পঞ্চগড়ের সহিংসতা তদন্তে বিএনপির কমিটি

হাফিজউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের এই কমিটি কাজ করবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 March 2023, 03:06 PM
Updated : 7 March 2023, 03:06 PM

পঞ্চগড়ের আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জলসাকে কেন্দ্র করে তাদের বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে বিএনপি।

দলের ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের এই কমিটি কাজ করবে।

সোমবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয় বলে মঙ্গলবার বিএনপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

পঞ্চগড়ের ওই সহিংসতার জন্য সরকারকে দায়ী করে বিএনপি নেতারা বলছেন, তাদের আন্দোলন বানচালের উদ্দেশ্যে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে বিএনপি-জামায়াতই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

বিএনপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এই ঘটনার বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করার জন্য দলের ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রমের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি দল অতি দ্রুত পঞ্চগড় সফর করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

“স্থায়ী সভা মনে করে যে, সরকারের হীন পরিকল্পনা অনুয়ায়ী আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা এই সাম্প্রদায়িক হামলা সংঘটিত হয়েছে। এই সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করার পর থেকেই ধারাবাহিকভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর একের পর এক হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুট তারাজের ঘটনা ঘটছে যা এই অবৈধ সরকারের ক্ষমতায় অবৈধভাবে টিকে থাকার নীল নকশার অংশ।”

“প্রকৃত পক্ষে সরকার জনগণের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য এই ভয়ানাক হীন সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করছে। সরকার এই জঘন্য ন্যাক্কারজনক সংঘাত ও হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে বিরোধী দল বিএনপির ওপর দোষারোপ করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চায়,” বলছে বিএনপি।

পঞ্চগড়ে গত শুক্রবার থেকে রোববার তিন দিনব্যাপী আহমদিয়া সম্প্রদায় সালানা জলসার আয়োজন করেছিল। তা বন্ধ এবং আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে পঞ্চগড় শহরে মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে একদল।

এরই ধারাবাহিকতায় পরদিন জুম্মার নামাজের পর শহরে বড় মিছিল হয়। এ সময় মিছিলকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে নিহত হয় দুজন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় এই হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। এই ঘটনায় পুলিশ ৯০ জন বিএনপির সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিত উল্লেখ করা হয়।

স্থায়ী কমিটির সভায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আরও দুটি খাল খননের মাধ্যমে অভিন্ন নদী তিস্তার পানি প্রত্যাহারের সংবাদে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বিএনপি মনে করে বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা নদীর পানি বণ্টনের কোনো চুক্তি স্বাক্ষর না করে আরও ২টি খাল খনন পরিকল্পনা বাংলাদেশকে বঞ্চিত করার উদ্যোগ। নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে পানি বণ্টন চুক্তি সম্পাদনের কার্যকর উদ্যোগ নিতে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে।”

অবিলম্বে এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়।

ভারতের আদালতে খালাস পাওয়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত সভায় হয়েছে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।