পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন দাবি ৩৮ বিশিষ্ট নাগরিকের

পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সমাধানে চুক্তি সই হয়েছিল ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর। সেই চুক্তির ২৫ বছর পূর্তিতে সব অঙ্গীকার বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2022, 05:00 AM
Updated : 1 Dec 2022, 05:00 AM

পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পূর্তিতে চুক্তির সব ধারা বা অঙ্গীকার বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৩৮ বিশিষ্ট নাগরিক।  বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তারা নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।

এতে বলা হয়, “২৫ বছরে এসেও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে আশানুরূপ কোনো অগ্রগতি হয়নি। চুক্তির কয়েকটি ধারা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ধারা বাস্তবায়িত করার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বরং নানা অজুহাতে তা বিলম্বিত করা হচ্ছে। চুক্তি স্বাক্ষরকারী দল আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার পরেও চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার কোন কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।”

পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতির মধ্যে এই  চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।  শুক্রবার এ চুক্তির সইয়ের ২৫ বছর পূর্ণ হচ্ছে।

বিবৃতিতে দাবি তুলে ধরা হয়-

>> চুক্তিতে প্রস্তাবিত সব অঙ্গীকারের পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে।

>> ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন যথাযথভাবে কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় বাজেট, লোকবল এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ের সরকারের দৃশ্যমান সমর্থন জোরদার করতে হবে।

>> চুক্তি স্বাক্ষরের সময় যে কয়টি সেনানিবাস ছিল, যার কথা চুক্তিতেও উল্লেখ আছে, সেগুলো বহাল রেখে বাকি সব অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করতে হবে।

>> ‘আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নামে এক তরফা পাহাড়িদের দায়ী করার মানসিকতা’ পরিহার করতে হবে। কোন সহিংসতার ঘটনা ঘটলে তার স্বাধীন স্বচ্ছ নিরেপক্ষ তদন্তের জন্য জাতীয় পর্যায় থেকে উচ্চ আদালতের কোন বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।

>> আঞ্চলিক পরিষদ ও জেলা পরিষদকে চুক্তির বিধান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ক্ষমতা, বাজেট এবং দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে।

>> পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

>> পার্বত্য এলাকায় যেসব ‘বহিরাগত বাঙ্গালিকে সেটেলার হিসেবে’ বসানো হয়েছে তাদের নিজ নিজ জেলা বা এলাকায় ফিরিয়ে নিতে হবে।

বিবৃতিতে সই করেন- মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল, এএলআরডির চেয়ারপারসন খুশী কবির, অর্থনীতিবিদ ও গবেষক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, রিসার্স ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের (রিব) নির্বাহী পরিচালক মেঘনা গুহঠাকুরতা, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবুল বারকাত, সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী  সুব্রত চৌধুরী, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সভাপতি জেড আই খান পান্না, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান,  সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার,  বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক  মো. নুর খানসহ ৩৮ জন।