ক্রিস্টিন ব্লখুস, ইউনিলিভার বাংলাদেশের কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স প্রধান শামীমা আক্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক তানিয়া হক, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর অনো ভ্যান ম্যানেন অনুষ্ঠানে অঙ্গীকারনামায় সই করেন।